আনন্দ: পান্ডুয়ায় শুরু হয়েছে মাঘমেলা। — ছবি সুশান্ত সরকার।
‘পিছু হটল’ তৃণমূল। পান্ডুয়ায় ঐতিহাসিক মাঘমেলা পরিচালনার দায়িত্ব কার্যত চলে গেল বিজেপির হাতে। পুরনো কমিটিকে সম্পূর্ণ ‘অগ্রাহ্য’ করে নতুন কমিটি গড়ে রবিবার ডিভিসি পাড়ের বোসপাড়ার মাঠে শুরু হল পাঁচশো বছরের পুরনো ‘মাঘমেলা’।
মেলার আয়োজন ঘিরে গত কয়েকদিন ধরেই ‘বাগযুদ্ধে’ নেমেছিল শাসকদল ও বিজেপি। বিজেপির অভিযোগ, গতবার মেলা পরিচালনার দায়িত্বে থাকা কমিটির তৃণমূল নেতারা হিসেব পেশ করেনি। এ বার মেলা শুরু হওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। বিজেপি কর্মীদের সক্রিয় বিরোধিতায় তা হয়নি। ফলে পয়লা মাঘে মাঘমেলা শুরুর ঐতিহ্যে ছেদ পড়ে। শনিবার বিজেপির পান্ডুয়া মণ্ডল সভাপতি অভিজিৎ ঘোষ মেলা শুরু করেন কার্যত একক দায়িত্বে। এ নিয়ে এলাকায় উত্তেজনা ছড়ায়। তবে এই উদ্যোগের সক্রিয় বিরোধিতায় নামেমি তৃণমূল। ফলে, মেলা পরিচালনার দায়িত্ব কার্যত চলে আসে বিজেপির হাতে। এই ঘটনাকে নিজেদের জয় বলে মনে করছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের বক্তব্য, গত বছরের মেলার হিসেব দেওয়ার ভয়ে ‘রণে ভঙ্গ দিয়েছে’ তৃণমূল। পক্ষান্তরে তৃণমূলের বক্তব্য, ঐতিহ্যবাহী মাঘমেলাকে নিয়ে তারা ‘রাজনীতি’ করতে চায় না। তাই ‘সক্রিয় বিরোধিতা’র পথে হাঁটেনি তারা। গোটা বিষয়টি থেকে দূরত্ব তৈরি করতে চাইছে শাসকদল।
তৃণমূল পরিচালিত পান্ডুয়া পঞ্চায়েতের প্রধান সুভাষচন্দ্র দাস বলেন, ‘‘মেলা কমিটির সঙ্গে আমি যুক্ত নই। কী ভাবে মেলা হচ্ছে, তা জানি না। মেলা নিয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’ অভিজিৎ বলেন, ‘‘ক্ষুদ্র গরিব ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে মেলার দায়িত্ব আমরাই নিয়েছি। তবে নতুন কমিটিতে পুরনো কমিটির কয়েক জন সদস্যকে রাখা হয়েছে।’’
পান্ডুয়ার তৃণমূল নেতা তথা পুরনো মেলা কমিটির যুগ্ম-সম্পাদক মাধব ঘোষ বলেন, ‘‘পুরনো কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গড়ে মেলা করছে বিজেপি। নতুন কমিটিতে কারা আছে তা জানি না। কী ভাবে মেলা হচ্ছে, তা বলতে পারব না। আমরা গোটা বিষয়টি পান্ডুয়া থানায় জানিয়েছি। মেলার দখল নিতে আমাদের কয়েক জনকে শুক্রবার রাতে মারধর করে বিজেপির নেতা-কর্মীরা। সেই বিষয়টিও থানায় জানানো হয়েছে।’’ এই অভিযোগ অবশ্য অস্বীকার করেছেন অভিজিৎ।