নার্সের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন স্বাস্থ্য দফতরের
Serampore Walsh Hospital

শিশু-বিভ্রান্তিতে দুই কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা ওয়ালশে

আপাতত তাঁদের কাজে আসতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ০৪:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি

শিশু বদলের অভিযোগ নিয়ে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তির ঘটনায় চতুর্থ শ্রেণির দুই কর্মীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলেন শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। আপাতত তাঁদের কাজে আসতে নিষেধ করে দেওয়া হয়েছে।

Advertisement

হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান তথা উত্তরপাড়ার বিধায়ক প্রবীর ঘোষাল মঙ্গলবার বলেন, ‘‘ওই দু’জন একটি সদ্যোজাতকে বাড়ির লোকজনকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন। এটা ওঁদের কাজ নয়। ওঁদের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগও করেছেন প্রসূতির বাড়ির লোকেরা। গোটা বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। ওই দুই কর্মীকে কাজে আসতে নিষেধ করা হয়েছে।’’

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকেরা অবশ্য প্রসূতি বিভাগে কর্তব্যরত নার্সের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন। তাঁদের বক্তব্য, শিশুকে বাড়ির লোকের কাছে দেখানোর কথা নার্সের। কী করে অন্য কেউ ওই কাজ করতে পারেন?

Advertisement

হাসপাতাল সূত্রের খবর, শুক্রবার গভীর রাতে শ্রাবন্তী দাস নামে সিঙ্গুরের বাড়ুইপাড়ার এক মহিলা একটি সন্তান প্রসব করেন। শ্রাবন্তীর স্বামী সুকান্তের অভিযোগ, প্রথমে তাঁদের পুত্রসন্তান দেখানো হয়েছিল। ঘণ্টাখানেক পরে জানানো হয়, কন্যাসন্তান হয়েছে। বিষয়টি তাঁরা মানতে পারেননি। এই বিষয়ে তাঁরা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। তাতে শিশুর ডিএনএ পরীক্ষার দাবি জানানো হয়। সোমবার প্রবীরবাবু এবং হাসপাতালের অন্য আধিকারিকেরা সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে কথা বলেন।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, শ্রাবন্তীর মেয়ে হয়েছে। শিশু বদলের ঘটনা ঘটেনি। তবে, ওই প্রসূতির বাড়ির লোকজনকে অন্য এক প্রসূতির সদ্যোজাত পুত্রকে দেখানো হয়েছিল বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ মেনে নিয়েছেন। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপারিন্টেন্ডেন্ট দেবপ্রসাদ ঘোষ মঙ্গলবার বলেন, ‘‘প্রসূতির স্বামীর অভিযোগপত্র, কর্তব্যরত নার্স, অভিযুক্ত দুই চতুর্থ কর্মীর বয়ান— সবই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের (সিএমওএইচ) কাছে পাঠানো হয়েছে। সিএমওএইচ-এর নির্দেশ অনুযায়ী আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ করব।’’

গোটা বিষয়টি নিয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা অবশ্য সংশ্লিষ্ট নার্সের ভূমিকা নিয়ে অসন্তুষ্ট। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী বলেন, ‘‘হাসপাতাল থেকে নথিপত্র এখনও আমার হাতে আসেনি। তবে ওই ঘটনা যেটুকু জেনেছি, তাতে এটা পরিষ্কার যে, শিশু দেখানোর ক্ষেত্রে হাসপাতালের তরফে অবহেলা নিশ্চয়ই হয়েছিল। শিশু দেখানোর দায়িত্ব নার্সের। অন্য কেউ কী ভাবে এই কাজ করতে পারেন? এই বিষয়টি অবশ্যই তদন্ত করা হবে। আর কোনও হাসপাতালে এই জিনিস হয় না।’’

হাসপাতাল সূত্রের খবর, কর্তব্যরত নার্স লিখিত ভাবে জানিয়েছেন, তিনি দুই প্রসূতিকে নিয়ে ব্যস্ত থাকার সময়ে তাঁকে না-জানিয়েই ওই দুই কর্মী সদ্যোজাতকে বাড়ির লোকজনকে দেখাতে নিয়ে যান। স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিক অবশ্য বলেন, ‘‘অনভিজ্ঞ কেউ ওই কাজ কী করে করতে পারেন, প্রশ্ন তো সেটাই। এটা প্রথম বার হল, নাকি প্রায়ই হয়— সেটাও দেখতে হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement