ধুঁকতে থাকা রিষড়া সেবাসদন হাসপাতালের এক প্রবীণ চিকিৎসকের অপমৃত্যু হল। কয়েক মাস ধরে বেতন না-পেয়ে রেবতীমোহন ঘোষ (৮৫) নামে ওই চিকিৎসক বুধবার সন্ধ্যায় ট্রেনের সামনে আত্মঘাতী হন, এই অভিযোগ তুলে রাতে হাসপাতালের সামনে ঘণ্টা দেড়েক অবরোধ করেন সেখানকার কর্মীরা।
রেল পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ রেবতীমোহনবাবু ডানলপে থাকতেন। চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি হাসপাতালে সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। এ দিন বুধবার বিকেল পৌনে ৫টা নাগাদ তিনি হাসপাতালে আসেন। রোগী দেখেন। ঘণ্টাখানেক পরে হাসপাতাল থেকে বের হন। কাছেই রিষড়া স্টেশন। রিকশা করে তিনি তিন নম্বর রেলগেটের সামনে নামেন। এর পরেই তিনি ট্রেনের সামনে আত্মঘাতী হন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ গ্যালপিং আপ কাটোয়া লোকালের ধাক্কায় ঘটনাস্থলেই রেবতীমোহনবাবুর মৃত্যু হয়। দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তে পাঠানো হয়। দুর্ঘটনা না আত্মহত্যা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
হাসপাতাল কর্মীরা জানান, বেরনোর সময় ওই চিকিৎসক বেতন না-মেলায় আত্মঘাতী হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। কিন্তু তা যে সত্যি হবে, তাঁরা ভাবতে পারছেন না। সঙ্গীতা গঙ্গোপাধ্যায় নামে এক নার্সের অভিযোগ, ‘‘ডাক্তারবাবু এই পরিস্থিতির জন্য হাসপাতালের হিসাবরক্ষক দীপক ঘোষকে দায়ী করেছেন।’’
এ দিন অবরোধের সময়ে দীপকবাবুকে গ্রেফতারের দাবি ওঠে। অভিযোগ ওঠে, হাসপাতালের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখতে চান দীপকবাবু। সে জন্য পরিস্থিতি আরও খারাপ হচ্ছে। কর্মীদের অবরোধকারীদের একটি দল থানাতেও যায়। হাসপাতাল কর্মী পূর্ণচন্দ্র বারিক বলেন, ‘‘একেই হাসপাতালের দুর্দশা চলছে। তার উপর এমন এক জন চিকিৎসক আমাদের ছেড়ে চলে যাওয়ায় আরও সমস্যা হল। যাদের জন্য এই অবস্থা, তাদের শাস্তি হোক।’’
দীপকবাবু অবশ্য দাবি করেছেন, তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তোলা হচ্ছে। তিনি এ দিন হাসপাতালের কাজেই মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসে গিয়েছিলেন। সন্ধ্যায় ফেরার সময় ঘটনার কথা শোনেন। তিনি বলেন, ‘‘রেবতীবাবুর বেতন বাবদ ১ লক্ষ ৪৪ হাজার টাকা বকেয়া ছিল। ফেব্রুয়ারি মাসেও কিছু টাকা দিয়েছিলাম। হাসপাতালের অবস্থা ভাল হলে বাকিটা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছিল।’’