প্রতীকী চিত্র
শাসকদলের রদবদলে গ্রামীণ হাওড়ার কোনও নেতার ঘাড়ে কোপ পড়েনি। উল্টে দু’টি নতুন পদে নিয়োগ হয়েছে। চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়েছে শ্যামপুরের বিধায়ক কালীপদ মণ্ডলকে। দলের অতিরিক্ত কো-অর্ডিনেটর হয়েছেন বাগনানের বিধায়ক
অরুণাভ সেন।
প্রতিটি জেলায় পর্যবেক্ষক পদ তুলে দিয়ে একজন করে চেয়ারম্যান নিয়োগ করা হয়েছে। সেই হিসেবে জেলার চার বারের বিধায়ক, বয়সে প্রবীণতম, কালীপদবাবুকে গ্রামীণ হাওড়ার চেয়ারম্যান পদে নিয়োগে নতুন কিছু দেখতে পাননি জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তবে, অতিরিক্ত একজন কো-অর্ডিনেটর (বর্তমানে কো-অর্ডিনেটর রয়েছেন উদয়নারায়ণপুরের বিধায়ক সমীর পাঁজা) নিয়োগের মধ্যে কিছুটা অভিনবত্ব আছে বলে মনে করছেন নেতৃত্বের একটা বড় অংশ। তাঁদের ব্যাখ্যা, বিধানসভা ভোটের আগে গ্রামীণ জেলা তৃণমূলকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার বার্তা দিলেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের এক নেতার কথায়, ‘‘হাওড়া সদরে দলে বিস্তর গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ও কাদা ছোড়াছুড়ি আছে। অনেক সময়ে এটা প্রকাশ্যেই চলে আসছে। গ্রামীণ জেলা তৃণমূলে সেই অর্থে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই। কিছু ক্ষেত্রে ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে মাত্র। বিধানসভা ভোটের আগে দিদি কোনও ঝুঁকি নিলেন না। কাউকে বাদ না দিলেও সংযোজন করা হল।’’
আর এক নেতা বলেন, ‘‘ছয় বিধায়কের মধ্যে একজন মন্ত্রী। চার জন দলের শীর্ষ পদে। এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে দিদি গ্রামীণ জেলা তৃণমূলকে আগের তুলনায় বেশি গুরুত্ব দিচ্ছেন।’’ অরুণাভবাবু বলেন, ‘‘দলের সিদ্ধান্ত মাথা পেতে নিয়ে কাজ করব।’’ একই মন্তব্য করেন কালীপদবাবুও। গ্রামীণ জেলা তৃণমূল সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘নেত্রী যা ভাল বুঝেছেন, করেছেন। এই পদক্ষেপে জেলা তৃণমূল শক্তিশালী হবে।’’
গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের সাংগঠনিক বিস্তার সীমাবদ্ধ উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রের মধ্যে। এই কেন্দ্রের মধ্যে রয়েছে উলুবেড়িয়া পূর্ব, উলুবেড়িয়া উত্তর, উলুবেড়িয়া দক্ষিণ, আমতা, বাগনান, শ্যামপুর এবং উদয়নারায়ণপুর বিধানসভা কেন্দ্র। আমতা ছাড়া বাকি বিধানসভা তৃণমূলের দখলে। উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক পুলকবাবু সভাপতি, উদয়নারায়ণপুরের সমীরবাবু কো-অর্ডিনেটর, উলুবেড়িয়া উত্তরের বিধায়ক নির্মল মাজি মন্ত্রী। এতদিন আর কোনও বিধায়ক দলের সাংগঠনিক শীর্ষ পদে বা মন্ত্রী ছিলেন না।
জেলা তৃণমূলের একটি সূত্রের খবর, অরুণাভবাবু বা কালীপদবাবুর অনুগামীরা চাইছিলেন, তাঁরা মন্ত্রিত্ব বা দলের সাংগঠনিক কোনও শীর্ষ পদে যান।
কালীপদবাবুর অনুগামীদের যুক্তি, তিনি চার বারের বিধায়ক। ২০০৩ সালে তাঁর নেতৃত্বে দল জেলায় পঞ্চায়েত নির্বাচনে লড়াই করেছিল। দল ক্ষমতায় আসার পরে তিনি গুরুত্বপূর্ণ পদ পাননি। অরুণাভবাবুর অনুগামীরা মনে করেন, তিনি ভাল সংগঠক। অবিভক্ত জেলা যুব তৃণমূলের সভাপতি ছিলেন এক সময়ে। কিন্তু পরে আর তেমন কোনও উল্লেখযোগ্য দলীয় পদ তিনি পাননি। কালীপদবাবুর চেয়ারম্যান হওয়া এবং
অরুণাভবাবুকে কো-অর্ডিনেটর করার মধ্যে দিয়ে তাঁদের অনুগামীদের খুশি করা গেল বলে গ্রামীণ জেলা তৃণমূলের একটি অংশ মনে করছেন।