দূষণ: গঙ্গার পাড়ে ফেলা হয়েছে আবর্জনা। নিজস্ব চিত্র
রাস্তার মোড়ে মো়ড়ে স্লোগান— ‘চকচকে রাস্তা, ঝকঝকে আলো/ কাউন্সিলর ভাল’। উঁচু উঁচু হাইমাস্ট আলোয় ভেসে যাচ্ছে শহর। কিন্তু রাস্তায় চলা দায়। নাকে রুমাল চাপা দিলেও পচা গন্ধে গুলিয়ে ওঠে গা, এমনই অভিযোগ বাঁশবেড়িয়া পুর এলাকার বাসিন্দাদের। কেন্দ্র সরকারের একটি সমীক্ষা রিপোর্টও বলছে, দেশের অন্যতম দূষিত শহর এই বাঁশবেড়িয়া।
এ শহরের জনসংখ্যা প্রায় এক লক্ষ পাঁচ হাজার। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা আবর্জনা ফেলার জন্য নীল-সবুজ বালতি দিয়েছে। নিয়মিত সে আবর্জনা সংগ্রহও করে নিয়ে যান সাফাই কর্মীরা। কিন্তু তারপর?
বাড়ি, দোকান বা হোটেল থেকে সংগৃহীত আবর্জনার সবটাই ফেলে দেওয়া হয় রাস্তার ধারে বা গঙ্গার পাড়ে। ফলে, তাতে শহর কতটা পরিচ্ছন্ন থাকছে, সে প্রশ্ন উঠছে।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পঞ্চানন তলা, বাঁশবেড়িয়া সেতুর নীচে, গঙ্গার পাড়ে, ত্রিবেণী বাসস্ট্যান্ড থেকে চুঁচুড়া পর্যন্ত, কল্যাণী যাওয়ার অটো, টোটোতে উঠলেও দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ নিত্যযাত্রীরা। এলাকারই এক টোটো চালক তাপস মণ্ডল বলেন, ‘‘এই শহরের মধ্যেই যাত্রী নিয়ে যাতায়াত করতে হয়। প্রায় সর্বত্রই এক অবস্থা। শিবপুর মাঠে গঙ্গার ধারের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ।’’ শহরের বাসিন্দা পল্লব দে বলেন, ‘‘পুর এলাকায় যত্রতত্র আবর্জনা ফেলা হয়। রাস্তার ধারে এত আবর্জনা পড়ে থাকে যে হাঁটা যায় না। পুরসভার সাফাই কর্মীরাই এ সব ফেলে যান। কাকে
কী বলব?’’
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন পুরপ্রধান অরিজিতা শীল। তিনি বলেন, ‘‘প্রতিটি ওয়ার্ড পরিষ্কার করা হয়। কিন্তু আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা নেই। মূলত জমির সমস্যাতেই আটকে রয়েছি আমরা।’’ পুরপ্রধান আবার অভিযোগের আঙুল তুলেছেন চটকলগুলির দিকে। তাঁর দাবি, দু’টি ওয়ার্ডের মধ্যে চটকল রয়েছে। ওই সব কারখানার আবর্জনা ফেলার জায়গাও নেই। অরিজিতা বলেন, ‘‘আমরা বহুবার চটকল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করেছি। সমাধান হয়নি। বাধ্য হয়ে রাজ্য সরকারকেও জানিয়েছি। কেএমডিএ-র সঙ্গে আলোচনা চলছে। আমরা শহরের আবর্জনা থেকে জৈব সার তৈরির পরিকল্পনা করেছি।’’
সেই পরিকল্পনা কবে বাস্তবায়িত হবে, কবেই বা শহর সাফসুতরো হবে, এ প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে শহরবাসীর।