হাসিমুখে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
গাঁধীগিরি! না ভালবাসার শাসন!
হেলমেটহীন মোটরবাইক আরোহীকে দেখলেই দাঁড় করাচ্ছেন পুলিশকর্মী। ধমকের বালাই নেই। হাসিমুখে এগিয়ে এসে বাইক-আরোহীর হাতে গোলাপ তুলে দিচ্ছেন খোদ এসডিপিও।
বৃহস্পতিবার হুগলির শেওড়াফুলিতে এ ভাবেই মোটরবাইক আরোহীদের সতর্ক করার চেষ্টা করল পুলিশ। শ্রীরামপুর মহকুমা পুলিশ এবং বৈদ্যবাটি পুরসভার উদ্যোগে ট্রাফিক সচেতনতায় কর্মসূচি নেওয়া হয়। এই উপলক্ষে শেওড়াফুলি ফাঁড়ির মোড় থেকে জিটি রোড ধরে একটি মিছিল বের হয়। জিটি রোডে এসডিপিও (শ্রীরামপুর) কামনাশিস সেন, শ্রীরামপুর থানার আইসি নন্দদুলাল ঘোষ, শেওড়াফুলি ফাঁড়ির ইনচার্জ সুব্রত দাসদের পাশাপাশি তাতে সামিল হন পুরপ্রধান অরিন্দম গুঁইন এবং কাউন্সিলররা। বিভিন্ন ক্লাব, সংগঠন এবং স্কুল পড়ুয়াদেরও মিছিলে সামিল করা হয়। তাদের হাতে ছিল সচেতনতামূলক স্লোগান সংবলিত প্ল্যাকার্ড।
বেশ কিছু দিন ধরেই হুগলির নানা জায়গায় দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে। বৃহস্পতিবারেও চন্দননগরে একটি গাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষে এক মোটরবাইক আরোহীর মৃত্যু হয়েছে। পুলিশের বক্তব্য, বহু ক্ষেত্রেই দেখা যায় আরোহীরা হেলমেট না-পড়ে বেপরোয়া গতিতে বাইক চালান। এটিকে বাইক দুর্ঘটনা এবং প্রাণহানির অন্যতম কারণ হিসেবে দেখছেন পুলিশকর্তারা। তাঁদের বক্তব্য, সাধারণ মানুষ সচেতন হলেই দুর্ঘটনা অনেক কমে যাবে। অবশ্য কিছু দিন ধরেই শ্রীরামপুরের নানা জায়গায় নিয়ম ভেঙে চলা মোটরবাইকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছে পুলিশ। এ দিন অবশ্য ধড়পাকড় বা জরিমানার কোনও ব্যাপার ছিল না। তার পরিবর্তে ফাঁকা মাথার বাইক আরোহীদের হাতে লাল গোলাপ তুলে দিয়েছেন কামনাশিসবাবু। কাউকে কাউকে শুনতে হয়েছে, নিজের জন্য না-হোক, স্ত্রী-সন্তানের কথা ভেবে তাঁরা যেন হেলমেট পড়েন। পুলিশের এমন উদ্যোগে অনেকেই লজ্জায় পড়েছেন। রাস্তাতেই তাঁরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এমন ভুল আর করবেন না। পুলিশ আধিকারিকরা জানান, সাধারণ মানুষকে সচেতন করতেই এমন ভাবনা।
কামনাশিসবাবু বলেন, ‘‘এক দিন বা এক সপ্তাহ নয়, ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ সারা জীবনের অঙ্গ হওয়া উচিত। এই কর্মসূচির সঙ্গে ছোটদের যুক্ত করা হয়েছে। যাতে তারা বড়দের বোঝাতে পারে।’’ তবে, এ দিন বাইক আরোহীদের পুলিশকর্তারা জানিয়ে দিতে ভোলেননি, নিয়ম ভেঙে গাড়ি চালালে প্রতিদিন গোলাপ দেওয়া হবে না।