সমস্যা মেটা নিয়ে সংশয়ে রেল কর্তারা

আগে বিক্ষোভ-অবরোধ হয়েছে অনেক বার। কিন্তু বৃহস্পতিবার তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ নির্মাণের জন্য গোঘাটের ভাবাদিঘিতে মাটি পড়তেই যে ভাবে প্রতিবাদ হল, তাতে জট কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়লেন রেল কর্তারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গোঘাট শেষ আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৭ ০২:২০
Share:

ভাবাদিঘি: যাকে নিয়ে বিতর্ক। ছবি: মোহন দাস।

আগে বিক্ষোভ-অবরোধ হয়েছে অনেক বার। কিন্তু বৃহস্পতিবার তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথ নির্মাণের জন্য গোঘাটের ভাবাদিঘিতে মাটি পড়তেই যে ভাবে প্রতিবাদ হল, তাতে জট কাটা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়লেন রেল কর্তারা।

Advertisement

পূর্ব রেল কর্তাদের দাবি, ভাবাদিঘির উত্তর দিকের অংশের মোট ৩ একর অধিগ্রহণ করা হয়েছে রেলপথের জন্য। ওই অংশের ২৬৮ জন অংশীদারের মধ্যে ১৭৭ জন ক্ষতিপূরণ নিয়েছেন। ৯১ জন নেননি। মূলত তাঁরাই ভাবাদিঘির অধিগৃহীত অংশ দিয়ে রেলপথ তৈরিতে বাধা দিচ্ছেন। এ দিনের মতো পরিস্থিতি যাতে আর না হয়, সে জন্য ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন রেলের এক কর্তা।

‘দিঘি বাঁচাও কমিটি’র তরফে দীপক দাসের দাবি, ‘‘অনেকেই না জেনে চেক নিয়েছেন। আবার অনেককে ভুল বুঝিয়ে চেক দেওয়া হয়েছিল।’’ আরামবাগ মহকুমা প্রশাসন অবশ্য এই দাবি ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছে। শুনানির মাধ্যমে যথাযথ পদ্ধতি মেনে ক্ষতিপূরণের চেক বিলি হয় বলে দাবি করেছেন প্রশাসনের কর্তারা।

Advertisement

ওই রেলপথের জন্য মাপজোক শুরু হয়েছিল সেই ২০০৬ সালে। গ্রামবাসীদের দাবি, তখন দিঘির উত্তর পাড় দিয়েই মাপ করে অস্থায়ী ভাবে সীমানা চিহ্নিত করা হয়। পরে জানা যায়, দিঘির এক দিকের কিছু জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। রেলকর্তারা অবশ্য সে কথা মানেননি। গোঘাটের দিক থেকে ভাবাদিঘির পূর্ব এবং কামারপুকুরের দিক থেকে ভাবাদিঘির পশ্চিম পাড় পর্যন্ত রেলপথের জন্য মাটি ফেলে জমি তৈরির কাজ হয়ে গিয়েছে আগেই। বাকি রয়েছে শুধু দিঘির অংশের কাজ। এ দিন রেল সেই কাজ শুরু করতেই প্রতিবাদ হল।

আন্দোলনকারীদের বক্তব্য, তাঁদের আপত্তি রেল প্রকল্প নিয়ে নয়। ঝর্না দাস নামে এক আন্দোলনকারী এ দিন বলেন, ‘‘দিঘির অংশে নির্মাণ না করে উত্তর পাড়ের জমিতে রেললাইন হোক। ওখানে গ্রামের যে প্রাথমিক স্কুল রয়েছে, তার পুনর্নিমাণের জন্য আমরাই জমির ব্যবস্থা করে দেব। দিঘির সঙ্গে আমাদের জীবিকা এবং পরিবেশের প্রশ্ন জড়িত।’’

এ দিন ভাবাদিঘিকে ঘিরে এই গোলমালে রেলকর্তাদের কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়লেও অমরপুর নিয়ে তাঁরা কিছুটা স্বস্তি পেয়েছেন। এই রেল প্রকল্পে ভাবাদিঘি ছাড়াও গোঘাটের অমরপুর মৌজায় জমি অধিগ্রহণ নিয়ে জট রয়েছে। কিছু অনিচ্ছুক চাষি এখনও ক্ষতিপূরণের চেক নেননি। এ দিন ব্লক অফিসে ডাকা শুনানিতে ওই চাষিরা কিছু শর্তের বিনিময়ে রেলপথ নির্মাণে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বেল প্রশাসনের কর্তাদের দাবি। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও ভূমি সংস্কার) পূর্ণেন্দু মাজি বলেন, ‘‘জমির দাম বাড়ানোর দাবি ছিল আনিচ্ছুকদের। তাঁদের বোঝানো হয়েছে তা সম্ভব নয়। আগামী ২৬ মার্চ তাঁদের চেক দেওয়া হবে। রেলপথের কারণে নিকাশি ব্যবস্থা-সহ কিছু সমস্যার সুরাহা দাবি করেছেন তাঁরা। সেগুলি আমরা দেখব।’’ শুনানির পরে আন্দোলনকারীদের পক্ষে ‘রেল চালাও, গ্রাম বাঁচাও কমিটি’র সম্পাদক ফটিক কাইতি বলেন, ‘‘আলোচনা হয়েছে। সব সমস্যার সমাধান না হলেও কিছু ক্ষেত্রে দাবি পূরণের আশ্বাস মিলেছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement