কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য। — নিজস্ব চিত্র
বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের ঘোর আপত্তি সত্বেও নসিবপুর পঞ্চায়েতের প্রধান গোবিন্দ ধাড়াকে সিঙ্গুরে দলের ব্লক সভাপতি পদে বসিয়েছে তৃণমূল। এই আবহে হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নার ঘনিষ্ঠ ওই নেতার বিরুদ্ধে ফের আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে সরব হলেন রবীন্দ্রনাথবাবু। দলীয় নেতৃত্বের কাজ নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করলেন।
বুধবার গোবিন্দর হাতে দলের ব্লক সভাপতি হিসেবে নিয়োগপত্র তুলে দেন জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ যাদব। বৃহস্পতিবার বিকেলে নিজের বাড়িতে সাংবাদিক সম্মেলন করে রবীন্দ্রনাথবাবু অভিযোগ করেন, ‘‘গোবিন্দ ধাড়ার অর্থনৈতিক দুর্নীতি সকলের জানা। লক্ষ লক্ষ টাকার জমি তিনি নিজের স্ত্রী, ছেলে ও পুত্রবধূর নামে কিনেছেন। প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে। তাঁকে আমরা ব্লক সভাপতি মেনে নিতে পারছি না।’’
রবীন্দ্রনাথবাবুর পাশে ছিলেন পঞ্চায়েত সমিতি এবং বিভিন্ন পঞ্চায়েতের বেশ কিছু সদস্য। তাঁদের মধ্যে পঞ্চায়েত সমিতির-সহ সভানেত্রী প্রতিমা দাস এবং চারটি পঞ্চায়েতের প্রধান ছিলেন। সাংবাদিক সম্মেলনের আগে ওই সদস্যদের সঙ্গে বৈঠকও করেন বিধায়ক।
তাঁর বিরুদ্ধে রবীন্দ্রনাথবাবুর তোলা অভিযোগ ‘ভিত্তিহীন’ বললে দাবি করেছেন গোবিন্দ। তিনি বলেন, ‘‘দল যা দায়িত্ব দিয়েছে, পালন করব। বিধানসভা ভোটে দলীয় প্রার্থীকে জেতানোর লক্ষ্যেই কাজ করব। তবে, রবীন্দ্রনাথবাবুকে প্রার্থী করা হলে মানুষ ভোট দেবেন না।’’
রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে বেচারামের ‘মধুর’ সম্পর্ক বহুচর্চিত বিষয়। ব্লক সভাপতি পদকে কেন্দ্র করে ফের তা প্রকাশ্যে। নভেম্বর মাসে রবীন্দ্রনাথবাবুর ঘনিষ্ঠ মহাদেব দাসকে সরিয়ে ব্লক সভাপতি পদে গোবিন্দর নাম ঘোষণা করা হয়। তখন একই অভিযোগ তুলে রবীন্দ্রনাথবাবু বলেছিলেন, গোবিন্দকে না সরালে দলত্যাগের কথাও ভাববেন। এ দিন অবশ্য সেই অবস্থান থেকে সরে তিনি বলেন, ‘‘দল ছাড়ব না। দলে থেকেই প্রতিবাদ করব। অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করব। নেত্রী আমার কথা শুনবেন বলে আমার বিশ্বাস।’’ তাঁর ক্ষোভ, জেলায় দলের দায়িত্বে থাকা নেতারা নিজেদের দায়িত্ব পালন করেননি। তাঁরা বিচার করতে ভুল করছেন। অসৎ ব্যক্তিকে ব্লক সভাপতি হিসেবে ঘাড়ে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা তাঁরা মানবেন না।
রবীন্দ্রনাথবাবুর উষ্মার কথা জেলা তৃণমূল সভাপতি দিলীপ শুনেছেন। তিনি বলেন, ‘‘দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানাব। তাঁদের নির্দেশেই জেলায় দল পরিচালিত হয়।’’