নতুন করে আর মৃত্যুর খবর নেই। তবে দুর্ঘটনাগ্রস্থ বাসটির অবস্থা কেমন ছিল তার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। বুধবার রাত সাড়ে সাতটা নাগাদ হাওড়া-পাঁচারুল রুটের বাস পেঁড়ো বাকুলি পাড়ায় একটি বাঁকের কাছে উল্টে যায়। ফলে চার জনের মৃত্যু হয়। পুলিশ জানিয়েছ, মৃতেরা হলেন নিবেদিতা দাস (৪৮), রাজা ঘড়ুই (৪৫), প্রসেনজিৎ পাল (৩৯) ও টোটন পাল (৩৫)। টোটন ও প্রসেনজিতের বাড়ি হরিশপুর। নিবেদিতার বাড়ি গৌরাঙ্গচকে। আর রাজার বাড়ি পাঁচারুলে। ময়নাতদন্তের পরে দেহগুলি পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, বাসটির অবস্থা কেমন ছিল তা দেখা হবে। প্রয়োজনে পরিবহণ দফতরকে বাসটির সম্পূর্ণ অবস্থা পরীক্ষার জন্য হলা হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃষ্টির মধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাসটি রাস্তার পাশে থাকা একটি নয়ানজুলির জলে পড়ে যায়। ৫০-৬০ জন যাত্রী বাসের মধ্যে আটকে পড়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে অনককে কোনও রকমে উদ্ধার করা গেলেও বেশিরভাগ যাত্রী আটকে পড়েছিলেন। স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার কাজে হাত লাগান। বাসের মূল গেট খুলতে না পারায় সমস্যা বেড়ে যায়। অভিযোগ, বাসে ইমারজেন্সি গেট থাকে। সেটি ঝালাই করা ছিল। ফলে ওই গেট দরজা খোলা যায়নি। আটকে পড়া যাত্রীদের জানলা ভেঙে উদ্ধার করা হয়। বাসটিকে উদ্ধার করতে প্রথমে এলাকা থেকে একটি জেসিবি মেশিন নিয়ে আসে পুলিশ। পরে ক্রেন এনে বাসটিকে উদ্ধার করে তারা। বাসটি উদ্ধারের পরেই চার জনের মৃতদেহ উদ্ধার হয়। রাত পর্যন্ত বাসের উদ্ধার কাজে তদারকি করেন পুলিশ ও ব্লক প্রশাসনের কর্তারা। ঘটনাস্থলে যান উদয়নারায়ণপুরের বিডিও দেবাশিস চৌধুরীও। ছিলেন বিধায়ক সমীর পাঁজা। পেঁড়োর বাসিন্দা নব অধিকারী বলেন, ‘‘বাসটি নয়ানজুলিতে পড়ে গিয়েছে দেখেই আমরা জলে নেমে পড়ি। জানলার কাচ ভেঙে তাঁদের উদ্ধার করতে হয়। জল আরও একটু বেশি থাকলে বড় সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত।’’
মাত্র ছ’মাসের মধ্যে উদয়নারায়ণপুরে দু’টি রুটে বাস দুর্ঘটনা হয়েছে। ফলে বাস পরিষেবা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। চলতি মাসের গোড়ার ডিহিভুরসুট-হাওড়া রুটের একটি বাস উল্টে যায়। যদিও সেক্ষেত্রে যাত্রীরা আহত হলেও মৃত্যুর কোনও ঘটনা ঘটেনি। যাত্রীদের অভিযোগ, এলাকার বেশিরভাগ বাসেরই অবস্থা বেহাল। ফলে দুর্ঘটনার সম্ভাবনা অনেকাংশে বাড়ে গিয়েছে। তাই পরিবহণ দফতর এই সব বাসের অবস্থা পরীক্ষা করুক। তারপর সেগুলিকে রাস্তায় চলার ছাড়পত্র দিক। পরিবহণ দফতরের এক কর্তার দাবি, এই ধরণের লিখিত কোনও অভিযোগ আসেনি। অভিযোগ পেলে রাজ্য পরিবহণ দফতরে জানিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।