জ্যোতির মো়ড়ে অবরোধ । নিজস্ব চিত্র
ছ’মাস ধরে বন্ধ চন্দননগরের গোন্দলপাড়া এবং শ্রীরামপুরের ইন্ডিয়া জুটমিল। প্রশাসনের মধ্যস্থতায় একের পর এক বৈঠকেও খোলেনি মিলের দরজা। কাজ হারিয়ে বিপাকে দুই মিলের হাজার দশেক শ্রমিক এবং তাঁদের পরিবার। মিল বন্ধের প্রভাব পড়েছে স্থানীয় অর্থনীতিতেও। অবিলম্বে এই দুই মিল খোলার দাবিতে শুক্রবার হুগলি জেলার বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ হল বিভিন্ন বামপন্থী শ্রমিক সংগঠনের ডাকে। যোগ দিয়েছিল আইএনটিইউসিও।
সকাল সাড়ে ১১টা নাগাদ রিষড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগরের জিটি রোড এবং বাঁশবেড়িয়ায় অসম লিঙ্ক রোড অবরোধ করা হয়। সব জায়গাতেই আধ ঘণ্টা অবরোধ চলে। গোন্দলপাড়া চটকলে গত ২৭ মে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝোলান কর্তৃপক্ষ। এক দিন পরে একই গোষ্ঠীর মালিকানাধীন শ্রীরামপুরের চটকলটিরও একই পরিণতি হয়। শ্রম দফতরে বৈঠকে মালিকপক্ষের তরফে জানানো হয়, মিলের আর্থিক অবস্থা ভাল নয়। কাঁচা পাটের অভাব রয়েছে।
এ দিন চন্দননগরের জ্যোতির মোড়ে গোন্দলপাড়া চটকলের কয়েকশো শ্রমিক অবরোধে যোগ দেন। কংগ্রেস প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন আইএনটিইউসি-র কর্মীরাও তাতে সামিল হন। শ্রমিকদের অভিযোগ, মালিকপক্ষ একতরফা সিদ্ধান্ত নিয়ে মিল বন্ধ করেছেন। তাঁদের প্রশ্ন, কর্তৃপক্ষের ‘অপদার্থতা’র দায় শ্রমিকরা কেন ভোগ করবেন? ভজনলাল সাউ নামে এক শ্রমিক বলেন, ‘‘মালিকের খামখেয়ালিপনায় মিল বন্ধ। সংসার চালাতে হিমশিম।’’
সিপিএম প্রভাবিত শ্রমিক সংগঠন সিটু নেতাদের অভিযোগ, ইন্ডিয়া জুটমিল কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছেন আজ, শনিবার থেকে শ্রমিক আবাসনের বিদ্যুৎ এবং জলের সংযোগ কেটে দেওয়া হবে। সিটু নেতা সুমঙ্গল সিংহ বলেন, ‘‘এটা অমানবিক।’’ তাঁর অভিযোগ, ‘‘মিল খোলা নিয়ে রাজ্য সরকার সদর্থক ভূমিকা পালন করতে পারেনি। সাংসদ, বিধায়করাও কিছু করেননি।’’
শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, শ্রমিক সংগঠনগুলি মাঝে মধ্যে সাময়িক কর্মসূচি পালন করে দায় সারছে। লাগাতার আন্দোলন হচ্ছে না। বিষয়টি মেনে নিয়ে সুমঙ্গলের দাবি, ‘‘কোনও কর্মসূচি নিলেই তার আগের দিন বৈঠকের চিঠি ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে। কর্মসূচি স্থগিত রাখতে হয়েছে।’’ কিন্তু এ বার মিল না খুললে বৃহত্তর আন্দোলন হবে জানান িতনি।