প্রতীকী ছবি।
পরিস্থিতির উন্নতি হল না ডানকুনিতে রেলের যন্ত্রাংশ তৈরি্র কারখানায়। ‘হিন্দুস্তান ইঞ্জিনিয়ারিং ইন্ডাস্ট্রিজ় লিমিটেড’ নামে ওই কারখানায় শুক্রবারেও ঠিকা শ্রমিকেরা কাজে যোগ দিলেন না। ফলে, উৎপাদন হল না।
সমস্যা মেটানোর দাবিতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছে আইএনটিটিইউসি প্রভাবিত ঠিকা শ্রমিক সংগঠন। এ দিন তারা বিষয়টি শ্রীরামপুরের উপ-শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তীকে জানিয়েছে। দরখাস্ত জমা দেওয়া হয়েছে মহকুমাশাসক (শ্রীরামপুর) সম্রাট চক্রবর্তীর দফতরে। ওই কারখানায় স্থায়ী-অস্থায়ী মিলিয়ে প্রায় ছ’শো শ্রমিক আছেন। তার মধ্যে প্রায় সাড়ে চারশো ঠিকা শ্রমিক। সমস্যা তৈরি হয় বুধবার। কারখানা সূত্রের খবর, ওই দিন শ্রমিক সরবরাহকারী দুই ঠিকাদার কিছু সমস্যার কথা উল্লেখ করে কারখানা কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে জানান, বৃহস্পতিবার থেকে তাঁরা কাজ করবেন না। এতে বিপাকে পড়েন ঠিকা শ্রমিকরা। তাঁদের অভিযোগ, অগস্ট মাসের বেতন মেলেনি। নতুন ঠিকাদার ওই টাকা দেবেন কিনা, আগের মতোই দৈনিক হারে মজুরি মিলবে কিনা, তা নিশ্চিত নয়। একই কারণে পুজোর বোনাসের ক্ষেত্রেও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার থেকে ঠিকা শ্রমিকরা কাজ বন্ধ করে দেন। তাঁদের দাবি, মালিকপক্ষ জানিয়েছেন, তারা নতুন ঠিকাদার নিয়োগের ব্যবস্থা করছেন। ঠিকা শ্রমিকরা যেন কাজে যোগ দেন। ঠিকা শ্রমিক সংগঠনের বক্তব্য, নির্দিষ্ট হারে শ্রমিকদের মজুরি, অগস্ট মাসের বেতন এবং পুজোর বোনাস দেওয়ার বিষয়টি লিখিত ভাবে নতুন ঠিকাদারকে জানাতে হবে। তা না হলে ঠিকাদার সংস্থা শ্রমিকদের সঙ্গে বঞ্চনা করতে পারে। সংগঠনের সভাপতি অন্বয় চট্টোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, ‘‘পুজোর মুখে মালিকপক্ষ পরিকল্পিত ভাবে এই পরিস্থিতি তৈরি করল। মা-বাবা, স্ত্রী-ছেলেমেয়ের জন্য পুজোয় নতুন পোশাকের ভাবনা ছেড়ে শ্রমিককে ভাত-ডাল জোটানের চিন্তা করতে হচ্ছে।’’ কারখানা কর্তৃপক্ষ অভিযোগ মানতে নারাজ। পরিস্থিতির দায় তাঁরা শ্রমিকদের উপরে চাপিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, শ্রমিক সংগঠনের তরফেই তাঁদের বলা হয়েছে, পুরনো ঠিকাদার অগস্টের বেতন এবং পুজোর বোনাস মিটিয়ে দেবেন। এক কর্তার কথায়, ‘‘ঠিকা শ্রমিকরা কাজ না করায় উৎপাদন বন্ধ। লোকসান হচ্ছে। ওঁরা কাজে যোগ দিলে তবে তো নতুন ঠিকাদার তাঁদের কাছে গিয়ে মজুরি নিয়ে কথা বলবেন। ওঁদের কাজে যোগ দেওয়ার অপেক্ষায় আছি।’’