আবর্জনায় বুজে গিয়েছে পুকুরের একাংশ।—নিজস্ব চিত্র।
এক সময় আয়তন ছিল প্রায় চার বিঘা। শহরের একেবারে কেন্দ্রস্থলে পুকুরটি ছিল বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। শহরের সৌন্দর্য্য বাড়াত এটা। কিন্তু এখন আর তা বোঝার উপায় নেই। কারণ, গোটা পুকুরটা আবর্জনায় ভরে গিয়েছে। যার ফলে ছড়াচ্ছে দূষণ।
হাওড়ার উদয়নারায়ণপুরে ওই পুকুর ঘিরে রয়েছে বিডিও অফিস, থানা, সারদাচরণ ইনস্টিটিউট নামে একটি স্কুল ও বহু পুরনো একটি বাজার। এক সময় পুকুরের মালিক ছিলেন স্থানীয় জমিদাররা। পরে মালিকানা চলে আসে সারদাচরণ ইনস্টিটিউটের হাতে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এক সময়ে পরিষ্কার জলে টলটল করত পুকুর। কিন্তু এখন সে সব ইতিহাস। পুকুরপাড়ের বেশিরভাগ অংশে তৈরি হয়েছে দোকান। আর এক পাশে স্কুলের ছাত্রদের সাইকেল স্ট্যান্ড তৈরি হয়েছে। এ সবের জন্য পুকুরের আয়তনও কমে গিয়েছে। কিন্তু তাতেও রেহাই নেই। নিয়মিত পরিষ্কার না করায় পানায় ভরে গিয়েছে পুকুর। তার উপর আশপাশের বাসিন্দা থেকে ব্যবসায়ী সকলেই পুকুরে আবর্জনা, নোংরা জল ফেলায় পুকুর থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে।
স্থানীয় বাসিন্দা তারকনাথ মেটে, গৌতম কোলে বলেন, ‘‘শহরে বড় পুকুর বলতে এটাকেই বোঝানো হতো। কিন্তু সংস্কারের অভাবে পুকুরটা বুজে গিয়েছে। এই অবস্থায় ঘিঞ্জি এই এলাকায় আগুন লাগলে এখান থেকে জল পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ।’’ উদয়নারায়ণপুর পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি মৃত্যুঞ্জয় সামন্ত বলেন, ‘‘পুকুরটির মালিক স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁরা যদি অনুমতি দেন তা হলে একশো দিনের প্রকল্পে পুকুরটি পরিষ্কার করে দেওয়া যায়। কিন্তু সেই অনুমতি মেলেনি।’’
যদিও প্রধান শিক্ষক প্রশান্ত মান্নার দাবি, ‘‘আমাদের হাতে যথেষ্ট তহবিল না থাকায় আমরা নিজেরাই বরং পঞ্চায়েত সমিতিকে বলেছিলাম পুকুরটি সাফ করে দিতে। কিন্তু কাজ হয়নি।’’ মূলত যাদের বিরুদ্ধে পুকুরে বর্জ্য ফেলার অভিযোগ উঠেছে সেই ব্যবসায়ীরা কী বলছেন!
উদয়নারায়ণপুর বাজার কমিটির পক্ষে অরুণকুমার রক্ষিত এবং স্বপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা ব্যবসায়ীদের পুকুরে বর্জ্য ফেলতে বারণ করেছি। কিন্তু রাতের অন্ধকারে কে বা কারা বর্জ্য ফেলছেন তা জানা যায়নি। প্রশাসনকেই এ ব্যাপারে উদ্যোগী হতে হবে। স্বপনবাবু বলেন, ‘‘পুকুরে ময়লা ফেললে কঠোর সাজা দেওয়া হবে বা জরিমানা আদায় করা হবে, এই মর্মে যদি রাজ্য সরকার বিজ্ঞপ্তি জারি করে, তা হলে তাতে কাজ হতে পারে।’’