ফের পুকুর বুজছে, প্রশাসন নির্বিকার

পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ২২ কাঠার কচুরিপানায় ভর্তি পুকুরটিতে ময়লা ফেলে বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। কিন্তু পুলিশ, পুর কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৯ ০১:৪১
Share:

অভিযোগ, পুলিশ, পুর কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের কাছে বলেও কোনও ফল হয়নি। ফাইল চিত্র।

পুকুর বোজানোর অভিযোগে ফের উঠে এল উত্তরপাড়ার নাম। পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডে প্রায় ২২ কাঠার কচুরিপানায় ভর্তি পুকুরটিতে ময়লা ফেলে বুজিয়ে দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। কিন্তু পুলিশ, পুর কর্তৃপক্ষ বা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানিয়েও কোনও ফল হয়নি।

Advertisement

স্থানীয় বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সাক্ষী ঘোষ হাজরা, পুরসভার বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমি ৮-৯টি বেআইনিভাবে পুকুর বোজানো বন্ধের চেষ্টা করছি। কোনওক্ষেত্রেই কাজ হয়নি। আমার বিশ্বাস, প্রমোটারদের সঙ্গে পুর কর্তৃপক্ষের বোঝাপড়া রয়েছে। না হলে পুর কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছে না কেন?’’

বস্তুত উত্তরপাড়া পুর এলাকায় পুকুর বোজানোর অভিযোগ নতুন ঘটনা নয়। এর আগে ১৩ নম্বর ওয়ার্ডে একটি কারখানার জমিতে আবাসন গড়ে উঠছে। সেই জমিতে দুটি পুকুর আছে। তার মধ্যে একটি পুকুর বুজিয়ে অনেকটাই ছোট করে দিয়েছে সংশিষ্ট প্রমোটার। বিষয়টি নিয়ে পুরপ্রধান দিলীপ যাদব বলেছিলেন, পুকুর বোজানোর প্রমাণ মিললে থানয় অভিযোগ দায়ের করা হবে। কিন্তু অভিযোগের সত্যতা প্রামাণ হওয়ার পরও প্রমোটারের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ।

Advertisement

বস্তুত উত্তরপাড়া পুর এলাকায় বহু বছর ধরেই বেআইনিভাবে পুকুর বোজানোর কাজ চলছে। অনেক পুকুরই কৌশলে বুজিয়ে দেওয়া হয়েছে। যে ক’টা অবশিষ্ট আছে, সেগুলি নিয়েও মৎস দফতর বা পুরসভার কোনও নজরদারি নেই। সেই সুযোগেই প্রমোটারেরা পুকুরগুলি হাতিয়ে নিচ্ছে।

একইভাবে উত্তরপাড়া পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের মোহললাল মুখোপাধ্যায় স্ট্রিটের ২২ কাঠার একটি পুকুর বুজিয়ে ফেলা হচ্ছে (এল আর দাগ নম্বর-৩৮২৭)। বিষয়টি নজরে আসতেই স্থানীয় বাসিন্দারা এলাকার মানুষের থেকে সই সংগ্রহ করে পুর কর্তৃপক্ষকে একটি স্মারকলিপি দেন। স্থানীয় বাসিন্দা সাক্ষী ঘোষ-হাজরা বলেন, ‘‘কচুরিপানা ভর্তি ওই পুকুরটির ৫০ শতাংশ বুজিয়ে ফেলা হয়েছে। পুকুরটি রক্ষায় আমি পুরসভার কাউন্সিলর সুমিত চক্রবর্তীকে অনুরোধ করি। কাজ হয়নি। পুকুর বোজানো চলছেই।’’

এই বিষয়ে সিপিএম কাউন্সিলর সুস্মিতা সরকার বলেন, ‘‘ব্যক্তি মালিকানাধীন পুকুর রক্ষার ক্ষেত্রে মালিক এবং স্থানীয় মানুষজনের ভূমিকা থাকা জরুরি। ওই পুকুরটি রক্ষার ব্যাপারে পুরপ্রধানকে জানাব।’’

এই বিষয়ে মেয়র-ইন-কাউন্সিল (জল) সুমিত চক্রবর্তী বলেন, ‘‘অন্যের মালিকানায় থাকা পুকুরে পুরসভা কিছু করতে পারে না। তবে আমরা পুরপ্রধানের অনুমতি নিয়ে মালিকদের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলব। তাছাড়া স্থানীয় একটি ক্লাবের সহযোগিতায় ওই পুকুরটি পরিষ্কারের কথা চলছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement