স্কুলে সচেতনতা শিবিরে গিয়ে চাইল্ড লাইনের লোকেরা জানতে পেরেছিলেন, দুই ছাত্রীর বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছে। তাদের থেকে খবর পেয়ে পত্রপাঠ মেয়ে দু’টির বাড়িতে গিয়ে বিয়ে আটকালেন পুলিশ-প্রশাসনের আধিকারিকেরা। হুগলির ধনেখালি ব্লকের বেলমুড়ির ঘটনা। শ্রীরামপুর-উত্তরপাড়া ব্লকের রিষড়া পঞ্চায়েতের মিরপুরেও দুই কিশোরীর বিয়ে বন্ধ হয়েছে পুলিশের তৎপরতায়।
প্রশাসন সূত্রের খবর, বেলমুড়ির দুই কিশোরীর এক জন নবম শ্রেণিতে পড়ে। তার বয়স চোদ্দো বছর। অপর জন বছর পনেরোর। সে ওই স্কুলেই দশম শ্রেণির ছাত্রী। সম্প্রতি ইভটিজিং-সহ মেয়েদের নানা সমস্যা নিয়ে ওই স্কুলে শিবিরের আয়োজন করেছিল হুগলি জেলা চাইল্ড লাইন। তখনই সহপাঠীদের থেকে ওই দু’জনের বিয়ের তোড়জোড়ের কথা তাঁরা জানতে পারেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে ব্লক প্রশাসন, থানা এবং পঞ্চায়েতের কর্তারা মেয়ে দু’টির বাড়িতে যান। আঠারো বছর পূর্ণ না-হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়া যে বেআইনি, সে ব্যাপারে বাড়ির লোকজনকে তাঁরা বোঝান। এর পরেই বাড়ির লোকেরা বিয়ে বন্ধ করতে রাজি হন। এ ব্যাপারে মুচলেকাও দেন তাঁরা। আর কয়েক দিনের মধ্যেই দুই ছাত্রীর বিয়ের কথা ছিল।
রিষড়া পঞ্চায়েতের বছর পনেরোর মেয়েটির বিয়ে হওয়ার কথা ছিল আজ, রবিবার। শনিবার সকালে ডানকুনি থানার পুলিশ অফিসাররা মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে বিয়ে বন্ধ করেন। অন্য দিকে, মিরপুরেই পনেরো বছরের অপর এক কিশোরীর বিয়ে ঠিক করেছিলেন বাড়ির লোকজন। স্থানীয় এক যুবকের সঙ্গে আগামী ৫ মে বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। শুক্রবার শ্রীরামপুর মহিলা থানার ওসি মনিরা বসু এবং স্থানীয় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলা এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা মেয়েটির বাড়ি যান। মেয়েটির বাবা মারা গিয়েছেন। পুলিশ তাঁর মাকে বুঝিয়ে-সুঝিয়ে নিরস্ত করেন।
পুলিশ জানায়, অষ্টম শ্রেণিতে মেয়েটি পড়া ছেড়ে দিয়েছিল। ফের সে স্কুলে যাবে বলে জানিয়েছে। আঠারো বছর না-হলে মেয়ের বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা আর করা হবে না বলে মেয়েটির অভিভাবকেরা প্রতিশ্রুতি দেন।