প্রতীকী চিত্র।
রাজ্য জুড়ে বেসরকারি হাসপাতাল ও নার্সিংহোমগুলিতে ইতিমধ্যেই চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে সতর্ক করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তার মধ্যেই রক্ত পরীক্ষার ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠল বাগনানের একটি প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের বিরুদ্ধে।
বাগনানের বোড়োর গ্রামের এক যুবকের রক্ত পরীক্ষা করে ক্রিয়েটিনিন-এর ভুল রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের বিরুদ্ধে। রবিবার কৌশিক দলপতি নামে ওই যুবক বাগনান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। জেলা পুলিশের (গ্রামীণ) এক কর্তা জানান, কৌশিকবাবুর অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলা হবে বলে। তবে তাঁদের দেওয়া রিপোর্ট যে ভুল ছিল সে কথা স্বীকার করে নিয়েছেন বাগনানের ওই প্যাথলজিক্যাল সেন্টারের মালিক অম্বরনাথ হাজরা। তিনি বলেন, ‘‘রক্ত পরীক্ষা করার সময়ে রিপোর্ট একটি খাতায় তুলে রাখা হয়। তা থেকে টাইপ করা হয়। টাইপের সময়েই কোথাও ভুল হয়েছে।’’
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বছর ছাব্বিশের কৌশিক ওয়েল্ডিংয়ের কাজ করেন। পেটের যন্ত্রণার জন্য তিনি বাগনানে এর চিকিৎসককে দেখাচ্ছিলেন। তিনি কৌশিককে রক্তের ক্রিয়েটিনিন পরীক্ষা করতে বলেন। গত ২৫ জানুয়ারি বাগনানের ওটি রোডের ওই প্যাথলজিক্যাল সেন্টার থেকে তিনি রক্ত পরীক্ষা করান। রিপোর্টে দেখা যায় ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা ৪.৯০। ওই চিকিৎসক ১৫ দিন অন্তর বাগনানে আসেন। ফলে সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে রিপোর্ট দেখাতে পারেননি কৌশিকবাবু। তাঁর অভিযোগ, প্যাথলজি সেন্টার থেকেই জানানো হয় তাঁর কিডনি খারাপ হয়ে গিয়েছে। ডায়ালিসিস করাতে হবে। এ কথা শুনে তাঁর বাবা-মা অসুস্থ হয়ে পড়েন বলে কৌশিক জানান।
চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বাগনানে এলে তাঁকে নিজের রক্তের রিপোর্ট দেখান কৌশিক। কৌশিকের দাবি, ‘‘রিপোর্ট দেখে চিকিৎসকের সন্দেহ হয়। তিনি আমাকে কলকাতার একটি বড় প্যাথলজিক্যাল সেন্টারে আর একবার রক্ত পরীক্ষা করাতে বলেন। গত ৯ ফেব্রুয়ারি সেখানে আমি রক্ত পরীক্ষা করি। সেখানকার রিপোর্টে দেখা যায় আমার রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা স্বাভাবিক।’’
এতদিন পরে তাঁরা কেন অভিযোগ জানালেন?
এই প্রশ্নের উত্তরে কৌশিক বলেন, ‘‘আমাদের সাহস হয়নি। দিন কয়েক আগে মুখ্যমন্ত্রী নার্সিংহোমগুলিকে সতর্ক করার পরে আমরা ঠিক করি এ বিষয়ে অভিযোগ জানাব। যাতে আর কেউ আমাদের অবস্থায় না পড়েন।’’ দ্বিতীয়বারের রিপোর্টটি যে ঠিক আছে সেটাই বা তিনি ধরে নিচ্ছেন কী ভাবে? উত্তরে কৌশিকবাবু বলেন, ‘‘সেই প্রশ্ন আমাদেরও। স্বাস্থ্য দফতরের অনুমোদিত দুটি প্যাথলজিক্যাল সেন্টারে গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়ে দুরকম রিপোর্ট পেলাম কেন তার তদন্ত হওয়া উচিত বলে মনে করি। সেই কারণেই অভিযোগ দায়ের করেছি।’’
জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা জানিয়েছে, এরকম কোনও অভিযোগ পেলে অবশ্যই তার তদন্ত করা হবে।