খুনের অভিযোগে উপপ্রধান বেপাত্তা
Panchayat Issue

দেড় মাসের বেশি পঞ্চায়েত অচল, ঘেরাও-বিক্ষোভ

এ দিনও প্রধান এবং সদস্যেরা ছিলেন না। পঞ্চায়েত কর্মীরা আটকে থাকেন ভিতরে। আন্দোলনকারীরা দাবি তোলেন, বিডিও এসে পঞ্চায়েত সচল করার আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা সরবে ননা। বিকেল ৪টা নাগাদ গিয়ে বিডিও তাঁদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ-ঘেরাও ওঠে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আরামবাগ শেষ আপডেট: ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৩:০৯
Share:

হরিণখোলা-২ পঞ্চায়েতে চলছে বিক্ষোভ। ছবি: সঞ্জীব ঘোষ

দলীয় কর্মীকে খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত হয়ে উপপ্রধান বেপাত্তা। প্রধান আসছেন অনিয়মিত। এলাকা উত্তপ্ত থাকায় অধিকাংশ সদস্যই আসছেন না। দেড় মাসেরও বেশি দিন ধরে সমস্ত পরিষেবা কার্যত বন্ধ আরামবাগের তৃণমূল পরিচালিত হরিণখোলা-২ পঞ্চায়েত। দুই আধিকারিকের মধ্যে পালা করে একজন পঞ্চায়েত খুলছেন কয়েক জন কর্মীকে নিয়ে। এই পরিস্থিতিতে গ্রামবাসীদের ক্ষোভ বাড়ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে এলাকার ১৬টি সংসদের মানুষ পঞ্চায়েত ঘেরাও করেন। ঘটনাস্থলে পুলিশ আসে।

Advertisement

এ দিনও প্রধান এবং সদস্যেরা ছিলেন না। পঞ্চায়েত কর্মীরা আটকে থাকেন ভিতরে। আন্দোলনকারীরা দাবি তোলেন, বিডিও এসে পঞ্চায়েত সচল করার আশ্বাস না দেওয়া পর্যন্ত তাঁরা সরবে ননা। বিকেল ৪টা নাগাদ গিয়ে বিডিও তাঁদের সমস্যা সমাধানের আশ্বাস দিলে বিক্ষোভ-ঘেরাও ওঠে।বিডিও বিশাখ ভট্টাচার্য বলেন, “আগামী সোমবার সমস্ত পঞ্চায়েত সদস্য এবং পঞ্চায়েত কর্মীদের নিয়ে আলোচনায় বসা হবে। সমস্যাগুলোর সমাধান করে পঞ্চায়েতটিকে কাজের মধ্যে ফেরাতে ব্লক থেকে একজন নোডাল অফিসারও দেওয়া হবে ওখানে।”

প্রধান জয়ন্তী প্রতিহার পঞ্চায়েতের অচলাবস্থার কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি জানান, পুরো বিষয়টা প্রশাসনের সমস্ত মহলে জানানো হয়েছে। দলও জানে। ব্লক প্রশাসন থেকে কাজের পরিবেশ তৈরির আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘এলাকায় খুনকে কেন্দ্র করে এমনিতে ডামাডোল আছে। তার উপর দলেরই একটা অংশ পঞ্চায়েতে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে দিচ্ছে না। নিজেদের লোকদের কাজ দিতে হবে জানিয়ে টেন্ডার ডাকায় বাধা দিচ্ছে, হুমকি দিচ্ছে। নিরাপত্তার অভাবে আমি মাঝেমধ্যে অফিস গিয়ে খালি কিছু শংসাপত্রে সই করে আসি।”

Advertisement

আরামবাগ ব্লক তৃণমূল সভাপতি কমল কুশারী বলেন, “ওই পঞ্চায়েতের অচলাবস্থা কাটাতে দলের তরফে চেষ্টা হচ্ছে। ব্লক প্রশাসনকেও বলা হয়েছে।” গ্রামবাসীদের অভিযোগ, এতদিন ধরে পঞ্চায়েত অচল। অথচ, প্রশাসনের তরফে কোনও বিকল্প ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। গ্রামবাসীদের পক্ষে বিরাটির বাচ্চু মিত্র বলেন, “রাস্তা, পানীয় জলের কল সারাই ইত্যাদি পরিষেবা তো দূরঅস্ত, পঞ্চায়েতের ন্যূনতম পরিষেবা অর্থাৎ, জন্ম-মৃত্যু, আয় সংক্রান্ত শংসাপত্রও মিলছে না। এলকার গোলমালের অজুহাত তুলে প্রধান এবং সদস্যেরা আসছেন না।” তারাল গ্রামের মানিক মালিকের অভিযোগ, “পঞ্চায়েতটির অচলাবস্থা কাটাতে ব্লক প্রশাসনের এতদিন কোনও হেলদোল ছিল না। স্থানীয় নেতারাও পঞ্চায়েতটি সচল করতে সরব হচ্ছেন না।”

ক্ষোভ রয়েছে পঞ্চায়েতের অন্দরেও। এক পঞ্চায়েতে কর্মীর অভিযোগ, কোনও সদস্যই অফিস আসছেন না। প্রধান মাঝেমধ্যে আসছেন। সমস্ত উন্নয়নের কাজ বন্ধ। স্থানীয় মানুষের ক্ষোভ-বিক্ষোভ তাঁদের সামলাতে হচ্ছে। পরিষেবা না-পেয়ে পঞ্চায়েতে তালা মেরে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা।গত মাসের গোড়ার দিকে ঘোলতাজপুর গ্রামে তৃণমূলের গোষ্ঠী সংঘর্ষের সময় বোমার আঘাতে মারা যান ওই দলেরই কর্মী ইসরাইল খান। খুনের অভিযোগ ওঠে উপপ্রধান শেখ কুতুবুদ্দিন-সহ দলেরই কয়েক জনের বিরুদ্ধে। তারপর থেকে এলাকায় উত্তেজনা রয়ে গিয়েছে।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement