গ্রামে রাস্তা সংস্কারে কত বরাদ্দ, এসএমএসে জানাচ্ছে পঞ্চায়েত

এলাকার ঢালাই রাস্তার কাজ কবে শুরু হবে? গীতাঞ্জলি প্রকল্পে কোন কোন উপভোক্তার টাকা বরাদ্দ হয়েছে? ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কারা কাজ পাবেন? গ্রামোন্নয়ন-সহ নানা তথ্য জানতে গ্রামবাসীদের পঞ্চায়েতে যেতে হয় বারেবারে। উলুবেড়িয়ার বসুদেবপুরে হচ্ছে ঠিক উল্টোটা।

Advertisement

মনিরুল ইসলাম

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৫ ০০:৪৭
Share:

এলাকার ঢালাই রাস্তার কাজ কবে শুরু হবে?

Advertisement

গীতাঞ্জলি প্রকল্পে কোন কোন উপভোক্তার টাকা বরাদ্দ হয়েছে?

১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে কারা কাজ পাবেন?

Advertisement

গ্রামোন্নয়ন-সহ নানা তথ্য জানতে গ্রামবাসীদের পঞ্চায়েতে যেতে হয় বারেবারে। উলুবেড়িয়ার বসুদেবপুরে হচ্ছে ঠিক উল্টোটা। গ্রামবাসীরা বাড়িতে বসেই গ্রামোন্নয়ন সংক্রান্ত যে কোনও বড় প্রকল্পের তথ্য পেয়ে যাচ্ছেন হাতের মুঠোয়। মোবাইলে। পঞ্চায়েতের পাঠানো এসএমএসে।

গত ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবসে এই পদ্ধতির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হল বসুদেবপুর পঞ্চায়েত অফিসেই। উদ্বোধন করেন পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতরের যুগ্মসচিব নীলাঞ্জনা দাশগুপ্ত। রাজ্যে এই ব্যবস্থা প্রথম বলেই পঞ্চায়েত কর্তাদের দাবি। ওই পঞ্চায়েতের তরফে এই প্রকল্পের নাম রাখা হয়েছে ‘জনসেতু’।

এই পঞ্চায়েতে তৃণমূল বিরোধী আসনে। ক্ষমতায় রয়েছে কংগ্রেস, বিজোপি এবং বামেদের মিলিত জোট। কিন্তু কেন এই ‘জনসেতু’র প্রয়োজন হল? প্রধান কংগ্রেসের অনিন্দিতা নাথ বলেন, ‘‘বিভিন্ন প্রকল্পে টাকা বরাদ্দ নিয়ে গ্রামে গুজব রটে। গ্রাম সংসদের বৈঠকে গ্রামবাসীরা নিয়মিত আসেন না বললেই চলে। ফলে, সেই সব প্রকল্প নিয়ে যাতে ধোঁয়াশা না থাকে এবং প্রকৃত সত্য যাতে মানুষ জানতে পারেন, সেই কারণেই এই উদ্যোগ।’’

পঞ্চায়েত সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন এই পরিষেবা দিতে একটি মোবাইল পরিষেবা সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। সেই চুক্তিমতো পঞ্চায়েত ওই মোবাইল পরিষেবা সংস্থাকে চার হাজার টাকা দিয়ে ২০ হাজার মানুষের কাছে ‘মেসেজ’ পাঠাতে পারবে। ওই টাকা পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে মেটানো হবে। ইতিমধ্যে প্রায় তিন হাজার গ্রামবাসীর মোবাইল নম্বর পঞ্চায়েত সংগ্রহ করেছে।

পঞ্চায়েতটি উলুবেড়িয়া-২ ব্লকের অন্তর্গত। বিডিও দেবব্রত রায় বলেন, ‘‘সত্যিই ভাল উদ্যোগ। এতটা তৃণমূল স্তরে এই ধরনের ব্যবস্থা রাজ্যের কোথাও আছে বলে জানা নেই। এর ফলে সহজেই মানুষের কাছে সংশ্লিষ্ট পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক তথ্য পৌঁছে যাবে।’’

পঞ্চায়েতের তরফে গত ৫ জুন নতুন প্রকল্পের উদ্বোধনের দিনে গ্রামবাসীদের এসএমএস করে শুভেচ্ছা-বার্তা পাঠানো হয়েছে। বৃক্ষরোপণের কথাও বলা হয়। দিন কয়েক আগে ১৫ নম্বর সংসদ এলাকায় সাংসদ তহবিলের দু’ লক্ষ টাকায় একটি কবরস্থান সংস্কারের কাজ হয়েছে। সেটাও ওই সংসদ এলাকার লোকেদের জানানো হয়েছে ‘মেসেজ’ করে। আগামী দিনে যা যা কাজ হবে তা-ও জানানো হবে বলে প্রধান জানান।

এই ব্যবস্থার সুবিধার কথা স্বীকার করেছেন ওই পঞ্চায়েতের তৃণমূল সদস্যেরাও। ১৫ নম্বর সংসদের তৃণমূল সদস্য মনিরা বেগম বলেন, ‘‘অনেকেই এই মেসেজ পেয়েছেন বলে শুনেছি। আমার মোবাইল খারাপ থাকায় আমি এসএমএস পাইনি। তবে, ব্যবস্থাটি ভালই।’’

খুশি পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দারাও। তাঁদের মধ্যে সুহাস দেব, শেখ জুবের আলিরা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েতের কাজের তথ্য সহজে জানতে পার‌ছি। আগে তো বছর কেটে গেলেও কাজের ব্যয় ও প্রকল্প লেখা বোর্ড টাঙানোই হত না। আশা করছি, পঞ্চায়েতের কাজ সম্পর্কে তথ্য পেতে আর সমস্যায় পড়তে হবে না।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement