হামলার তিন দিন পরে রবীন্দ্রনগর-কাণ্ডে চার দুষ্কৃতীকে আটক করল পুলিশ।
তবে, এত দিনেও কেন কোনও দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা গেল না, সেই প্রশ্ন উঠছে। গত বৃহস্পতিবার রবীন্দ্রনগর বাজারে দুষ্কৃতী-হামলার পরেই পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন আশ্বাস দিয়েছিলেন, সিসিটিভি-র ফুটেজে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করা গিয়েছে। শীঘ্রই তাদের গ্রেফতার করা হবে। সেখানকার ব্যবসায়ীদের তাই প্রশ্ন, সিসিটিভি-র ফুটেজে দুষ্কৃতীদের চিহ্নিত করার সুযোগ পাওয়ার পরেও পুলিশ কেন দুষ্কৃতীদের ধরতে পারছে না? আতঙ্কের পরিবেশ এখনও রয়ে যাওয়ায় ওই বাজারে ক্রেতা কমছে বলে দাবি ব্যবসায়ীদের।
গৌতম সেন (নাম পরিবর্তিত) নামে ওই বাজারের এক ব্যবসায়ীর প্রশ্ন, ‘‘এত অল্প সময়ের মধ্যে দুষ্কৃতীরা কোন আস্তানায় গা-ঢাকা দিল যে পুলিশ খুঁজেই পাচ্ছে না?’’ এলাকার এক তরুণী বলেন, ‘‘‘দুষ্কৃতীদের পুলিশ বাগে আনতে না পারায় সকলে আতঙ্কিত। কেননা, দুষ্কৃতীদের নিজেদের মধ্যে গোলমালে সাধারণ মানুষেরই ক্ষতি বেশি হচ্ছে। দোলের আনন্দটাই যেন মাটি হয়ে গিয়েছে!’’
তদন্তকারীদের দাবি, দুষ্কৃতীদের খোঁজে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। শুক্রবার রাতে চন্দননগরের এক কুখ্যাত সমাজবিরোধীর ডেরাতেও হানা দেওয়া হয়েছিল। সেখানেও অভিযুক্তদের সন্ধান মেলেনি। জেলা পুলিশের এক অফিসার জানান, তল্লাশি জারি রয়েছে। তবে, শনিবার যে চার জনকে আটক করা হয়েছে, তারা বৃহস্পতিবারের হামলায় জড়িত কিনা, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে পুলিশেরই একাংশের।
গত বৃহস্পতিবার সকালে চুঁচুড়ার রবীন্দ্রনগর বাজারে একদল সশস্ত্র দুষ্কৃতী হামলা চালায়। গুলি করে খুন করা হয় সমাজবিরোধী টোটন বিশ্বাসের দাদা তারককে। এক তরুণও গুলিতে জখম হন। বোমার আঘাতে জখম হন চার জন। এলাকা দখল করতে বিশাল দাস নামে এক দুষ্কৃতী দলবল নিয়ে ওই হামলা চালায় বলে পুলিশ সূত্রের খবর। ওই ঘটনায় শহরে পুলিশি নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। শাসক দলের দুই তাবড় নেতার ছত্রছায়ায় থাকাতেই পুলিশ হাত গুটিয়ে রয়েছে বলে বিরোধী দলগুলি অভিযোগ তোলে। তৃণমূল অভিযোগ মানেনি। ঘটনার পর দিন ওই বাজারের দোকানপাট খোলে। কিন্তু এ পর্যন্ত আগের মতো ক্রেতার ভিড় দেখা যাচ্ছে না বলে ব্যবসায়ীরা দাবি করেছেন। তাঁরা মানছেন, ক্রেতারা অন্য বাজারে ভিড় জমাচ্ছেন। তাঁদের ক্ষোভ, সে দিন পুলিশ সময়মতো এসে দুষ্কৃতীদের ধরলে এই অবস্থায় তাঁদের পড়তে হতো না।