পল্লিশ্রীর হকার্স মার্কেট।
অবৈধ ভাবে তাদের জমি দখল করে আরামবাগের পল্লিশ্রীতে হকার্স মার্কেট নির্মাণের অভিযোগ নিয়ে পুরসভার বিরুদ্ধে বছর আড়াই ধরে সরব ছিল পূর্ত দফতর। সম্প্রতি (১৪ সেপ্টেম্বর) সেই ‘বেআইনি’ নির্মাণ ১৫ দিনের মধ্যে ভেঙে ফেলার নোটিস পাঠাল তারা। পুরসভা না ভাঙলে তারাই ভেঙে দেবে বলেও জানিয়েছে পূর্ত দফতর।ইতিমধ্যে হকার্স মার্কেটের ১৮টি ঘর বিলি হয়ে গিয়েছে। ব্যবসা শুরু করেছেন কিছু ব্যবসায়ী। তাঁরা পুর কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন। মহকুমা প্রশাসনেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। পুর কর্তৃপক্ষও মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
সোমবার বিকেলে মহকুমাশাসকের অফিসে পূর্ত দফতর এবং পুর কর্তৃপক্ষকে নিয়ে একপ্রস্থ বৈঠক হয়। মহকুমাশাসক নৃপেন্দ্র সিংহ বলেন, “আরামবাগ-বর্ধমান রোড সম্প্রসারণের অনুমোদন মিলেছে। ওই কাজে বেশ কিছু অবৈধ নির্মাণ ভাঙা পড়বে। বিষয়টি প্রাথমিক ভাবে জানতে পূর্ত দফতর এবং পুরসভার সঙ্গে কথা হয়েছে। ফের সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় জমি দখলমুক্ত করা হবে।” ২০১৭ সালের নভেম্বর মাস নাগাদ ওই হকার্স মার্কেট তৈরির কাজ শুরু করে পুরসভা। তখনই আপত্তি তুলে নির্মাণ বন্ধ রাখতে বলা হলেও পুরসভা শোনেনি বলে পূর্ত দফতরের দাবি। শহরের লিঙ্ক রোড সম্প্রসারণের জন্য যে সব হকারকে উচ্ছেদ করা হয়েছিল, তাঁদেরই একাংশকে ওই হকার্স মার্কেটে পুনর্বাসন দেওয়া হয়। মহকুমা পূর্ত দফতরের (সাধারণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড়ের অভিযোগ, “দফতরের কোন অনুমতি ছাড়াই ওই নির্মাণ হয়। তখন রাস্তা সম্প্রসারণের সম্ভাবনার কথাও বলা হয়েছিল। পুরসভা কর্ণপাত করেনি। এখন রাস্তা সম্প্রসারণে অনুমোদন মিলেছে। আমরা ওই হকার মার্কেট ছাড়াও সমস্ত অবৈধ নির্মাণ ভেঙে ফেলার নোটিস দিয়েছি।”
পক্ষান্তরে, পুরসভার তৎকালীন চেয়ারম্যান তথা বর্তমান প্রশাসক স্বপন নন্দী বলেন, “রাজ্যস্তরে যোগাযোগ করেই ওই মার্কেট বানানো হয়। হকারদের পেটের ভাত মারা যাবে না বলে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল। নির্মাণটি যে জায়গায় আছে, তাতে রাস্তা চার লেনে সম্প্রসারিত করতে সমস্যা হবে না। মার্কেট রেখেই রাস্তা সম্প্রসারণ হোক।” উচ্ছেদের নোটিস পেয়ে হকার্স মার্কেটের হকাররা দিশাহারা। বর্তমান পরিস্থিতিতে কী করবেন, ভেবে পাচ্ছেন না তাঁরা।