বাড়তি ধান বেশি নয়, বার্তা মন্ত্রীর

সোমবার রাজ্যের চালকল-মালিকদের সঙ্গে বৈঠকেও সরকারের ওই মনোভাবের কথা তিনি জানিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:২২
Share:

খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

সরকারি শিবিরে চাষিদের থেকে কুইন্টালপ্রতি ধানের সঙ্গে এক-দেড় কেজি বাড়তি যাতে না-নেওয়া হয়, সে ব্যাপারে আগেই চালকল-মালিকদের সতর্ক করেছিলেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। শনিবার উলুবেড়িয়া-১ ব্লক কিসান মান্ডিতে চাষিদের কাছ থেকে ধান কেনা এবং চেক বিলির কাজ সরেজমিনে দেখতে এসে ফের একবার সেই সতর্কবার্তা শোনালেন খাদ্যমন্ত্রী। কাল, সোমবার রাজ্যের চালকল-মালিকদের সঙ্গে বৈঠকেও সরকারের ওই মনোভাবের কথা তিনি জানিয়ে দেবেন বলে জানিয়েছেন জ্যোতিপ্রিয়বাবু।

Advertisement

মন্ত্রী বলেন, ‘‘আমিও চাষির ঘরের ছেলে। ধান বিক্রি করে চাষিরা যদি উপযুক্ত দাম না-পান, তার যন্ত্রণা জানি। সরকার বাড়তি ধান নেওয়ার বিরোধী। তবু তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেওয়া হয়, ধুলোর জন্য কিছু ধান বাড়তি দিতে হবে, তা যেন কুইন্টালপ্রতি এক-দেড় কেজির বেশি না-হয়।’’

এ বার সহায়ক মূল্যে (কুইন্টালপ্রতি ১৭৭০ টাকা) সরকারি ভাবে ধান কেনা শুরু হওয়ার পর থেকেই রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের চাষিরা ক্ষোভ প্রকাশ করছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট পরিমাণের সঙ্গে বাড়তি পাঁচ-সাত কেজি ধান দিতে হচ্ছে চালকল-মালিকদের। এর পিছনে চালকল-মালিকদের যুক্তি, ধানে ধুলো, খোসা থাকে। অনেক ক্ষেত্রে ধান ভিজেও থাকে। তার ফলে, ওজন বেড়ে যায়। সরকারকে এক কুইন্টাল ধানের বিনিময়ে চাল দিতে হয় ৬৮ কিলোগ্রাম করে। অথচ, তাঁরা এক কুইন্টাল ধান থেকে গড়ে ৬২ কেজি চাল বের করতে পারেন। ফলে, চাষিদের থেকে বাড়তি ধান নেওয়া ছাড়া উপায় থাকে না। এ নিয়ে দু’পক্ষের চাপান-উতোরের জেরে শ্যামপুর-১ ও ২ ব্লকে প্রায় এক সপ্তাহ ধান কেনা বন্ধ ছিল।

Advertisement

শনিবার থেকে চেকের বিনিময়ে চাষিদের কাছ থেকে সরাসরি ধান কেনা শুরু করেছে খাদ্য দফতর। সেই ব্যবস্থার তদারক করতেই হাওড়ায় আসেন খাদ্যমন্ত্রী। উলুবেড়িয়া-১ ব্লক কিসান মান্ডিতে তাঁর কাছে ক্ষোভ প্রকাশ করেন চাষিরা। তারপরেই মন্ত্রী চালকল-মালিকদের বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। কিছু চালকল-মালিক সরকারি নীতির কথা তুললেও খাদ্যমন্ত্রী পাল্টা বলেন, ‘‘কত ধানের বিনিময়ে কত চাল দিতে হবে তা ঠিক করে কেন্দ্র। কিন্তু চাষিদের বঞ্চিত করা হলে তা মানব না।’’

ধান কেনার ক্ষেত্রে সরকার আর লক্ষ্যমাত্রা রাখছে না বলেও জানান খাদ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘’৩১ মার্চ পর্যন্ত আমরা সর্বোচ্চ ধান তুলে নেব। নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বাইরের রাজ্যে চাল পাঠাব। বহু রাজ্য থেকে আমাদের কাছে চাল দেওয়ার অনুরোধ আসছে।’’ চাষিদের চাহিদা মেটাতে রাজ্য জুড়ে খাদ্য দফতর সরাসরি আরও দু’হাজার অতিরিক্ত ধান ক্রয় কেন্দ্র খুলবে বলেও খাদ্যমন্ত্রী জানান। এ দিন বাগনান-১ এবং আমতা-১ ব্লক কিসান মান্ডিতেও যান তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement