প্রতীকী ছবি।
১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে গুণমান এবং স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ‘সিকিওর’ সফ্টওয়্যার চালু হল হুগলিতে। পরিকল্পনা তৈরি থেকে কাজের মজুরি প্রদান— প্রকল্পের প্রতিটি ধাপের কার্যকলাপ নথিভুক্ত করতে হবে ওই সফ্টওয়্যারে।
যেনতেন প্রকারে ওই প্রকল্পে শ্রমদিবস তৈরি কিংবা কোদাল ধরলেই পুরো মজুরি পাওয়ার যে রীতি তৈরি করে নিয়েছিল পঞ্চায়েতগুলি তা পুরোপুরি বন্ধ করতেই কেন্দ্রীয় সরকারের এই ব্যবস্থাপনা বলে জানিয়েছে জেলা পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর। জেলা প্রশাসনের এক কর্তার বক্তব্য, “১০০ দিন কাজ প্রকল্পে দুর্নীতির আর কোন ছিদ্রও থাকছে না। স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি করে না, এমন কাজ আর হাতে নেওয়া যাবে না।”
গত ২৮ জুন রাজ্য পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে পাঠানো নতুন নির্দেশিকা সে দিনই জেলা প্রশাসন থেকে সব ব্লক অফিস এবং পঞ্চায়েতে পাঠানো হয়। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে শ্রম বাজেট এবং বার্ষিক কর্ম পরিকল্পনা জেলা পরিষদে অনুমোদনের পর প্রশাসনিক এবং কারিগরি অনুমোদন হবে ‘সিকিওর’ (সফ্টওয়্যার ফর এসটিমেট ক্যালকুলেশন ইউজিং রুরাল রেটস ফর এমপ্লয়মেন্ট)-এ। প্রকল্পের যাবতীয় তথ্য, যেমন কাজ শুরু করার আগে অঙ্কন, অবস্থান মানচিত্র, কাজের ক্ষেত্রের ছবি, পরিকল্পনা, নির্দিষ্ট তারিখ, মোট উপাদান-খরচ সহ ব্যবহৃত সামগ্রীর তালিকা, মোট দক্ষ এবং অদক্ষ শ্রমিকের হিসাব, তাঁদের মজুরি ইত্যাদি কাজ সম্পন্ন করার প্রতিটি কার্যকলাপের হিসাব অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। কোনও কাজ ‘সিকিওর’-এর বাইরে করা যাবেনা।
সফ্টওয়্যারটি চালু হওয়াও বিডিওদের অনেকেই মনে করছেন, প্রকল্পে দুর্নীতি রোখার জন্য এটা জরুরি ছিল। তাঁদের অভিযোগ, পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতে অনেক সময় স্থানীয় চাপে প্রকল্পের বিধানের বাইরে কাজ হচ্ছিল। ২০ টাকার মাটি কেটে পুরো মজুরির (১৯১ টাকা) দাবিতে প্রচুর অশান্তিও হচ্ছিল। অনেক কাজ আগের বছরে চালু হয়েছে দেখিয়ে পরের বছর একই কাজ দ্বিতীয়বারও করা হচ্ছিল। নতুন নিয়মে সেটাও কড়া ভাবে নিষিদ্ধ হয়েছে বলে বিডিও-রা জানিয়েছেন।
তবে এই ব্যবস্থাপনা নিয়ে পঞ্চায়েতগুলিতে ক্ষোভ আছে। প্রধানদের অনেকের অভিযোগ, স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি-সহ এই ব্যবস্থাপনায় কাজের ক্ষেত্র তলানিতে ঠেকেছে। আবার কাজের মাপ অনুযায়ী মজুরি বাধ্যতামূলক করে দেওয়ায় শ্রমিকদেরও অনীহা দেখা যাচ্ছে। প্রধানরা জানিয়েছেন, সবচেয়ে অসুবিধা হয়েছে, এ বার আর আগের বছরের চালু কাজ আর পরের বছর করা যাবে না। ২০ কিলোমিটার কোনও রাস্তার কাজ ১০ কিলোমিটার হলে বাকি কাজ আর পরের বছর করা যাবে না। তিন-চার বছর পর ফের বাকি কাজের পরিকল্পনা করতে হবে।