জালে রমেশের ‘ডানহাত’ নেপু

দীর্ঘদিন ধরে সে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালাচ্ছিল। অবশেষে রবিবার সন্ধ্যায় বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার টেস্টিং রোড থেকে এলাকার ‘ত্রাস’ রমেশ মাহাতোর ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত নেপু গিরিকে গ্রেফতার করল উত্তরপাড়া থানার পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উত্তরপাড়া শেষ আপডেট: ২৫ অগস্ট ২০১৫ ০০:২৫
Share:

ধৃত নেপু।—নিজস্ব চিত্র।

দীর্ঘদিন ধরে সে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালাচ্ছিল। অবশেষে রবিবার সন্ধ্যায় বন্ধ হিন্দমোটর কারখানার টেস্টিং রোড থেকে এলাকার ‘ত্রাস’ রমেশ মাহাতোর ‘ডান হাত’ হিসেবে পরিচিত নেপু গিরিকে গ্রেফতার করল উত্তরপাড়া থানার পুলিশ।

Advertisement

পুলিশ জানায়, খুন-ডাকাতি-তোলাবাজিতে সিদ্ধহস্ত মধ্য ত্রিশের যুবক নেপুর বিরুদ্ধে অন্তত ১৭টি মামলা রয়েছে। হুগলির উত্তরপাড়া, রিষড়া, শ্রীরামপুর ছড়াও হাওড়ার বালি, নিশ্চিন্দা, মালিপাঁচঘড়া এবং বর্ধমান জেলার জামালপুর থানাতেও তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে। ইদানীং তোলাবাজির সঙ্গেই জোর করে জমি দখল করারও অভিযোগ উঠছিল নেপুর বিরুদ্ধে। গ্রেফতারের সময় তার কাছ থেকে কয়েক কেজি গাঁজা মিলেছে। ধৃতকে সোমবার শ্রীরামপুর মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাকে তিন দিন পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।

হুগলি জেলা পুলিশের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘নেপু গ্রেফতার না হওয়ায় এতদিন অনেক বকেয়া মামলার কাজ সে ভাবে করা যাচ্ছিল না। এখন সেই সব মামলার কাজে গতি আসবে।’’

Advertisement

নেপু আদতে নেপালি যুবক। তার বাবা এখানে চলে আসায় সে-ও কোন্নগরের ধর্মডাঙ্গা এলাকায় অল্প বয়স থেকেই পাকাপাকি ভাবে থাকতে শুরু করে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এক সময় হুগলি ও হাওড়া জেলার অপরাধ জগতের ‘বড় মাথা’ হুব্বা শ্যামলের হাত ধরে নেপুর উত্থান। পরে সে অপরাধ জগতের আর এক মাথা রমেশ মাহাতোর ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়ে। রমেশ-শ্যামলের তালমিলের সময়ে নেপু গোপনে অন্য ছক কষাও শুরু করেছিল। কিন্তু পরে সে রমেশের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গোপনে শ্যামলকে সরিয়ে দেওয়ার ছক কষে। কয়েক বছর আগে তিন দিন নিখোঁজ থাকার পর বৈদ্যবাটি খাল থেকে পুলিশ শ্যামলের দেহ উদ্ধার করে।

শ্যামল খুনের মামলাতেই রাজ্য গোয়েন্দা পুলিশ কয়েক বছর আগে সল্টলেকের একটি সিনেমা হল থেকে নেপু এবং তার দলবলকে ধরে। অন্তত চার বছর হাজতবাস করতে হয় নেপুকে। মাস সাতেক আগে সে জামিন পায়। কিন্তু তার পরে অপরাধ থেকে সরেনি। খুন, অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা, ডাকাতির পরিকল্পনা ছাড়াও তার বিরুদ্ধে তোলাবাজির প্রচুর অভিযোগ উঠতে থাকে।

তদন্তকারী অফিসারেরা জানিয়েছেন, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই নেপুর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে ভয় পান ভুক্তভোগীরা। তার ফলে, সাক্ষীর অভাবে ওই সব মামলা শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় না। নেপুকে দীর্ঘদিন ধরেই গ্রেফতারের ছক কষা হচ্ছিল। কিন্তু প্রতিবারই পুলিশের জাল কেটে সে পালিয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত রবিবার একটি সূত্রে খবর পেয়ে নেপুকে ধরতে সক্ষম হন উত্তরপাড়া থানার আইসি মধুসূদন মুখোপাধ্যায়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement