দগ্ধ: পুড়ে যাওয়া পোশাক ও আসবাব। নিজস্ব চিত্র
গভীর রাতে গোঘাটের এক তৃণমূল নেত্রীর ঘরে কেরোসিন ঢেলে তাঁকে সপরিবারে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল। রবিবার গোঘাটের ইদলবাটি গ্রামের বাসিন্দা, অণিমা কাটারি নামে ওই তৃণমূল নেত্রীর চেঁচামেচিতে পড়শিরাই এসে আগুন নেভান। অণিমা গোঘাট-২ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি।
ওই নেত্রী পুলিশে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করলেও তা কারও নামে করেননি। তবে তিনি বলেন, ‘‘আমি নিশ্চিত, সিপিএম থেকে আমাদের দলে আসা কিছু লোক বিজেপিতে গিয়ে আমাকে সপরিবারে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছিল। চোখে না-দেখায় নির্দিষ্ট কারও নামে অভিযোগ জানাতে পরিনি। পুলিশ তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করুক।” পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু হয়েছে। সিপিএম এবং বিজেপি অভিযোগ অস্বীকার করে ঘটনার পিছনে তৃণমূলেরই অন্তর্দ্বন্দ্বকেই দায়ী করেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, অণিমার স্বামী তৃণমূলের অঞ্চল নেতা বনমালি কাটারি রবিবার রাতে বাড়ি ছিলেন না। অণিমা তিন মেয়েকে নিয়ে ঘুমোচ্ছিলন। রাত ১২টা নাগাদ বিকট শব্দে তাঁর ঘুম ভাঙে অনিমার। বাইরে বেরিয়ে তিনি দেখেন, দাওয়ার এক কোণে আগুন জ্বলছে। সেখানে অণিমার অফিস ছিল। সেই অফিস এবং কিছু আসবাবপত্র ও পোশাক পুড়ে যায়। রাতেই ঘটনাস্থলে পুলিশ যায়।
অনিমার কথায়, “দাওয়ার বাল্বগুলো ফাটছিল। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। মোবাইলের আলো জ্বেলে বাইরে বেরিয়ে দেখি দাওয়ার এক কোণে আউন জ্বলছে। ধোঁয়ায় ঘর ভরে যাচ্ছে। কেরোসিনের গন্ধ পাচ্ছিলাম। মেয়েদের ঘর থেকে বের করে চেঁচামেচি করি। পড়শিরা পুকুর থেকে জল এনে আগুন নেভান।”
সোমবার সকালে ঘটনাস্থলে যান গোঘাটের তৃণমূল বিধায়ক মানস মজুমদার। তিনি বলেন, ‘‘সকালেও কেরোসিনের গন্ধ পাচ্ছিলাম। অণিমা এবং বনমালির মতো দলের দুই সম্পদকে খুনের চেষ্টা হয়েছে।’’ সিপিএম-বিজেপি যৌথ ভাবে চক্রান্ত করে এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, এই অভিযোগ তুলেছেন বিধায়কও দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন তিনি।
অভিযোগ উড়িয়ে সিপিএমের গোঘাটের নেতা তথা জেলা কমিটির সদস্য অরুণ পাত্রের দাবি, “ঘরে আগুন লাগানোর সংস্কৃতি আমাদের দলে নেই। আমাদের সাধারণ সমর্থকরা কে কখন কোন দলে যোগ দিচ্ছেন তা-ও জানা নেই। ঘটনার নিন্দা করছি। ওঁদের দলের অন্দরেই চাওয়া-পাওয়া নিয়ে সমস্যা থেকে ওই ঘটনা হতে পারে।” বিজেপির আরামবাগ সাংগঠনিক জেলা সভাপতি বিমান ঘোষেরও দাবি, “ঘটনার সঙ্গে আমাদের দলের কোনও যোগ নেই। ওখানে তৃণমূলের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারা নিয়ে প্রায়ই অশান্তি হচ্ছে। সে রকমই কিছু হয়ে
থাকতে পারে।”