উদ্যোগ: এই মহকুমা হাসপাতালেই হবে মেডিক্যাল কলেজ। নিজস্ব চিত্র
গত কয়েক মাস ধরেই উলুবেড়িয়া আশা করছিল শহরে গ়ড়ে উঠবে একটি সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতাল। কথা ছিল মহকুমা হাসপাতালটিকেই সুপার স্পেশ্যালিটিতে উন্নীত করা হবে। এক ধাপ এগিয়ে চিঠি এসেছে হাও়ড়ার জেলাশাসকের কাছে। প্রেরক রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিভাগ। বলা হয়েছে ২০ একর জমির ব্যবস্থা করতে হবে— মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল গড়ার জন্য।
গত মঙ্গলবার ওই চিঠি এসেছে বলে জানা গিয়েছে প্রশাসন সূত্রে। সেই অনুযায়ী যুদ্ধকালীন তৎপরতায় শুরু হয়েছে জমি খোঁজার কাজও। জমি নিয়ে তেমন কোনও সমস্যাও হবে না বলে মনে করছেন প্রশাসনিক শীর্ষ কর্তারা।
রাজ্যের স্বাস্থ্য-শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, কেন্দ্রের গাইড লাইন মেনেই তৈরি হবে প্রস্তাবিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালটি। এ জন্য বেশির ভাগ টাকা কেন্দ্রই দেবে। কেন্দ্রীয় নিয়ম অনুযায়ী, তিনটি লোকসভাকেন্দ্র মিলিয়ে একটি নতুন মেডিক্যাল কলেজ গড়া যায়। হাওড়া সদর, উলুবেড়িয়া এবং শ্রীরামপুর— তিনটি লোকসভা কেন্দ্রের মাঝখানে পড়ে উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল। শ্রীরামপুর হুগলির মধ্যে হলেও জগৎবল্লভপুর এবং ডোমজুড়ের অনেকটা অংশই এই লোকসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত।
সুপার স্পেশ্যালিটিতে উন্নীতকরণের কাজ এরই মধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে। এ বার এক ধাপ এগিয়ে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল হিসাবে পরিচিত হবে। সে জন্য জমির কথা ভাবতে শুরু করেছে প্রশাসন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য প্রয়োজন ২০ একর জমি। রাজ্য স্বাস্থ্য-শিক্ষা বিভাগের এক কর্তা জানান, ‘মেডিক্যাল কাউন্সিল অব ইন্ডিয়া’ (এমসিআই)-এর নিয়ম মেনেই এই পরিমাণ জমি চাওয়া হচ্ছে। তবে একবারে, একই জায়গায় এতটা জমি না হলেও চলবে। ১০ একর করে দু’জায়গাতেও জমি পেলে চলবে। কিন্তু দু’টি জায়গার দূরত্ব হতে হবে ১০ কিলোমিটারের মধ্যে।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, উলুবেড়িয়া মহকুমা হাসপাতাল চত্বরেই ১০ একর জমি পাওয়া যাবে। বাকি ১০ একরের জন্য নিমদিঘিতে ইএসআই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে। ইএসআই হাসপাতাল কেন্দ্রীয় শ্রম দফতরের আওতাধীন, ফলে তাদের কাছেই আবেদন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ওই কর্তা জানিয়েছেন।
অবস্থানগত কারণেই গুরুত্বপূর্ণ উলুবেড়িয়া হাসপাতাল। হাওড়া, হুগলি এবং দুই মেদিনীপুরের মানুষ আসেন এই হাসপাতালে। তার উপর দক্ষিণ-পূর্ব রেল এবং ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের (মুম্বই রোড) খুব কাছে হওয়ায় দুর্ঘটনায় জখম রোগীদের ভিড় লেগেই থাকে। সে জন্যই এক সময়ে হাসপাতালে ট্রমা কেয়ার ইউনিট গড়ার কথা হয়েছিল। পরে সেই সিদ্ধান্ত বাতিল করে এটিকে সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে উন্নীত করার সিদ্ধান্ত হয়। শেষ পর্যন্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গড়া হলে এলাকার মানুষ আরও উন্নত চিকিৎসার সুযোগ পাবেন বলেও আশা রাজ্য শিক্ষা-স্বাস্থ্য বিভাগের।