ফেরা: মুম্বই থেকে পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সোমবার রাতে ট্রেন এল ডানকুনি স্টেশনে। ছবি: দীপঙ্কর দে
পরিযায়ী শ্রমিকদেরও কাজ দিতে হবে। তাই হুগলিতে ১০০ দিনের কাজের লক্ষ্যমাত্রা দ্বিগুণ করার ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন জেলা প্রশাসনের আধিকারিকেরা। কিন্তু তা হলেও কাজের ক্ষেত্র না বাড়লে লক্ষ্যমাত্রা ছোঁয়া যাবে কিনা, তা নিয়ে এখন থেকেই সংশয় প্রকাশ করেছেন প্রকল্পের ব্লক এবং পঞ্চায়েত আধিকারিকরা।
হুগলির ২০৭টি পঞ্চায়েতে এখনও পর্যন্ত মোট জবকার্ড আছে ৭ লক্ষ ৩১ হাজার ৩৭০টি পরিবারের। চলতি অর্থবর্ষে কাজের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৮৯ হাজার ৫৪৬ শ্রমদিবসের (এক জন শ্রমিক এক দিনে যতটা কাজ করেন, সেটাই একটি শ্রমদিবস)। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে কাজের লক্ষমাত্রা দ্বিগুণ করার চেষ্টা হবে জানিয়ে অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রদীপ আচার্য বলেন, রাজ্য স্তর থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশিকার অপেক্ষায় আছি আমরা। ইতিমধ্যে জেলাশাসক মে মাস পর্যন্ত কাজের লক্ষ্যমাত্রা ১৬ লক্ষ ২১ হাজার ৯৪০ শ্রমদিবস থেকে বাড়িয়ে ৩০ লক্ষ করে দিয়েছেন। সোমবার পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৯৩ হাজার ৬৪৯টি শ্রমদিবসের কাজ হয়েছে।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, করোনা-আবহে যে সব পরিযায়ী শ্রমিক জেলায় ফিরছেন এবং যাঁদের জবকার্ড নেই, তাঁদের দ্রুত তা করে দেওয়ার প্রক্রিয়াও শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এত সংখ্যক শ্রমিককে কোন কাজে লাগানো হবে, তা নিয়ে কিছটা দিশাহারা ব্লক এবং পঞ্চায়েত আধিকারিকেরা।
মাটি কাটা, পুকুরের পানা পরিষ্কার, গ্রামে বছরে দু’বার করে নিকাশি নালা তৈরি, খেলার মাঠের নুড়ি বাছাই, মোরাম রাস্তার ঘাস পরিষ্কার ইত্যাদি বহু কাজে আগে বহু শ্রমিককে নিয়োগ করা হয়েছে। কিন্তু ওই সব কাজের অনুমোদন নেই জানিয়ে কেন্দ্র তা বন্ধ করে দেয় বছর দুয়েক আগে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সাধারণ শ্রমিকদের সঙ্গে পরিযায়ী শ্রমিকদেরও প্রকল্পে নিযুক্ত করতে গেলে ওই সব কাজের ক্ষেত্রে আর আগল রাখা চলবে না বলে মনে করছেন বিভিন্ন ব্লক ও পঞ্চায়েত আধিকারিকরা। ওই সব কাজের ক্ষেত্র ফের চালুরও দাবি তুলেছেন তাঁরা। না হলে কাজ দেওয়া সমস্যা হবে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা। তাঁরা জানিয়েছেন, এই প্রকল্পে স্থায়ী সম্পদ সৃষ্টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) প্রদীপবাবু বলেন, ‘‘কাজের ক্ষেত্র খুব একটা কমেনি। খাল খনন, বাঁধ সংরক্ষণে ভেটিভার ঘাস লাগানো হবে। ব্যক্তিগত মালিকানার পুকুর সংস্কার এখন না হলেও, ব্যক্তি-মালিকানার নতুন পুকুর খনন হবে। এ ছাড়াও বৃক্ষরোপণ সংক্রান্ত সবুজমালা প্রকল্প এবং নার্সারি তৈরিতে বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।”