জয়শ্রী টেক্সটাইলস। ফাইল চিত্র।
কারখানায় অচলাবস্থা চলাকালীন সভা করে জয়শ্রী টেক্সটাইলস কর্তৃপক্ষকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ দুই বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাতে বিজয় পান্ডে এবং মনোজ সিংহ নামে ওই দুই বিজেপি নেতাকে গ্রেফতার করা হয়। বুধবার ধৃতদের শ্রীরামপুর আদালতে পাঠানো হলে বিচারক পাঁচ দিন পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন। ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার সকালে জিটি রোড অবরোধ করে বিজেপি।
গত ৩১ মে রিষড়ায় বিড়লা গোষ্ঠীর ওই কারখানার একটি বিভাগে শ্রমিকদের সঙ্গে এক সুপারভাইজারের গোলমাল হয়। কর্তৃপক্ষ পাঁচ শ্রমিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন। মারধরের অভিযোগে এক শ্রমিক গ্রেফতার হন। তার প্রতিবাদে গত ৪ জুন থেকে শ্রমিকরা ধর্মঘট শুরু করেন। ওই দিন আরও কিছু শ্রমিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেন কর্তৃপক্ষ। এই দু’দিনের ঘটনায় যাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে তাঁদের এবং গত বছর বহিষ্কৃত নয় শ্রমিককে কাজে ফেরানোর দাবি তোলেন শ্রমিকেরা।
বিষয়টি নিয়ে সম্প্রতি কারখানার অদূরে পথসভা করেন বিজেপির স্থানীয় নেতারা। সব শ্রমিককে কাজে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবি তোলা হয়। অভিযোগ, শুধু দাবিতেই সীমাবদ্ধ না থেকে সভা থেকে কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে চড়া সুরে হুমকি দেওয়া হয়। এক পদস্থ কর্তার নাম করে ‘দেখে নেওয়া’র হুমকি দেওয়া হয়। কর্তৃপক্ষের অন্যান্য লোকজনও ছাড় পাবেন না, এমন হুমকিও দেন আন্দোলনকারীরা।
পুলিশ সূত্রের খবর, সভায় বিজেপির এক নেতার হুমকি-ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। কারখানা কর্তৃপক্ষের তরফে শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। এমন ‘প্ররোচনা’র জেরে কারখানায় অশান্তির আবহ ছড়াচ্ছে বলে মালিকপক্ষের অভিযোগ। বিষয়টি তাঁদের তরফে প্রশাসনিক মহলে জানানো হয়। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কানেও বিষয়টি পৌঁছয়। ইতিমধ্যে সোমবার কারখানায় ‘লক আউট’-এর বিজ্ঞপ্তি ঝুলিয়ে দেন কর্তৃপক্ষ। হুমকির অভিযোগ নিয়ে তৎপর হন চন্দননগর কমিশনারেটের আধিকারিকরা।
দলের দুই নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে বুধবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ রিষড়ার ওয়েলিংটন চটকলের কাছে জিটি রোড অবরোধ করেন বিজেপির কিছু কর্মী-সমর্থক। ঘণ্টাখানেক অবরোধ চলে। রিষড়ার বিজেপি নেতা বিজয় উপাধ্যায় বলেন, ‘‘মালিকপক্ষ শ্রমিকদের উপর জুলুম করেছে। তাই আমরা শ্রমিকদের জন্য আন্দোলন করেছি। কোনও হুমকি দেওয়া হয়নি। মিথ্যা অভিযোগে দু’জনকে গ্রেফতার করা হল। এ ভাবে কিন্তু আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।’’’