বেহাল: সারানো হবে এই রাস্তাই। নিজস্ব চিত্র
মাস পাঁচেক অর্থ দফতরের আটকে থাকার পর অবশেষে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে গোঘাটের ভিকদাস থেকে কোটা পর্যন্ত প্রায় ১১ কিমি রাস্তার আমূল সংস্কারে ছাড়পত্র মিলল। বুধবার নবান্ন থেকে সেই সংক্রান্ত চিঠিও পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে জেলা পূর্ত দফতরে। জেলা পূর্ত দফতরের এগজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার প্রণব বিশ্বাস বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা পাওয়া গেছে। পুজোর আগে কাজ শুরু করতে পারব।”
পূর্ত দফতর সূত্রে জানা যায়, ভিকদাস থেকে কোটা ১১.১৮ কিলোমিটার রাস্তার আমূল সংস্কারে দু’দফা দরপত্র বাতিল হয়েছে। গত এপ্রিল মাস নাগাদ তৃতীয় দফার দরপত্রে সাড়া মিললেও বিপুল অর্থ ব্যয়ের অনুমোদন আটকে ছিল অর্থ দফতরে। এ দিকে রাস্তাটি সংস্কারের দাবিতে এলাকার ১০-১২টি গ্রামের মানুষ বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন প্রায়ই। ‘দিদিকে বলো’তে একাধিকবার ফোন করে সাড়া না পেয়ে রাস্তায় ধান রোপণ এবং মাছ ছেড়ে প্রতিবাদ বিক্ষোভও করেন।
ক্ষোভ-বিক্ষোভের আঁচ পড়ে গোঘাট বিধায়ক মানস মজুমদারের কাছেও। বিধায়ক বলেন, “রাস্তাটিতে প্রায় তিন মাস বাস চলাচল বন্ধ এবং তার জেরে মানুষের পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত জানিয়ে অর্থমন্ত্রীকে গত ৩ সেপ্টেম্বর চিঠি লিখি। মুখ্যমন্ত্রীর নজরেও আনি। শেষমেষ অর্থ দফতরের অনুমোদন মিলল।”
রাস্তাটি ছিল জেলা পরিষদের। গত ১৯৮৯ সালে জেলা পরিষদ রাস্তাটি নির্মাণের পর আমূল সংস্কারের মত তহবিল ছিল না। ফলে বছরের অধিকাংশ সময়েই রুটের ৪টি বাস চলাচল বন্ধ থাকে। খানাখন্দে ভরা রাস্তাটির পিচের চিহ্ন নেই। কোথাও কোথাও হাঁটু-গর্ত। স্থানীয় কোটা, বেলেকুসমা, জোতমহব্বত, দহিয়াকাঁদা, নকুন্ডা, দেওয়ানচক, কুলিয়া ইত্যাদি খান ষোল গ্রামের ছাত্র-ছাত্রী, রোগী সহ কয়েক হাজার মানুষকে ওই রাস্তাটি দিয়েই যাতায়াত করতে হয়। তাছাড়াও পশ্চিম মেদিনীপুরের হাজিপুর, মাংরুল ইত্যাদি এলাকার সঙ্গেও যোগাযোগের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা সেটি।
এই পরিস্থিতিতে রাস্তাটি ২০১৭ সালের শেষ দিকে পূর্ত দফতরকে হস্তান্তর করে জেলা পরিষদ। মহকমা পূর্ত দফতর (নির্মাণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড় বলেন, “রাস্তাটি সংস্কারের জন্য ২৫ কোটি ১৪ লক্ষ ৭৬ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। রাস্তা নির্মাণের সময়সীমা ৪৫০ দিন।” অতীতের সাড়ে ৩ মিটার চওড়া বেড়ে হচ্ছে সাড়ে ৫ মিটার। ২টি সেতু এবং ৩০টি কার্লভার্ট করা হবেও বলে পূর্ত দফতর সূত্রে খবর।