প্রতীকী ছবি
করোনা আতঙ্কে অ্যাম্বুল্যান্স মিলছে না কোথাও। কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে অ্যাম্বুল্যান্স জোগাড় করতে হিমসিম খেতে হচ্ছে পরিবারের লোকজনকে। অভিযোগ, সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পাড়ার ক্লাব— করোনা সংক্রমণের ভয়ে অ্যাম্বুল্যান্স দিতে রাজি হচ্ছেন না কেউই। শহরের ১৪ লক্ষ মানুষের এখন তাই ভরসা হাওড়া পুরসভার মাত্র ১২টি অ্যাম্বুল্যান্স। ২৪ ঘণ্টা ধরে পরিষেবা দিয়েও তাই পরিস্থিতি সামলাতে পারছে না পুরসভাও। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন জায়গায় অ্যাম্বুল্যান্স চেয়ে আবেদন করেছেন পুরকর্তারা। কিন্তু কোনও ফল হয়নি।
প্রশাসন সূত্রের খবর, হাওড়ায় বর্তমানে প্রতিদিন গড়ে ৩০০ জন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে সিংহভাগ রোগীই রয়েছেন হাওড়া পুর এলাকায়। এই পরিস্থিতিতে অ্যাম্বুল্যান্সের চাহিদা আকাশ ছুঁয়েছে। করোনার উপসর্গ থাকা রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে প্রতি মুহূর্তে দরকার অ্যাম্বুল্যান্সের। তেমনই, অন্য রোগে আক্রান্তদেরও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে। কিন্তু কোথায় এত অ্যাম্বুল্যান্স?
হাওড়া পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, পুরসভার নিজস্ব অ্যাম্বুল্যান্স আছে মাত্র ৩টি। সেগুলি ২৪ ঘণ্টা পরিষেবা দেয়। সম্প্রতি জেলা স্বাস্থ্য দফতর ২০২ হেল্পলাইনের আওতায় থাকা আরও ৮টি অ্যাম্বুল্যান্স পুরসভাকে শুধুমাত্র দিনের বেলায় ব্যবহার করতে দিয়েছে। পাশাপাশি, পুলিশের একটি কিরণ অ্যাম্বুল্যান্স মেলায় পুরসভার মোট অ্যাম্বুল্যান্সের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২টি।
হাওড়া পুরসভার এক পদস্থ কর্তা জানান, এই ১২টি ছাড়া হাওড়া জেলা হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্স ৪টি, সত্যবালা আই ডি হাসপাতালের ১টি, ডুমুরজলা কোয়রান্টিন কেন্দ্রের ১টি ও দক্ষিণ হাওড়া স্টেট হাসপাতালের ১টি অ্যাম্বুল্যান্স আছে। এর পাশাপাশি, পুরসভার ১০টি বরোর অধীনে আছে ১টি করে অ্যাম্বুল্যান্স। ওই অ্যাম্বুল্যান্সগুলি অন্য রোগে আক্রান্তদের পরিষেবা দেয়।
পুরসভার ওই কর্তা বলেন, ‘‘সবার কাছে অ্যাম্বুল্যান্স থাকলেও কোভিড রোগীদের ক্ষেত্রে কেউ পরিষেবা দিতে চাইছেন না। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে, সব দায় যেন একমাত্র পুরসভার। কিন্তু এত রোগীর জন্য ১২টি অ্যাম্বুল্যান্স কি যথেষ্ট? এই অতিমারির সময়ে সকলের এগিয়ে আসা কি উচিত নয়?’’ পুরসভার বক্তব্য, এই মুহূর্তে সরকারি ও বেসরকারি সমস্ত অ্যাম্বুল্যান্সকে কোভিড রোগীদের পরিষেবা দিতে স্বাস্থ্য দফতরের তরফে নির্দেশ না দিলে এত রোগীর চাপ সামলানো সম্ভব হবে না।
স্বাস্থ্য দফতরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, ‘‘সরকারি হাসপাতালের সব অ্যাম্বুল্যান্স হাসপাতালের রোগী পরিষেবার কাজ করে। সেগুলি কোভিড রোগীদের জন্য ব্যবহার করা যায় না। বেসরকারি হাসপাতালগুলি নিজেদের রোগীদের পরিষেবা দেওয়ার কাজ করছে। এ ছাড়া, অন্য যে সব সংস্থার অ্যাম্বুল্যান্স রয়েছে, তারা নিজেরা এগিয়ে না এলে স্বাস্থ্য দফতর কিছু করতে পারে না।’’