প্রতীকী ছবি।
কয়েকদিন আগে হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্না সাংবাদিক সম্মেলন করে আপাতত সিঙ্গুরের দলীয় বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধবিরতি’ ঘোষণা করেছেন। কিন্তু সেই ‘বিরতি’ আদৌ হয়েছে কিনা, তা নিয়ে জল্পনা চলছে দলের সাধারণ কর্মীদের মধ্যে। কারণ, রবীন্দ্রনাথবাবু এখনও সুর নরম করেননি।
রবীন্দ্রনাথবাবুর সঙ্গে তাঁর গোষ্ঠী বিবাদের ঘটনাও পুরোপুরি সংবাদমাধ্যমের তৈরি করা বলে উড়িয়ে দিয়েছিলেন বেচারামবাবু। বিধানসভা নির্বাচনে সিঙ্গুরে সব রাজনৈতিক কর্মসূচিতে একসঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে চলতে তিনি মানসিক ভাবে প্রস্তুত বলেও জানিয়েছিলেন। সেই বিবৃতি ছাড়া তারপর বেচারামবাবুর আর কোনও পদক্ষেপ চোখে পড়েনি সাধারণ কর্মীদের মধ্যে। রবীন্দ্রনাথবাবুও তাঁর পুরনো দাবিতে অনড়। বেচারামবাবুর অনুগামীরা বিরোধী শিবিরের দিকে বান ছুড়তে এখনও পিছপা হচ্ছেন না। এই পরিস্থিতিতে দলের অন্দরেই প্রশ্ন উঠেছে, জেলা বা রাজ্য নেতৃত্ব আদপে ঠিক কী সমাধান বাতলালেন বিবদমান দুই গোষ্ঠীকে নিরস্ত্র করতে?
বেচারামবাবুর সাংবাদিক সম্মেলনের পরই রবীন্দ্রনাথবাবু প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার তো একটাই মাত্র দাবি। সিঙ্গুরের ব্লক সভাপতি হিসেবে মহাদেব দাসকেই কাজ করতে দিতে হবে। বিষয়টি আমি জেলা এবং রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়েছি। তাঁদের উত্তরের অপেক্ষাতেই একনও আমি বসে আছি। আর বেচাবাবু যখন সহমতের ভিত্তিতেই কাজ করতে চান, তখন মহাদেববাবুকে ব্লক সভাপতি হিসেবে তাঁর মেনে নিতে সমস্যাটা কোথায়?’’ শাসকদলের ওই প্রবীণ নেতার উষ্মা, ‘‘উনি সহমতের কথা বলছেন? কিন্তু বাস্তব হচ্ছে, সিঙ্গুরে দলীয় কার্যালয়ের চাবি আমি বার বার চেয়েও পাইনি। মহাদেববাবুকেও দেওয়া হয়নি। আমার ছেলের পেশা, এমনকি আমি যে গাড়িতে চড়ি, তা নিয়েও বেচাবাবু অতীতে সাংবাদিক সম্মেলন করে নানা কুৎসা করেছেন। যা কখনই কাম্য নয়।’’
এ নিয়ে বেচারামবাবুর প্রতিক্রিয়া মেলেনি। তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটস্য়অ্যাপেরও উত্তর দেননি। তাঁর অনুগামী সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য দুধকুমার ধাড়া কিন্তু রবীন্দ্রনাথবাবুর বিরুদ্ধে তোপ দাগতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের তরফে কৃষিজমি আন্দোলনে যুক্ত বেশ কয়েকজনকে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছিল। মাস্টারমশাই কিন্তু আন্দোলনকারীদের বঞ্চিত করে নিজের পরিবার ও প্রিয়জনদের বেশ কয়েকটি চাকরি দিয়েছেন। অথচ উনি মুখে সততার কথা বলেন।’’
রবীন্দ্রনাথবাবু অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘মুখে অনেক কিছুই বলা যায়। দুধকুমারবাবু আমার আত্মীয়-স্বজনকে চাকরি দেওয়ার তালিকাটা দয়া করে দিন না।’’