থমথমে: চন্দ্রপুরে সংঘর্ষের পরে পুলিশের টহল চলছে। — ছবি: সুব্রত জানা।
এলাকা দখলকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর গুলি-বোমার লড়াইয়ে জখম হলেন ১০ জন। বৃহস্পতিবার সকালে আমতার চন্দ্রপুর এলাকার ঘটনা। আহতদের আমতা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শেখ রজব আলি। এলাকায় উত্তেজনা থাকায় পুলিশ ও র্যাফ টহলদারি শুরু করে। দু’বছর আগের পঞ্চায়েত ভোটে ১১ আসনের চন্দ্রপুর পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছিল তৃণমূল। তারপর থেকে দলের দুই গোষ্ঠীর কাজিয়া অব্যাহত। একদিকে রয়েছেন প্রধান মহম্মদ ফারুক, অন্যদিকে উপপ্রধান শেখ রজব আলি। বোর্ড গঠনের পর থেকে এ পর্যন্ত ওই পঞ্চায়েতটির কাজকর্ম স্বাভাবিক গতি পায়নি। গ্রামোন্নয়নের কাজ ব্যাহত হচ্ছে। প্রধান ও তাঁর বেশ কিছু অনুগামী এখনও গ্রামছাড়া। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালে গ্রামে এক ডাব বিক্রেতার কাছ থেকে তোলাবাজির অভিযোগ ওঠে প্রধানের দুই অনুগামীর বিরুদ্ধে। রজব ও তাঁর লোকজন প্রতিবাদ জানাতে যান। গোলমাল বাধে। অভিযোগ, প্রধানের দুই অনুগামী আগ্নেয়াস্ত্র, বোমা ও রড নিয়ে হামলা চালায়। গুলিতে এক তৃণমূল কর্মী জখম হন। পাল্টা একই ভাবে হামলার অভিযোগ ওঠে রজবের লোকজনের বিরুদ্ধে।
রজবের অভিযোগ, ‘‘মিথ্যা মামলায় জড়িয়ে আমাকে প্রায় আঠারো মাস গ্রামছাড়া করে রেখেছিলেন ফারুক। এখন গ্রামে শান্তিতে বাস করতে চাই। কিন্তু সিপিএম থেকে দলে আসা কিছু লোকজন প্রধানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে গ্রামে তোলাবাজি করার চেষ্টা করছে। তার জেরেই গোলমাল।’’
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন ফারুক। তাঁর দাবি, রজবের লোকজন মিথ্যা মামলা করে তাঁদের গ্রামছাড়া করেছে। ২০১৯ সালের ১৩ মে থেকে তিনি এবং তাঁর অনুগামীরা গ্রামে ঢুকতে পারেননি। ফারুকের প্রশ্ন, ‘‘গ্রামে না গিয়ে গোলমাল করলাম কী করে?’’ যাদের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ উঠেছে, তারা তাঁর অনুগামী নয় বলেও দাবি করেছেন ফারুক। তিনি বলেন, ‘‘ওরা উপপ্রধানের লোক। হয়তো কিছু ভাগাভাগি নিয়ে গোলমাল হয়েছে ওদের মধ্যে। তাই নিজেরাই মারপিট করছে। এখানে আমার কোনও ভূমিকা নেই।’’
গোলমালের পর দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করে। পুলিশ জানায়, গোলমালের খবর পেয়েই পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। সাত জনকে আটক করা হয়েছে। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, চন্দ্রপুরে সিপিএমের কেউ নেই।
দলের হাওড়া জেলা কমিটির সদস্য গৌতম চক্রবর্তী বলেন, ‘‘যাদের সিপিএম বলে ওরা চালাতে চাইছে, তারা কেউ কোনও দিন আমাদের দল করেনি। ওরা তৃণমূলের হয়েই এলাকায় গুন্ডামি করে।’’