Howrah

হাওড়ার দুই নেতার বিরূপ ‘পোস্টে’ অস্বস্তিতে বিজেপি

সাধারণ বিজেপি কর্মীদের একটি অংশের দাবি, দলের হাওড়া গ্রামীণ জেলা কমিটিতে কিছুদিন ধরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটাই প্রকাশ্যে এসেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০২০ ০৯:২৬
Share:

এই পোস্ট ঘিরেই বিতর্ক। .

বিধানসভা ভোটকে 'পাখির চোখ' করে মাঠে নেমেছে বিজেপি। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উপস্থিতিতে শুরু হয়েছে বিশেষ সাংগঠনিক সভা। তার মধ্যে নেতৃত্বের একাংশের প্রতি গ্রামীণ হাওড়ার দুই বিজেপি নেতার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিরূপ মন্তব্যের কথা সামনে চলে আসায় দলে অস্বস্তি বেড়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে দলগত ভাবে কোনও পদক্ষেপ করা হবে কিনা, তা অবশ্য স্পষ্ট নয়।

Advertisement

ওই দুই নেতার মধ্যে একজন হাওড়া গ্রামীণ জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুরজিৎ মণ্ডল। অন্যজন কমিটির সহ-সভাপতি রমেশ সাধুখাঁ। বুধবার ফেসবুকে সুরজিতের ‘পোস্ট’— ‘পদের অপব্যবহার করছেন, এই দলটার নাম কিন্তু বিজেপি’। কার প্রতি এই বার্তা, তা স্পষ্ট করেননি সুরজিৎ। শুধু বলেন, ‘‘বেশ কিছু নেতা পদের অপব্যবহার করছেন। নীতি মেনে দল করি। কিন্তু বর্তমানে অন্য দল থেকে এসে মাথার উপর ছড়ি ঘোরানোর চেষ্টা করছেন কেউ কেউ। দলের নীতি-আদর্শ মানছেন না। জেলা কমিটিকে সম্মান করছেন না।। তাই এই পোস্ট করেছি। এতে আমি দলের ভাল চেয়েছি। যোগ্য মানুষকে নেতৃত্বে আনা হোক।’’

রমেশের পোস্টটি অবশ্য ছিল ১৩ নভেম্বর। সে দিন আমতার একটি সভা থেকে ফিরে তিনি ফেসবুকের লেখেন, ‘টুকলি করে হয়তো পরীক্ষায় পাশ করা যায় এবং সার্টিফিকেট পাওয়া যায়। কিন্তু সত্যিকারের শিক্ষিত হতে গেলে রীতিমতো বই পড়তে হয়। এটা বিজেপি। সংগঠনের দ্বারা চলে। কোনও ব্যক্তির দ্বারা নয়...’। সঙ্গে একটি ফাঁকা সভাস্থলের ছবিও দিয়েছিলেন। পরে রমেশ ওই ‘পোস্ট’ প্রত্যাহার করে নেন।

Advertisement

কিন্তু এ নিয়ে জলঘোলা থামেনি। ‘ত্রিপুরাজয়ী’ সুনীল দেওধরকে বুধবার থেকে মাঠে নামিয়েছে বিজেপি। উলুবেড়িয়ার একটি রিসর্টে সে দিন তিনি সাংগঠনিক সভা করেন। বৃহস্পতিবার সেখানেই হাওড়া গ্রামীণ, হুগলি, আরামবাগ, শ্রীরামপুর ও ঘাটাল সাংগঠনিক জেলার জেলা নেতৃত্বের সঙ্গেও বৈঠক করেন। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রমেশ এবং সুরজিৎ।

নিজের ‘পোস্ট’ নিয়ে রমেশ কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে, বিজেপির একটি সূত্রের দাবি, সকালে জেলায় দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো ডেকে পাঠিয়ে রমেশকে ধমক দেন। সারাদিন তাঁকে বসিয়ে রাখা হয়।

হাওড়া গ্রামীণ জেলা বিজেপির সভাপতি শিবশঙ্কর বেজ এ নিয়ে বিশেষ, মন্তব্য করতে চাননি। শুধু বলেন, ‘‘যাঁরা লিখেছেন, তাঁরাই বলতে পারবেন, কেন লিখেছেন। নেতৃত্বের কাছে তাঁরাই জবাব দেবেন। দল যা সিদ্ধান্ত নেবে সেটাই মানা হবে।’’ হাওড়া গ্রামীণ জেলার প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজ্য বিজেপির কার্যনির্বাহী সদস্য অনুপম মল্লিক বলেন, ‘‘দলের ঊর্ধ্বে কেউ নন। দলকে ছোট করলে তাঁকে ফল ভোগ করতে হবে। অতীতে দলের বিরুদ্ধে গিয়ে অনেকেই পদ খুইয়েছেন। দলই শেষ কথা বলবে।’’

সাধারণ বিজেপি কর্মীদের একটি অংশের দাবি, দলের হাওড়া গ্রামীণ জেলা কমিটিতে কিছুদিন ধরেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব চলছে। সোশ্যাল মিডিয়ায় সেটাই প্রকাশ্যে এসেছে। যাঁরা বিরূপ মন্তব্য ‘পোস্ট’ করছেন, তাঁদের সঙ্গে বিরোধীদের যোগাযোগ আছে বলেও দাবি করা হয়েছে। উঠছে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি।

এ দিন রিসর্টে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, পুরুলিয়ার সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো, হুগলির সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়, ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুণাল হেমব্রম এবং অনুপমবাবু।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement