Singur

সিঙ্গুরের সেই জমিকে ‘চাষযোগ্য’ করার উদ্যোগ

মঙ্গলবার জমি পরিদর্শন ও জরিপের কাজ করে গেলেন হুগলি জেলা সেচ দফতরের কর্তারা।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

সিঙ্গুর শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২১ ০৬:০১
Share:

সিঙ্গুরের জমিতে সর্ষে বীজ ছড়াচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। —ফাইল চিত্র।

বিধানসভা নির্বাচনের মুখে সিঙ্গুরের সেই জমিকে ফের ‘চাষযোগ্য’ করে তুলতে মাঠে নামল রাজ্য সরকার। মঙ্গলবার জমি পরিদর্শন ও জরিপের কাজ করে গেলেন হুগলি জেলা সেচ দফতরের কর্তারা।

Advertisement

জেলা সেচ দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘পাঁচটি মৌজার অন্তত ২৫০ একর জমিতে জল জমে থাকার একটা সমস্যা রয়েছে। ওই সমস্যা সমাধানে শীঘ্রই কাজ শুরু করা হবে। ওই জমির জল নিকাশির ব্যবস্থা করে লাগোয়া জুলকিয়া খালে ফেলা হবে। চাষিদের সমস্যা মিটে যাবে বলে আমাদের আশা।’’

২০১৬-তে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পরে বর্তমান রাজ্য সরকার বাম আমলে টাটাদের গাড়ি কারখানার জন্য অধিগৃহীত প্রায় হাজার একর জমি কৃষকদের ফিরিয়ে দিয়েছে। ‘চাষযোগ্য’ করেই সেই জমি ফিরিয়ে দেওয়া হয় বলে রাজ্য সরকারের দাবি। কিন্তু এক সময়ের চার ফসলি সেই জমিতে চাষ কার্যত হয়নি বললেই চলে। ওই চৌহদ্দির বেশির ভাগটাই এখনও উলুখাগড়া আর আগাছায় ঢাকা।

Advertisement

চাষিদের অভিযোগ, পাঁচটি মৌজার মধ্যে বিশেষত গোপালনগরের ৪০০ একর জমি নেওয়া হয়েছিল। তার মধ্যে ১৫০ একর জমিই নীচু। নিকাশি ব্যবস্থা ঠিক নয়। কৃষিজমিতে জল দাঁড়িয়ে থাকে। ওই জমি চাষের অযোগ্য। খাসেরভেড়িতে মোট ৫০ একর এবং সিংহেরভেড়ি এলাকায় ২০ একর জমিতেও একই সমস্যা রয়েছে। বেড়াবেড়ি এবং বাজেমিলিয়া এলাকারও অন্তত ২৫ একর জমি এখনও চাষযোগ্য নয়। ফলে, জমি কাজে লাগছে না।

চাষিদের এই অভিযোগ নতুন নয়। আগে একাধিকবার তা শোনা গিয়েছে। সিঙ্গুর পঞ্চায়েত সমিতির শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষ তৃণমূলের দুধকুমার ধাড়া বলেন, ‘‘চাষিদের সমস্যা দূর করতে আমরা মাসকয়েক আগে সেখানকার পাঁচটি মৌজার প্রতিটি এলাকাকে চিহ্নিত করে মুখ্যমন্ত্রীর দফতরে আবেদন করেছিলাম। আবেদনে সাড়া দিল রাজ্য সরকার। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে বলে সে দফতর আশ্বাস দিয়েছে।’’

কিন্তু এই উদ্যোগ গত চার বছরে দেখা গেল না কেন, সেই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁ দের মতে, পুরোটাই ভোটের চমক। জেলা সিপিএম সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘ভোট আসছে তাই রাজ্য সরকারের সিঙ্গুরের চাষিদের কথা মনে পড়েছে। বিধানসভা ভোটের মুখে এটা আরও একটা ভাঁওতা। আমি হলফ করে বলতে পারি, এই কাজও হবে না। তৃণমূলের মনে রাখা উচিত বারবার মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট বৈতরণী পার হওয়া যাবে না।’’

একই সুরে বিজেপির হুগলি সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি সঞ্জয় পাণ্ডে বলেন, ‘‘আমি সিঙ্গুরের বাসিন্দা। সেই সুবাদে দেখছি, ক্ষমতায় আসার পর থেকে তৃণমূল এখানকার চাষিদের মিথ্যা প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছে। বিধানসভা ভোটের মুখে সিঙ্গুরের চাষিদের মনে পড়ল?’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement