হাওড়া ব্রিজের মাথায় যুবক, নীচে যানজট

যে ব্রিজের ফুটপাথে দাঁড়ানো নিষেধ, এমনকী ছবি তোলাতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা, সেখানে পুলিশের চোখ এড়িয়ে কী ভাবে ব্রিজের মাথায় ওই যুবক উঠে পড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

হাওড়া শেষ আপডেট: ০৩ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০৯
Share:

ভোগান্তি: ব্রিজের মাথায় উঠে গিয়েছিলেন এক ব্যক্তি (চিহ্নিত)। এর জেরে যানজট হয় সেতুর মুখে। সোমবার। নিজস্ব চিত্র

ফের হাওড়া ব্রিজের মাথায় উঠে হাত নাড়তে দেখা গিয়েছিল এক যুবককে। সোমবার দুপুরের এই ঘটনায় অবশ্য তেমন কোনও ঝক্কি পোহাতে হয়নি পুলিশ কিংবা দমকল বাহিনীকে। কিছুক্ষণের চেষ্টাতেই তাঁকে সেতুর মাথা থেকে নীচে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের দাবি, ওই যুবক মানসিক ভারসাম্যহীন।

Advertisement

কিন্তু যে ব্রিজের ফুটপাথে দাঁড়ানো নিষেধ, এমনকী ছবি তোলাতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা, সেখানে পুলিশের চোখ এড়িয়ে কী ভাবে ব্রিজের মাথায় ওই যুবক উঠে পড়লেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। কারণ, ব্রিজের হাওড়া ও কলকাতা এই দু’প্রান্তেই রয়েছে পুলিশ বুথ। সেখানে সর্বক্ষণ থাকেন পুলিশকর্মীরা। এ ছাড়াও ব্রিজে কলকাতা পুলিশের টহলদারি গাড়িও থাকে। যদিও পুলিশকর্তাদের দাবি, কোন দিক থেকে কখন ওই যুবক উঠে পড়েছেন, তা বোঝাই যায়নি। গত দুই বছরে এ দিনের ঘটনা নিয়ে তিন বার হাওড়া ব্রিজের মাথায় উঠে পড়ার ঘটনা ঘটল। প্রাথমিক ভাবে পুলিশের অনুমান, হাওড়়ার গঙ্গার ঘাটের দিকে ব্রিজের যে তিন নম্বর পিলার রয়েছে, সেখান দিয়েই উঠে ছিলেন ওই যুবক।

পুলিশ জানায়, এ দিন ব্রিজের মাথায় উঠে পড়া ওই যুবকের বাড়ি বিহারের বক্সারে। তাঁকে উদ্ধারের পরে চিকিৎসার জন্য হাওড়া জেলা হাসপাতালের মেডিক্যাল বিভাগে ভর্তি করা হয়েছে। ওই যুবক বিভিন্ন অসংলগ্ন কথাবার্তা বলছেন বলে দাবি তদন্তকারীদের।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ ব্রিজের উপরের দিকে তাকিয়ে কয়েক জন স্থানীয় যুবককে চেঁচামেচি করতে দেখেন কর্তব্যরত গোলাবাড়ি ট্র্যাফিক গার্ডের পুলিশকর্মীরা। এর পরেই ওই পুলিশকর্মীরা দেখেন, ব্রিজের দু’নম্বর পিলারের মাথায় দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছেন এক যুবক। কিছুক্ষণ সেখানে দাঁড়িয়ে থাকার পরে ফের তিনি হাঁটতে শুরু করেন। ওই দৃশ্য দেখে নীচে তখন ভিড় জমতে থাকে। সাময়িক যানজটও হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে চলে আসেন হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি (ট্র্যাফিক-২) শান্তনু কোঁয়ার। আসে হাওড়ার গোলাবাড়ি এবং কলকাতার উত্তর বন্দর থানার পুলিশ ও দমকল বাহিনী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ওই যুবক কখনও দাঁড়িয়ে হাত নাড়ছেন, কখনও আবার বসে পড়ছেন। কিছুক্ষণ পরে ফের উঠে হাঁটতে শুরু করছেন ওই যুবক। ব্রিজের হাওড়ার দিকের শেষ প্রান্তে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য যে জায়গা ঘেরা জায়গা রয়েছে, সেখানকার তালা ভেঙে দমকল ও পুলিশ ঢোকে বিকেল পৌনে চারটে নাগাদ। এর পরে দমকলকর্মীরাও ব্রিজের কিছুটা অংশে উঠে ওই যুবককে নীচে নামার জন্য ডাকতে শুরু করেন। দমকলের হাওড়া ভিভিশনের স্টেশন অফিসার অমলকৃষ্ণ হালদার বলেন, ‘‘শেষে ৫০ টাকার একটা নোট বার করে ওঁকে দেখাই। তখনই ওই যুবক নীচে নামতে শুরু করেন।’’ দমকলকর্মীদের কাছাকাছি পৌঁছে টাকা নেওয়ার জন্য হাত বাড়াতেই ওই যুবককে ধরে ফেলা হয়। অমলবাবু বলেন, ‘‘মিনিট পনেরোর মধ্যে গোটা অপারেশন শেষ হয়।’’

এর পরে পুলিশি ঘেরাটোপে ওই যুবককে গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িতে ওঠার সময়ে তিনি বলেন, ‘‘আমাকে নিয়ে এসেছিল এখানে। তাই তো উঠলাম।’’ কিন্তু কে বা কারা নিয়ে এসেছিল, তা অবশ্য রাত পর্যন্ত জানতে পারেনি পুলিশ!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement