মাস দশেক গতিহীন থাকার পর মহত্মা গাঁধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্প বা ১০০ দিনের কাজ পুরোদমে চালু হল হুগলি জেলায়। জেলার ২০৭টি পঞ্চায়েত এলাকায় প্রতিদিন ন্যূনতম ৮০ হাজার কর্মদিবস তৈরি করতে হবে বলে ব্লক প্রশাসনগুলির কাছে নির্দেশ পাঠানো হয়েছে।
গত ২৮ মে ওই নির্দেশিকা জারির পরই জরুরি ভিত্তিতে পরের দিন থেকেই বিভিন্ন পঞ্চায়েত এলাকায় কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক কৌশিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘১০০ দিন কাজ প্রকল্পে তহবিল নিয়ে যে অনিশ্চয়তা ছিল তা কেটেছে। কেন্দ্র সরকারের অনুমোদন করা শ্রম বাজেট মোতাবেক কাজ শুরু হয়েছে। জেলায় প্রতিদিন ৮০ হাজার কর্মদিবস তৈরি করতে ব্লকগুলিকে লক্ষ্যমাত্রা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়েছে।’’
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় গ্রাম উন্নয়ন দফতর ২০১৫-২০১৬ অর্থবর্ষের জন্য সব রাজ্যেই মাস ধরে শ্রম বাজেট তৈরি করে দিয়েছে। তাতে হুগলির ১৮টি ব্লকের জন্য গত এপ্রিল থেকে আগামী মার্চ অব্দি মোট ২,১৯,২৫,১২৪টি শ্রমদিবস ধার্য করা হয়েছে। ওই শ্রম বাজেট অনুযায়ী এপ্রিল থেকে জুন অব্দি তিন মাসের মোট শ্রমদিবস ৫৯,৭৮,২৮০টি। তহবিলের অভাবে দীর্ঘ ১০ মাস প্রকল্পটি রূপায়ণে তেমন গতি ছিল না বললেই চলে। অবশেষে মে মাসের ১৮ তারিখে রাজ্যের পঞ্চায়েত ও গ্রামোন্নয়ন দফতর থেকে তহবিলের নিশ্চয়তার কথা জানিয়ে জেলাশাসকদের কাজ শুরু করার নির্দেশ পাঠানো হয়। হাতে থাকা মাত্র এক মাসের মধ্যে গত এপ্রিল থেকে জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত কেন্দ্র সরকারের অনুমোদিত শ্রমদিবসের কাছাকাছি পৌঁছতেই প্রতিদিন নূন্যতম ৮০ হাজার শ্রমদিবস তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের বক্তব্য।
১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের সূত্রপাত থেকে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কাঁধে শ্রম বাজেট তৈরির যে বাধ্যতামূলক দায়িত্ব ছিল, তা এ বার কেন্দ্র সরকারই করে দিয়েছে। এর আগে প্রতি মাসে পঞ্চায়েত এলাকার গ্রাম সংসদ বৈঠক করে শ্রম বাজেট তৈরি করার নিয়ম ছিল। সেই বাজেট গ্রাম সংসদ এবং গ্রামসভায় অনুমোদন হয়ে পর্যায়ক্রমে জেলা-রাজ্য হয়ে কেন্দ্রীয় দফতরে পাঠানো হত। এ বার এই প্রকল্পে রাজ্যের শ্রমিকদের মজুরি ১৬৯ টাকা থেকে বেড়ে ১৭৪ টাকা হওয়ায় কাজের দাবি বেড়েছে। কিন্তু কেন্দ্র সরকারের তৈরি শ্রম বাজেট অনুযায়ী প্রত্যাশার চেয়ে প্রায় ৩০ শতাংশ কম কাজ হবে বলে মনে করছেন ব্লক প্রশাসনের কর্তারা।