লকডাউনের আগে ঘরের পথে। শুক্রবার উলুবেড়িয়ায়। ছবি: সুব্রত জানা
পথঘাট দেখলে মনে হবে এক দিনের লকডাউন-এ বিদায় নিয়েছে করোনা।
বৃহস্পতিবার লকডাউন-এর প্রথম দিন হুগলির রাস্তাঘাট ছিল আক্ষরিক অর্থেই জনশূন্য। করোনা-আতঙ্কে জবুথবু মানুষ ঘরবন্দি রেখেছিল নিজেদের। কিন্তু শুক্রবার ভোরের আলো ফুটতেই বদলে যায় ছবি। সকাল হতেই দোকান-বাজারে ভিড় উপতে পড়ে, যা দেখে ফের সংক্রমণের শঙ্কা জাঁকিয়ে
বসেছে জনজীবনে।
জেলার এ দিনের চিত্র দেখে প্রশাসনের এক আধিকারিকের মন্তব্য, ‘‘পথে গাটে যে ভাবে মানুষের ছল নেমেছে, তা দেখে মনে হচ্ছে, ভোর হওয়ার আগেই করোনা বিদায় নিয়েছে।’’
উদ্বেগের বিষয় হল, হুগলিতে করোনার প্রকোপ যত বাড়ছে, ততই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে দূরত্ব-বিধি লঙ্ঘন এবং মাস্ক না-পরে বাইরে বার হওয়ার প্রবণতা, যাকে ভয়ঙ্কর বলে মনে করছে চিকিৎসকেরা। এক চিকিৎসকের মন্তব্য, ‘‘প্রশাসন চাপ দিলে বিধি মানব, আর রাশ আলগা হলেই বাইরে বেরিয়ে পড়ব, এ ভাবে করোনা-সংক্রমণ আটকানো যাবে না।’’ বিশিষ্ট চিকিৎসক তমাল দাস বলেন, ‘‘নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া বাইরে না বেরনোই সকলের পক্ষে ভাল। একান্তই বেরতে হয়, দূরত্ব-বিধি মেনে মাস্ক পরে বেরতে হবে।’’
দূরত্ব-বিধি মানা এবং মাস্ক না-পরা নিয়ে শুরু থেকেই পুলিশের সঙ্গে লুকোচুরি খেলছে অ-সচেতন ইনেক মানুষ। এ দিনও তার
ব্যতিক্রম হয়নি।
আজ, শনিবার সপ্তাহিক লকডাউন-এর দ্বিতীয় তথা শেষ দিন। আগামিকাল রবিবার হওয়ায় ব্যাঙ্ক এবং অনেক দোকান-বাজার বন্ধ থাকবে। সেই কারণেই সপ্তাহান্তের কাজ সারতে বেশি সংখ্যায় মানুষ পথে নেমেছিল। উত্তরপাড়া থেকে বাঁশবেড়িয়া, তারকেশ্বর থেকে আরামবাগ—জেলার শহরাঞ্চলে সর্বত্রই বহু এটিএম কাউন্টারের সামনে দীর্ঘলাইন চোখে পড়ে।
জেলা সদর চুঁচুড়ার খড়ুয়া বাজার, রবীন্দ্রনগর বাজার, খাদিনামোড় বাজারেও উপচে পড়া ভিড় ছিল। উত্তরপাড়ার কাঁঠালবাগান, সখেরবাজার এবং জিটি রোড লাগায়ো উত্তরপাড়া বাজারেও বহু মানুষ ভিড় করেছিলেন। শহর লাগোয়া অনেক এটিএম কাউন্টারে টাকা কম ছিল। ফলে, যে এটিএম-গুলিতে টাকা ছিল, সেখানেই লম্বা লাইন পড়ে। এটিএম-এর নিরাপত্তারক্ষীরা জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট এজেন্সি-গুলি নিয়মিত ভাবে মেশিনে টাকা ভরছে না। বিষয়টি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। এটিএম কাউন্টারগুলির লাইনে দাঁড়ানো অনেক গ্রাহক
দূরত্ব-বিধি মানেননি।