গ্লুকোমায় আক্রান্ত সায়ন অষ্টম, দশম হল ঝোড়হাটের কুন্তল

বাবা মহম্মদ সফিক রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের কর্মী। মা মানোয়ারা বেগম ডিএমবি গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা। স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকেই প্রথম হয়ে এসেছে সায়ন। মাধ্যমিকে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার ইচ্ছে রয়েছে লাজুক ছেলেটির।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০১৭ ০৪:০৮
Share:

সফল: মহম্মদ সায়ন সফিক। নিজস্ব চিত্র।

ছেলেবেলাতেই তার দু’চোখে গ্লুকোমা ধরে পড়ে। অস্ত্রোপচার হয়। ছেলের ভবিষ্যৎ নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন বাবা-মা।

Advertisement

হাওড়ার বাগনানের দেউলগ্রামের মহম্মদ সায়ন সফিক নামে সেই ছেলেই এ বার মাধ্যমিকের মেধা-তালিকায় অষ্টম স্থান দখল করে শুধু বাবা-মাকে নয়, চমকে দিয়েছে পড়শিদেরও। দেউলগ্রাম মানকুর বাকসি (ডিএমবি) স্কুলের এই ছাত্রের মাধ্যমিকে প্রাপ্ত নম্বর ৬৮৩। তার মধ্যে সে ইংরেজিতে পেয়েছে ৯৫, বাংলায় ৯৩, অঙ্কে ১০০, দুই বিজ্ঞানে ১০০ করে, ভূগোলে ৯১ এবং ইতিহাসে ৯৮।

বাবা মহম্মদ সফিক রাজ্য পূর্ত (সড়ক) দফতরের কর্মী। মা মানোয়ারা বেগম ডিএমবি গার্লস স্কুলের শিক্ষিকা। স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি থেকেই প্রথম হয়ে এসেছে সায়ন। মাধ্যমিকে ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে পড়ার ইচ্ছে রয়েছে লাজুক ছেলেটির। এ দিন আনন্দের মধ্যে সায়নের বারবার মনে পড়ছিল ঠাকুর্দা আব্দুর রউফের কথা। দু’বছর আগে তিনি মারা গিয়েছেন। তিনি মাধ্যমিকে ভাল ফল করার জন্য সায়নকে সবসময় উৎসাহ দিয়ে গিয়েছেন। কাঁদতে কাঁদতে সায়ন বলে, ‘‘মৃত্যুর আগের দিন পর্যন্ত দাদুভাই আমাকে বলতেন, মাধ্যমিকে এমন ফল করবে যেন টিভিতে তোমাকে দেখায়। সে কথা আমি রাখতে পেরেছি।’’

Advertisement

কুন্তল দাস। নিজস্ব চিত্র

এখনও প্রতিদিন দু’বেলা চোখে ওষুধ দিতে হয় ছেলেটিকে। তবু বড় হওয়ায়, আইআইটি সুযোগ পাওয়ার তীব্র ইচ্ছা তার। শনিবার সায়নকে অভিনন্দন জানিয়ে যান আমতার কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র। সায়নকে জড়িয়ে ধরে ডিএমবি-র এই প্রাক্তনী বলেন, ‘‘শুধু গ্রামটিকেই নয়, লোকচক্ষুর অন্তরালে থাকা আমার প্রাক্তন স্কুলকেও আজ যে সম্মান সায়ন এনে দিল তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ।’’

শুধু সায়ন নয়, মাধ্যমিকে দশম হয়ে হাওড়ার কৃতীদের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে সাঁকরাইলের ঝোড়হাটের কুন্তল দাসও। শিবপুর বিই রলেজ মডেল স্কুলের ছাত্রটি মাধ্যমিকে পেয়েছে ৬৮১ নম্বর। প্রতিটি বিষয়ে গৃহশিক্ষক ছিল। তবুও স্কুলের অবদানের কথা জানাতে সে ভোলেনি। অ্যাস্ট্রোফিজিক্স নিয়ে তার পড়াশোনা করার ইচ্ছা। কারণ, ‘‘মহাকাশ আমাকে ভীষণ ভাবে টানে’’— বলছে কুন্তল।

বাবা তুষারকান্তি দাস বেসরকারি সংস্থার কর্মী। মা দুর্গাদেবী গৃহবধূ। সাধারণ পরিবারে শনিবারের দিনটি ছিল আলাদা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশমতো রাজ্য সরকারের তরফে এ দিন ওই বাড়িতে আসেন স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ তপন পাল, বিডিও সন্দীপ মিশ্র প্রমুখ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement