Rape

ধর্ষণে ধৃতের স্ত্রীকে গণধর্ষণের নালিশ

দু’টি ঘটনায় ধৃত মোট তিন জনকে রবিবার উলুবেড়িয়া আদালতে হাজির করানো হয়।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

আমতা শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০২০ ০১:৪৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

একটি ধর্ষণের ঘটনায় ধৃত যুবকের স্ত্রীকে শুক্রবার রাতে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল হাওড়ার আমতার একটি গ্রামে। সেই অভিযোগকে ঘিরে বিস্তর জলঘোলাও হল।

Advertisement

অভিযুক্তদের মধ্যে এক যুবককে শনিবার দুপুরে পুলিশ গ্রেফতার করে। অভিযুক্ত নির্দোষ দাবি করে গ্রামবাসীদের একাংশ তাকে ছাড়ার দাবিতে থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখান। পুলিশের সঙ্গে তাঁদের ধস্তাধস্তি হয়। বিক্ষোভ ঠেকাতে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। ধৃতের বন্ধু সমীরণ দলুই বিক্ষোভে ছিলেন। তিনি বলেন, ‘‘থানায় ওকে গ্রেফতারের কারণ জানতে গিয়েছিলাম। পুলিশ কোনও কথা না শুনেই এলোপাথাড়ি লাঠি চালাল। কয়েকজন গ্রামবাসী ফোনে ছবি তুলছিলেন। পুলিশ বেশ কিছু মোবাইল জলে ফেলে দেয়। আছাড় মেরেও ভেঙে দেয়।’’

লাঠি চালানোর অভিযোগ পুলিশ মানেনি। থানায় এসে গোলমাল সৃষ্টির অভিযোগে রাকেশ ঘাঁটা ও সমীরণ দলুই নামে দুই বিক্ষোভকারীকে পুলিশ গ্রে্ফতার করে। হাওড়া জেলা (গ্রামীণ) পুলিশের এক কর্তার দাবি, ‘‘বিক্ষোভকারীদের লাঠি উঁচিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। গণধর্ষণে মোট চার জন অভিযুক্ত। তাদের মধ্যে আমতা হাসপাতাল চত্বর থেকে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃত পেশায় অ্যাম্বুল্যান্স-চালক। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।’’

Advertisement

দু’টি ঘটনায় ধৃত মোট তিন জনকে রবিবার উলুবেড়িয়া আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাদের ১৩ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। এ দিন আদালতে যাওয়ার পথে ধৃত দাবি করে, সে নির্দোষ। মিথ্যা মামলায় তাকে ফাঁসানো হয়েছে। তার বৌদিকে ৯ নভেম্বর রাতে ধর্ষণ করা হয়েছিল। সে বৌদিকে থানায় নিয়ে গিয়েছিল। বৌদির অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ একজনকে গ্রেফতার করে। সেই আক্রোশেই ধৃতের স্ত্রী তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলেছেন। তিনিই শনিবার হাসপাতালে পুলিশ নিয়ে গিয়ে তাকে চিনিয়ে দেন।

পক্ষান্তরে, গণধর্ষণের অভিযোগকারিণীর দাবি, মিথ্যা মামলায় স্বামীকে গ্রেফতার করানো হয়েছে। পুলিশের ভয়ে তাঁর শ্বশুর-শাশুড়ি এবং দেওর পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ঘরে তাঁকে একা থাকতে হচ্ছে। সেই সুযোগেই শুক্রবার রাতে চার জন ঘরে ঢুকে তাঁকে ধর্ষণ করে।

‘সেভ ডেমোক্রেসি’ও মনে করছে, গণধর্ষণের অভিযোগ মিথ্যা। সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী বলেন, ‘‘পুলিশ প্রকৃত ধর্ষণের ঘটনা আড়াল করতে নতুন নাটক সাজিয়েছে। তাই সাজানো মামলায় অপরাধীকে ধরতে পুলিশের এক ঘণ্টাও সময় লাগল না। পুলিশ গ্রামবাসীদের নামেও মিথ্যা মামলা করেছে। দু’জন নিরীহ যুবককে গ্রেফতার করেছে। পুলিশ প্রকৃত ঘটনা আড়াল করলে বৃহত্তর আন্দোলন হবে।’’

একটি বিদ্যুতের তার কার বাড়ির পাশ দিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, তা নিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগে ধৃতের পরিবারের সঙ্গে তার পড়শি পরিবারের বচসা থেকে মারামারি হয় গত ৯ নভেম্বর রাতে। পরের দিন সকালে ধৃতের বৌদি পুলিশের কাছে অভিযোগে জানান, ওই রাতে রাস্তায় পথ আটকে তাঁর দশ মাসের শিশুকে কোল থেকে কেড়ে রাস্তায় ছুড়ে ফেলে দেওয়া হয়। স্বামীকে আটকে রেখে মারধর করে তাঁকে টেনে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করে পড়শি এক যুবক। গোটা ঘটনায় এক মহিলা-সহ পাঁচ জনের বিরুদ্ধে তিনি অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ এক যুবককে গ্রেফতার করে। তার ১৪ দিন জেল হেফাজত হয়।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement