অমিত ধর
একটি বাড়ির তেতলার ঘর থেকে মিলল এক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ মৃতদেহ। সাপ্তাহিক লকডাউনের দ্বিতীয় দিন, শুক্রবার সকাল সাতটা নাগাদ ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার ব্যাঁটরা থানা এলাকার নটবর পাল রোডে। মৃতের নাম অমিত ধর (৬৯)। তিনি এক সময়ে জাতীয় স্তরের শুটার ছিলেন। পুলিশ জেনেছে, শারীরিক অসুস্থতার কারণে কিছু দিন ধরে অবসাদে ভুগছিলেন অমিতবাবু। অনুমান, তার জেরে এ দিন নিজের লাইসেন্সড পিস্তল থেকে মাথায় গুলি করে আত্মঘাতী হন তিনি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল সাতটা নাগাদ আচমকা অমিতবাবুর ঘর থেকে গুলির শব্দ আসে। পাশের ঘরেই ছিলেন তাঁর স্ত্রী ঋতা। তিনি ছুটে এসে দেখেন, চেয়ার থেকে নীচে পড়ে একটি টেবিলের সামনে ছটফট করছেন তাঁর স্বামী। ডান হাতে তখনও ধরা পয়েন্ট সেভেন এমএম পিস্তল। মাথার ডান দিকে গভীর ক্ষত। সেখান থেকে রক্ত বেরিয়ে ভেসে যাচ্ছে মেঝে। ঘটনার পরে ওই পরিবারের লোকজনই থানায় খবর দেন। পুলিশ এসে অমিতবাবুর দেহ উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। পিস্তলটি বাজেয়াপ্ত করে ফরেন্সিক পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে।
ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, নটবর পাল রোডের পাশেই চারতলা বাড়িটির নীচে পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ। হাওড়া সিটি পুলিশের পদস্থ কর্তারা ঘটনার তদন্ত করছেন। অমিতবাবুর স্ত্রী ঋতা জানান, তাঁদের কারখানার অর্ধেক অংশ বিক্রি হয়ে গিয়েছে। ব্যবসার কাজ দেখাশোনা করেন একমাত্র ছেলে। বছরখানেক আগে সেরিব্রাল স্ট্রোক হওয়ার পরে অমিতবাবু পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। তার পর থেকেই অবসাদে ভুগছিলেন তিনি। দীর্ঘ চিকিৎসার পরে ইদানীং একটু হাঁটাচলা করতে পারছিলেন। ঋতা বলেন, ‘‘সকালে ঘুম থেকে উঠে উনি শৌচাগারে যান। আমার সঙ্গে স্বাভাবিক ভাবে কথাও বলেন। তার পরে ঘরে ঢুকে এই কাণ্ড ঘটান।’’
পুলিশ জানায়, ওই ঘর থেকে একটি চিরকুট মিলেছে। তাতে ওই ব্যবসায়ী তাঁর মৃত্যুর জন্য কাউকে দায়ী করেননি। তবে তদন্তকারীদের দাবি, চিরকুটে লেখা রয়েছে, তিনি তাঁর স্ত্রীকে কারখানার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট দেখাশোনার দায়িত্ব দিয়ে যাচ্ছেন। পাশাপাশি, আরও কয়েক জনের নাম উল্লেখ করে বলেছেন তাঁদের সঙ্গে যেন সম্পর্ক না-রাখা হয়। পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে।