প্রতীকী ছবি
করোনা আবহে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনস্থ কলেজগুলিতে স্নাতক স্তরের চূড়ান্ত পর্বের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ১ অক্টোবর থেকে। নতুন নিয়মে পরীক্ষা দিতে ছাত্রছাত্রীদের যাতে অসুবিধা না হয়, সে জন্য গ্রামীণ হাওড়ার কলেজগুলিতে শুরু হয়েছে জোর তৎপরতা। বিভিন্ন কলেজের অধ্যক্ষরা জানিয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশ্য, সঠিক সময়ে জমা দিতে না-পারার জন্য একজন পরীক্ষার্থীরও উত্তরপত্র যেন বাতিল না হয়।
ইউজিসি-র নিয়ম মেনে এ বার বাড়িতে বসেই পরীক্ষা দিতে পারবেন পরীক্ষার্থীরা। ২ ঘণ্টার পরীক্ষা। উত্তরপত্র জমা দিতে হবে পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যে। মূলত অনলাইনেই জমা। যে সব পরীক্ষার্থী পারবেন না, তাঁদের জন্য পরীক্ষাকেন্দ্রে এসে তা জমা দেওয়ার নিদান দিয়েছে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু তা-ও পরীক্ষা শেষ হওয়ার ৩০ মিনিটের মধ্যেই। প্রশ্নপত্র মিলবে কলেজের ওয়েবসাইটে। যে সব পরীক্ষার্থীর অ্যানড্রয়েড ফোন বা বাড়িতে কোনও রকম ইন্টারনেট সংযোগ নেই, তাঁরা কাছাকাছি কোনও সাইবার ক্যাফে থেকে প্রশ্নপত্র ‘ডাউনলোড’ করতে পারবেন।
শহরঘেঁষা কলেজগুলি জোর দিয়েছে উত্তরপত্র অনলাইনে জমা করার উপরেই। সে জন্য ছাত্রছাত্রীদের নিয়মিত প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। উলুবেড়িয়া কলেজ কতৃর্পক্ষ জানান, তাঁরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন। কী পদ্ধতিতে উত্তরপত্র অনলাইনে জমা করতে হবে সে বিষয়ে বিভিন্ন বিভাগীয় প্রধানেরা ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্স করছেন। এতে ছাত্রছাত্রীদের সড়গড় করতে কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষকদের একটি দল কাজ করছে।
এখানকার মোট ১৬০০ ছাত্রছাত্রী পরীক্ষায় বসবেন। তাঁদের মধ্যে মাত্র কয়েকজনের অ্যানড্রয়েড মোবাইল নেই জানিয়ে কলেজের অধ্যক্ষ দেবাশিস পাল বলেন, ‘‘পরীক্ষার দিনে আমাদের শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মীরা যে সব ছাত্রছাত্রীর অ্যানড্রয়েড ফোন নেই, তাঁদের কাছে গিয়ে উত্তরপত্র আপলোড করতে সহায়তা করবেন।’’ একইসঙ্গে অবশ্য কলেজে এসেও উত্তরপত্র জমা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকছে বলে জানান তিনি। তবে তাঁরা ছাত্রছাত্রীদের অনলাইনেই উত্তরপত্র জমা দিতে উৎসাহ দিচ্ছেন বলেও জানান দেবাশিসবাবু।
একই ভাবে পরীক্ষার্থীদের উত্তরপত্র জমা দেওয়ার পদ্ধতি বোঝাচ্ছেন বাগনান কলেজ কর্তৃপক্ষও। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ সোমা মুখোপাধ্যায় জানান, কলেজে এসে উত্তরপত্র জমা নেওয়ার বিকল্প ব্যবস্থা আছে ঠিকই। তবে তাতে খুব একটা উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে না। এতে কলেজে ভিড় বাড়বে।
তবে, জয়পুর, আমতা বা উদয়নারায়ণপুরের মতো জেলার প্রত্যন্ত এলাকার কলেজগুলি উত্তরপত্র জমা নিতে একাধিক কাউন্টার রাখছে। জয়পুর পঞ্চানন রায় কলেজের অধ্যক্ষ সৌমিত্র সরকার বলেন, ‘‘এই এলাকাটি খুব পিছিয়ে পড়া। বেশিরভাগেরই অ্যানড্রয়েড ফোন নেই। তাই কলেজে একাধিক কাউন্টার থাকছে। ছাত্রছাত্রীরা কাউন্টারে এসে উত্তরপত্র জমা দিতে পারবেন।’’ একই কথা জানান আমতা রামসদয় কলেজের অধ্যক্ষ্য অমিতাভ মুখোপাধ্যায়, উদয়নারায়ণপুর মাধবীলতা মহা বিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ অরবিন্দ ঘোষ।
যাঁরা কলেজেই উত্তরপত্র জমা দিতে চান, তাঁরা সময়ের মধ্যে পৌঁছনোর জন্য কলেজের কাছেই বাড়ি ভাড়া নিচ্ছেন বা আত্মীয়ের বাড়ি থাকবেন বলে ঠিক করেছেন। জয়পুর পঞ্চানন রায় কলেজের এক ছাত্রী বলেন, ‘‘কলেজের কাছেই এক আত্মীয়ের বাড়িতে এসে থাকব। সেখানে পরীক্ষা দিলে ১০ মিনিটের মধ্যেই কলেজে গিয়ে উত্তরপত্র জমা দিতে পারব।’’