কখনও সময়ের আগে, কখনও অনেক দেরিতে বৃষ্টি হচ্ছে। ফলে সমস্যা হয় কৃষিকাজে। এই সমস্যা এড়াতে হাওড়ার বিভিন্ন ব্লকের চাষিদের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে চাষ করার উপর জোর দিচ্ছে কৃষি দফতর। শুধু তাই নয়, হাওড়া জেলার বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী কী ধরণের বীজ উপযোগী তা নিয়েও পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাচ্ছে জেলা কৃষি দফতর।
কম সময়ে ফসল ফলানোর জন্য ড্রাম সিডার, জিরো টিলেজ পদ্ধতিতে চাষ করলে একদিকে যেমন কম সময়ে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব হবে তেমনি খরচও কম হবে— এ সব চাষিদের বোঝানো হচ্ছে বলে কৃষি দফতর সূত্রে খবর। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে এই কাজ হচ্ছে। হাওড়ার আমতা, উদয়নারায়ণপুর, শ্যামপুর, বাগনান-সহ জেলার নানা ব্লকে এই প্রশিক্ষণ জোর কদমে শুরু করেছে কৃষি দফতর।
ড্রাম সিডার বা জিরো টিলেজ পদ্ধতিটি কী? কৃষি দফতরের তরফে জানা গিয়েছে, ড্রাম সিডার নামে এক ধরণের যন্ত্র আছে। যার সাহায্যে নির্দিষ্ট দূরত্বে বীজধান বপন করা যায়। ফলে সেই বীজ তুলে আর অন্যত্র রোপণ করতে হয় না। সেখানেই ধানের ফলন হয়। এতে প্রায় ২০ দিন কম সময়ে ধান উৎপাদিত হয়। এর ফলে পরবর্তী ফসল চাষেও দেরি হয় না। জিরো টিলেজ পদ্ধতিটাও ড্রাম সিডারের মতো। এ ছাড়াও ধানে যাতে সহজে পোকা না লাগে তার প্রশিক্ষণও চাষিদের দেওয়া হচ্ছে।
জেলা কৃষি দফতরের এক কর্তা জানিয়েছেন, চাষিদের বলা হচ্ছে ৮টি লাইন বীজ বোনার পরে কিছুটা ফাঁক রাখতে। যাতে জমিতে হাওয়া বাতাস বেশি খেলতে পারে। এর ফলে ধান গাছের শিষে সহজে পোকা ধরবে না। ইতিমধ্যে উদয়নারায়ণপুর ব্লকে এই পদ্ধতিতে চাষিরা চাষও করছেন। গত বছর প্রবল বর্ষায় উদয়নারায়ণপুর-সহ হাওড়ার গ্রামীণ এলাকায় আমন ধান চাষে ব্যাপক ক্ষতি হয়। সেক্ষেত্রে উদয়নারায়ণপুরের বহু চাষি ড্রাম সিডার পদ্ধতিতে চাষ করে লাভবান হয়েছিলেন বলে উদয়নারায়ণপুর ব্লকের কৃষি দফতরের কর্তা গৌতম সামুই জানান। আগামী দিনে এই পদ্ধতিতে চাষ করলে চাষিরা উপকৃত হবেন বলে আশাবাদী জেলার কৃষি কর্তারা।