—ফাইল চিত্র
প্রতিবন্ধীদের সরকার থেকে যে সমস্ত সুবিধা পাওয়ার কথা, সেই সব সুবিধার জন্য দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে তাঁদের আবেদন জানানোর পরামর্শ দিলেন সিপিএম নেতা তথা রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়। প্রতিবন্ধী দিবস উপলক্ষে ৩ ডিসেম্বর কলকাতার রানি রাসমণি রোডে বিশেষভাবে সক্ষমদের রক্তদান শিবির করা হয়। প্রায় পাঁচশো জন বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি ও তাঁদের পরিবারের লোকেরা ওই শিবিরে যোগ দিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ওই অনুষ্ঠানে রক্ত দিতে এসেছিলেন বিশেষভাবে সক্ষমরা। রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনীর সাধারণ সম্পাদক কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় সেখানে বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে প্রতিবন্ধীদের নিজেদের সার্টিফিকেট প্রাপ্তি-সহ নানা সরকারি সুবিধার আবেদন করতে হবে। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর তার প্রতিলিপি নিজেদের কাছে রাখবেন। সুবিধা পেতে পরে এলাকার বিডিও, এসডিও, স্বাস্থ্য অধিকারিককে ওই প্রিতিলিপি জমা দিতে হবে। তখন সরকার যদি এই সুবিধা দিতে অস্বীকার করে, তা হলে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে দুয়ারের সরকার শিবিরে জমা দেওয়া আবেদনপত্রটির রিসিভ কপি থাকা অত্যন্ত জরুরি।’’ প্রয়োজনে স্পেশাল রিট মামলাও করা যেতে পারে বলে তিনি জানান। কিন্তু এখন যদি এই সমস্ত দাবি নিয়ে কিছু না করা হয়, তা হলে পরবর্তী সময়ে লিফলেটে উল্লেখিত দাবি নিয়ে সরকারি আধিকারিকরা কোনও দায়িত্ব নিতে রাজি হবেন না। তাই প্রতিবন্ধীদের সব সংগঠক ও অভিভাবককে কান্তিবাবু অনুরোধ জানিয়ে বলেন, ‘‘লিফলেটের বিষয়বস্তু মন দিয়ে পড়ে এলাকার সমস্ত প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কাগজপত্র সহ দুয়ারে সরকার ক্যাম্পে হাজির করুন। বিষয়টির গুরুত্ব আজ বুঝবেন না। আগামী দিনে বুঝবেন। কিন্তু তখন প্রয়োজনীয় সরকারি স্ট্যাম্প দেওয়া দরখাস্তের কাগজ না থাকলে আফসোস করতে হবে। তাই কাজটা এখনই করুন।’’ এ নিয়ে কোনও প্রশ্ন থাকলে সরাসরি তাঁকে ফোন করতে পারবেন বিশেষভাবে সক্ষম মানুষেরা বলে কান্তিবাবু জানান। সোমবার মুকুন্দপুরের প্রতিবন্ধী ভিলেজ অফিসে বসে কান্তিবাবু বলেন, ‘‘প্রতিবন্ধী অধিকার আইন ২০১৬ -এর ২৪ ধারায় বলা হয়েছে, সমস্ত সরকারি দারিদ্র্য দূরীকরণ প্রকল্পে প্রতিবন্ধকতাযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য পাঁচ শতাংশ সংরক্ষণ, পঁচিশ শতাংশ অতিরিক্ত বরাদ্দ ও প্রতিবন্ধী নারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে। সরকারি আধিকারিকদের বিষয়টি অবগত করতে হবে। সেই কারণেই দুয়ারে সরকার প্রকল্পে ওই আবেদনপত্র জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। যদি রাজ্য সরকার কোনও গুরুত্ব না দেয়, তা হলে কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই রাজ্য জুড়ে সমস্ত বিডিও অফিস ঘেরাও করে অনশন শুরু করবেন বিশেষভাবে সক্ষমরা।’’ রাজ্য প্রতিবন্ধী সম্মিলনী সূত্রে জানা গিয়েছে, তাঁদের প্রায় সদস্য সংখ্যা ৩ লক্ষ। রাজ্য সরকারের কাছ থেকে আইনি স্বীকৃতি আদায় করার জন্য প্রায় সব সদস্যই মাঠে নামবেন।