আগেই সই করা হয়েছে খাতায়। নিজস্ব চিত্র
পুজোর সময় হাসপাতালে গরহাজির থাকারই পরিকল্পনা রয়েছে। অথচ হাজিরা খাতায় সই করে রেখেছেন ৩০ সেপ্টেম্বর মানে একেবারে দশমী পর্যন্ত। আগেভাগে নিজেকে হাজির দেখানোর এমন কারসাজির অভিযোগ উঠল খোদ ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের বিরুদ্ধে। পুরশুড়ার আঁকরি-শ্রীরামপুর ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন দুবের এমন কাণ্ড নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন খোদ ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মীরাই।
বিষয়টি কানে গিয়েছে হুগলির জেলার স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তীরও। তাঁর কথায়, ‘‘এটা তো মারাত্মক অপরাধ। ওয়েস্ট বেঙ্গল সার্ভিস রুল পরিপন্থী কাজ। এটার জন্য দফতর তদন্ত করবে এবং রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরে রিপোর্ট পাঠাবে।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্র সূত্রে জানা গিয়েছে, রবীনববুর বিরুদ্ধে বহুবারই বেনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এলাকার বাসিন্দাদের দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ ছিল, তিনি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে অনিয়মিত আসেন। মাঝে মাঝে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন আর কিছুক্ষণের জন্য থেকে চলে যান। তার ফলে স্বাস্থ্যকেন্দ্রের পরিষেবাও ব্যাহত হচ্ছিল বলে অভিযোগ।
ইতিমধ্যে পারিবারিক অসুবিধার কথা জানিয়ে পুরশুড়া ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ইস্তফাপত্র জমা দিয়েছিলেন রবীনবাবু। সেই আবেদন গৃহীতও হয়েছে। ইতিমধ্যে পরবর্তী বিএমওএইচকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর অর্থৎ দশমী পর্যন্ত ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের দায়িত্বে থাকবেন রবীন দুবেই।
পুরশুড়া ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীদের অভিযোগ, ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীনবাবু গত ১২ সেপ্টেম্বরের পর ২৫ সেপ্টেম্বর অফিস আসেন। আর এসেই ১২ সেপ্টেম্বর থেকে একেবারে টানা ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সবুজ কালিতে হাজিরা খাতায় সই করে দেন। এরপরই জেলা প্রশাসনের কাছে অভিযোগ জানান ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্মীরা।
হাজিরা খাতায় সই থাকলেও মঙ্গলবার স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে সন্ধান মেলেনি রবীনবাবুর। মোবাইল ফোনে রবীনবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করা তিনি বলেন, “চিকিৎসা পরিষেবায় ছুটি বলে কিছু নেই। আমি ৩০ তারিখ পর্যন্ত পুরশুড়ায় ব্লক স্বাস্থ্য দফতরের দায়িত্বে রয়েছি। কোনও সমস্যা হলে আমাকেই তো ছুটতে হবে। তাই ইচ্ছা করেই সই করে রেখেছি।’’
কিন্তু এ ভাবে হাজির খাতায় কি আগাম সই করা যায়? শুনেই ফোন কেটে দেন রবীনবাবু।