আশীর্বাদ: বৃদ্ধার সঙ্গে মানস। নিজস্ব চিত্র
নানা উন্নয়নের ফিরিস্তি দিয়ে দলের ভুল-ত্রুটি তখন জানতে চাইছেন গোঘাটের বিধায়ক। পরামর্শ চাইলেন। কেউ কিছই বলছেন না। হঠাৎ এক বৃদ্ধার ধমক, ‘‘তোমাদের মারপিট ঝগড়া ছাড়া কিছুই তো হচ্ছে না। এমন দল করা ঠিক নয়।”
রবিবার সকালে গোঘাটের কামারপুকুরে ‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় স্তরের আরএসএস নেতা নবকুমার সরকার ওরফে স্বামী অসীমানন্দের বাড়িতে গেলে তাঁর ৮০ বছরের বৃদ্ধা মা প্রমীলা সরকারের থেকে এমনই ধমক খেলেন গোঘাটের বিধায়ক মানস মজুমদার। মানসবাবু দিদিকে বলো কার্ডটি বৃদ্ধার হাতে দিয়ে বলেন, “মারপিট কাম্য নয়। আমাদের ভুল-ত্রুটি এবং মানুষের অভাব অভিযোগ জানতেই গ্রামে গ্রামে ঘুরছি। আমাদের জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ থাকলে সরাসরি মুখ্যমন্ত্রীকে জানাতে পারবেন।”
অসীমানন্দের ভাই সুশান্ত সরকার স্থানীয় বিজেপি নেতা। ওই সময় দলীয় কাজে তিনি বাইরে ছিলেন। বিধায়কের বাড়িতে যাওয়ার খবর শুনে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “অতিথি অ্যপায়নে মা কোনও ত্রুটি করবেন না। কিন্তু গোঘাটে যেখানে আমাদের কর্মী-নেতাদের মারধর করা হচ্ছে, ঘরছাড়া করা হচ্ছে, মিথ্যা মামলায় জড়ানো হচ্ছে, সেখানে আমাদের বাড়িতে গিয়ে ওই সৌহার্দ্য তো নজির। আমরা চাই, রাজনীতির ক্ষেত্রেও এই সৌহার্দ্য দেখিয়ে সন্ত্রাস বন্ধ হোক।’’
শুধু অসীমানন্দের বাড়িতেই নয়, শনিবার রাতে আবার গোঘাটের আরএসএস নেতা বিশ্বকান্তি সেনের বাড়িতে রাত কাটান বিধায়ক। বিশ্বকান্তি অবশ্য বিধায়কের সঙ্গে বিশেষ কথা বলার সময় পাননি। বিশ্বকান্তি বলেন, “দুর্নীতি, অপশাসন নিয়ে অনেক বক্তব্য থাকলেও রাতে ক্লান্ত বিধায়ককে সে সব বলা হয়নি। কেবল ভাবাদিঘিতে রেল জট কাটাতে প্রশাসনিক বিশেষ উদ্যোগ নিতে অনুরোধ করেছি।”
‘দিদিকে বলো’ কর্মসূচিতে মানুষ যখন বিশ্বাস হারিয়ে ফেলছেন, তখন গোঘাটের বিধায়ক সেই কর্মসূচিতেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিলেন কেন?
বিধায়কের জবাব, ‘‘অতীতে পঞ্চায়েত সদস্যর বিরুদ্ধেও লোকে মুখ খুলতে সাহস পেতেন না। এখন মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও সরাসরি অভিযোগ জানাতে পারছেন মানুষ। বেশ কিছু অভাব-অভিযোগের সুরাহাও হয়েছে। এই অভিযোগ করা নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে পারলে ভবিষ্যৎ রাজনীতির চেহারাটাই বদলে যাবে।।”