বেহাল বাগনান-শ্যামপুর রাস্তা। ছবি: সুব্রত জানা
কাজ শেষের সময়সীমা ধরা হয়েছিল এক বছর। কিন্তু প্রায় দু’বছর ধরে চলা উলুবেড়িয়ার বাগনান-শ্যামপুর রোড সংস্কারের কাজ এখন শেষ না-হওয়ায় প্রতিদিন ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন লক্ষাধিক মানুষ। কারণ, পিচ তুলে ফেলা হয়েছে। রাস্তা ভরেছে ধুলো-কাদায়। অসমান রাস্তায় ঝাঁকুনি খাচ্ছেন গাড়ির যাত্রীরা। ক্ষতি হচ্ছে গাড়ির যন্ত্রাংশের।
রাস্তাটি লম্বায় প্রায় ৩৫ কিলোমিটার। এর মধ্যে সংস্কার হচ্ছে বাগনান থেকে শ্যামপুরের বেলপুকুর পর্যন্ত প্রায় ২৫ কিলোমিটার। সংস্কারের ক্ষেত্রে পূর্ত (সড়ক) দফতরের বিরুদ্ধে ঢিলেমির অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ওই দফতরের হাওড়া ডিভিশন সূত্রে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, রাস্তাটি সংস্কার হচ্ছে জাতীয় সড়কের মতো করে। বহু জায়গায় রাস্তা চওড়া করা হচ্ছে। ফলে, বিদ্যুতের খুঁটি সরাতে হচ্ছে। গাছ কাটতে হচ্ছে। তার উপর আমপানে রাস্তার উপরে বহু গাছ পড়ে যায়। সেই কারণে সংস্কারের কাজ কিছুটা পিছিয়ে গিয়েছে। ফের কাজ শুরু হয়েছে বলে দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান।
গুরুত্বপূর্ণ ওই রাস্তা ধরে পর্যটনকেন্দ্র গাদিয়াড়ায় যাওয়া যায়। শ্যামপুরের বহু ভাটা থেকে ইট নিয়ে রোজ কয়েকশো ট্রাক চলাচল করে। অনন্তপুরের সুতোকলের জন্যেও পণ্যবাহী গাড়ি আসে। শ্যামপুর-১ ও ২ ব্লক অফিস, ব্যাঙ্কে বহু মানুষের যাতায়াতের প্রধান রাস্তাও এটি। বেশ কয়েকটি রুটের বাস, অসংখ্য অটো, রিকশা, গাড়ি এবং মোটরবাইক চলে। বেহাল রাস্তায় সকলেই দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।
বছর দুই আগে ওই রাস্তায় বড় বড় গর্ত হয়ে যাওয়ায় দুর্ঘটনা ঘটছিল। বাড়ছিল হতাহতের সংখ্যা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবিতে রাস্তা সংস্কারের কাজে হাত দেয় পূর্ত (সড়ক) দফতর। বাগনানের গুনিনপাড়া থেকে শ্যামপুরের শশাটি পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের কাজ অবশ্য ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। কিন্তু শশাটি থেকে শ্যামপুরের বেলপুকুর পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তার হাল ফেরেনি। বাগনান থেকে গুনিনপাড়া পর্যন্ত প্রায় ১০ কিলোমিটার রাস্তার হাল আরও শোচনীয়। এখানে রাস্তা চওড়া করার জন্য গাছ কেটে ‘পাইলেন’ (পুকুরের ধারে শালের খুঁটি পুঁতে মাটি ফেলা) করা হয়েছে ঠিকই, কিন্তু কিছু কিছু অংশে পিচ তুলে ফেলা হয়েছে। রাস্তার ধারে ডাঁই করে ফেলে রাখা হয়েছে বোল্ডার। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে গাড়ি। সংস্কারের দাবিতে বাগনানের আন্টিলায় একাধিকবার অবরোধ করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, রাস্তা সংস্কারের কাজে গতি আসছে না।