Cyclone Amphan

তালিকা তৈরিতেও কাঁটা ‘কোন্দল’

জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের নির্দেশিকা মেনে হুগলিতে ত্রাণের কাজে জড়িত  ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’দের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে।

Advertisement

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২০ ০৫:১৬
Share:

প্রতীকী ছবি।

ত্রাণ-বণ্টনে দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য রাজনীতি। আমপানে প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের বঞ্চিত করে শাসকদলের কেষ্ট-বিষ্টুদের একাংশ নিজেদের নিকট আত্মীয় ও ঘনিষ্ঠদের ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ। বেকায়দায় পড়ে ড্যামেজ-কন্ট্রোলে উদ্যোগী শাসকদল।

Advertisement

জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের নির্দেশিকা মেনে হুগলিতে ত্রাণের কাজে জড়িত ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’দের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সেই প্রাথমিক তালিকা পাঠানো হবে রাজ্য নেতৃত্বের কাছে। আজ, শনিবার সাংবাদিক বৈঠক করবেন তৃণমূল জেলা সভাপতি দিলীপ যাদব। তিনি বলেন, ‘‘দলের নির্দেশে আমি সাংবাদিক সম্মেলন করব। বিষয়বস্তু নিয়ে আগাম কিছু বলব না।’’

তৃণমূল সূত্রের খবর, সাধারণ মানুষের থেকে আসা অনৈতিক ভাবে ক্ষতিপূরণের টাকা পাইয়ে দেওয়া সংক্রান্ত অভিযোগের ভিত্তিতে দুর্নীতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরির নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ব্লক সভাপতিদের। সেই তালিকা জেলা সভাপতির কাছে তাঁরা পাঠাবেন। কিন্তু দলের একাংশের আশঙ্কা, সাংগঠনিক নানা স্তরে ‘কোন্দল’ থাকায় কেউ কারও বিরুদ্ধে ভুয়ো অভিযোগ তুলতে পারেন।

Advertisement

এই সমস্যা এড়াতে সংগঠনের তালিকা ও ব্লক প্রশাসনের আসা তালিকা মিলিয়ে দেখা হবে। দু’টি তালিকা খতিয়ে দেখে ‘দুর্নীতিগ্রস্ত’দের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রশ্ন উঠেছে, রাজ্যের শাসকদল নড়েচড়ে বসায় বিডিও-রা কি নতুন করে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করবেন?
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, আমাপানে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও তালিকায় নাম নেই, এমন ব্যক্তিরা ব্লক বা পঞ্চায়েতের কাছে ক্ষতিপূরণের জন্য এখনও আবেদন করতে পারেন। নতুন আবেদনও জমা পড়ছে। চূড়ান্ত তালিকার তৈরির কাজ শেষ হয়নি। ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার আগে নতুন করে যাচাই করা হবে, তাঁরা প্রকৃতই ক্ষতিগ্রস্ত কি না। বিডিও কার্যালয়ে পাঠানো কোনও তালিকা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হলে ফের নতুন করে তালিকা তৈরি হবে। অন্যথায় পঞ্চায়েতের তরফে বিডিও কার্যালয়ে পাঠানো তালিকাই চূড়ান্ত হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত নন, অথচ ক্ষতিপূরণ পেয়েছেন, এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে প্রশাসনের করণীয় কী? যে সমস্ত ব্যক্তি ক্ষতিপূরণের টাকায় ইতিমধ্যেই ঘরবাড়ি মেরামত করে নিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেই বা প্রশাসনের ভূমিকা কী হবে?

এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভুল তথ্য দিয়ে সরকারি টাকা নিয়েছেন, এমন অভিযোগ পেলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইন মাফিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে সরকারি টাকা ফেরত নেওয়া হবে।’’

হুগলি জেলা সিপিএমের সম্পাদক দেবব্রত ঘোষের প্রতিক্রিয়া, ‘‘রাজ্যের শাসকদলের ভাবমূর্তি অনেকটা সোনার পাথরবাটির মতো। আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তরা বঞ্চিত হচ্ছেন। সেই কথায় শাসকদল গুরুত্ব দেননি।’’

বিজেপি’র শ্রীরামপুর সংগঠনিক জেলার সভাপতি শ্যামল বসুর কটাক্ষ, ‘‘যে দলের নেতারা ক্ষতিগ্রস্ত প্রান্তিক মানুষদের টাকা নিয়ে নেন, তাঁদের রুচি নিয়েই আমাদের প্রশ্ন রয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement