প্রতীকী ছবি।
প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা এসে পড়ে রয়েছে তৃণমূল পরিচালিত জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতিতে। কিন্তু খরচ হবে কী ভাবে? সভাপতির সঙ্গে সহ-সভাপতির বিবাদে থমকে গিয়েছে উন্নয়ন। খরচের প্রস্তাব বা ‘অ্যাকশন প্ল্যান’-ই অনুমোদিত হয়নি।
জেলা প্রশাসনের কর্তাদের একাংশের আশঙ্কা, দ্রুত ওই পঞ্চায়েত সমিতি থেকে প্রস্তাব না এলে বরাদ্দ টাকা ফেরত যেতে পারে। ফলে, এলাকার মানুষ উন্নয়নের সুফল পাবেন না।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, পঞ্চদশ কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশন এ বারে পঞ্চায়েতের সঙ্গে জেলা পরিষদ এবং পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকেও টাকা বরাদ্দ করেছে। সেই টাকায় তারা রাস্তা, জলাধার নির্মাণ-সহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করবে। অ্যাম্বুল্যান্সও কিনতে পারে। চলতি অর্থবর্ষ থেকে শুরু হয়েছে কমিশনের মেয়াদ।
চারটি কিস্তিতে প্রায় আড়াই কোটি টাকা পাওয়ার কথা জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির। তারই দু’টি কিস্তির টাকা এই সমিতিতে বরাদ্দ হয়েছে।
নিয়ম হল, কেন্দ্রীয় অর্থ কমিশনের টাকা খরচ করতে হলে সেই অর্থবর্ষে উন্নয়নমূলক কোন কোন কাজে সেই টাকা লাগানো হবে তার একটি প্রস্তাব জেলা প্রশাসনের কাছে পাঠাতে হয়। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে টাকা খরচ হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর প্রস্তাব পাঠানোর শেষ তারিখ ছিল। হাওড়ার ১৪টির মধ্যে ১৩টি পঞ্চায়েত সমিতি প্রস্তাব পাঠিয়ে দিলেও জগৎবল্লভপুর তা পাঠাতে পারেনি। ফলে, অন্য পঞ্চায়েত সমিতিগুলি কাজ শুরু করে দিলেও জগৎবল্লভপুরে হয়নি।
পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রের খবর, প্রস্তাবটি অনুমোদন করাতে হয় অর্থ সংক্রান্ত স্থায়ী সমিতির সভায়। এই সভা ডাকার কথা সমিতির সভাপতিরই। কারণ তিনিই পদাধিকার বলে সমিতির অর্থ স্থায়ী সমিতির কর্মাধ্যক্ষ। কিন্তু জগৎবল্লভপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি অর্থ সংক্রান্ত স্থায়ী সমিতির সভা ডাকছেন না। ফলে, প্রস্তাব অনুমোদিত হয়নি।
এ বিষয়ে সহ-সভাপতির দিকে আঙুল তুলেছেন সভাপতি মমতা পাত্র। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দিনের পর দিন আমাকে এড়িয়ে অনেক কাজ করা হয়েছে। এতে মদত দিয়েছে ব্লক প্রশাসনও। এখন প্রয়োজনের সময়ে আমাকে মনে পড়েছে। খসড়া প্রস্তাবে প্রত্যেক পঞ্চায়েত ও পঞ্চাতের সমিতির সদস্যের এলাকার সমান উন্নতির কথা বলা হয়নি। বাছাই করা কিছু এলাকার কথা রয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘সব জায়গার উন্নয়ন করা হবে, এমন অঙ্গীকার থাকলে আমি নিশ্চয়ই প্রস্তাব অনুমোদন করতে সহায়তা করব।’’
পক্ষান্তরে, সহ-সভাপতি মহম্মদ ইব্রাহিম বলেন, ‘‘সব সদস্যের এলাকায় সমান ভাবে উন্নয়নের কথাই খসড়া প্রস্তাবে রয়েছে। আসলে সভাপতি প্রথম থেকে প্রতিটি উন্নয়নমূলক কজে বাগড়া দিচ্ছেন। এটাও সেই রকম। তবে উনি কিছু করতে পারবেন না। সমস্যা মিটে যাবে।’’
দুই নেতানেত্রীর আকচা-আকচিতে বিড়ম্বনায় পড়েছেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্বও। দলীয় নেতা তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি অজয় ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সমস্যাটি নিয়ে উভয় পক্ষের সঙ্গে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। আবার আলোচনা হবে।’’ সব পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসার আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও মনোতোষ রায়।