পাশে: তুলে দেওয়া হল সমব্যথী প্রকল্পের টাকা। নিজস্ব চিত্র
‘সমব্যথী’ প্রকল্পের টাকা পেতে হয়রানির অভিযোগ নতুন নয়। তার উপর লকডাউনের গেরোয় সেই টাকা পাওয়ায় আশা প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন মৃতের দুঃস্থ পরিবার। তবে সেই সমস্যা মেটাতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে টাকা পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিয়েছেন খোদ পঞ্চায়েত আধিকারিকরাই। প্রশাসনের এই পদক্ষেপ নিয়ে গ্রামবাসীরা অবাক এবং খুশিও।
শনিবার গোঘাট-১ ব্লকের গোঘাট পঞ্চায়েত এলাকার চারটি পৃথক গ্রামে গিয়ে চারটি পরিবারের হাতে টাকা তুলে দিলেন পঞ্চায়েতের সচিব মনোরঞ্জন সাঁতরা। তাও সমব্যথী প্রকল্পের তহবিল শেষ। পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে চারটি পরিবারকে ২ হাজার টাকা করে মোট ৮ হাজার টাকা দেওয়া হয়। পঞ্চায়েত সচিব বলেন, “বিডিওর নির্দেশে এই বিশেষ পরিষেবা শুরু হয়েছে”। বিডিও সুরশ্রী পাল বলেন, “পঞ্চায়েতগুলিকে বলা হয়েছে প্রকল্পের টাকা বাড়িতে পৌঁছে দিতে। প্রকল্পের তহবিল না থাকলেও পঞ্চায়েতের নিজস্ব তহবিল থেকে আপাতত মেটাতে বলা হয়েছে।”
শনিবার যে সব পরিবারে টাকা পৌঁছে দেওয়া হল তাদের মধ্যে গোপলাবাটি গ্রামের রাকেশ মুখোপাধ্যায় বলেন, “গত ২৯ মার্চ বাবা আশিস মুখোপাধ্যায় মারা যান। ওই দিনই স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যর মাধ্যমে পঞ্চায়েতকে জানাই। এই দুঃসময়ে বাড়ি এসে টাকা দিয়ে গেল পঞ্চায়েত থেকে। খুব উপকৃত হয়েছি।”
গোঘাট গ্রামের দিপু ধাড়ার মা মমতা ধাড়া মারা যান গত ১০ এপ্রিল। এত ‘চটজলদি’ হাতে টাকা পেয়ে দিপু বলেন, “জানতাম পঞ্চায়েতের নানা বাহানা মিটিয়ে টাকা পেতে অন্তত মাস তিনেক লাগবেই। কিন্তু বাড়িতে এসে টাকা দিয়ে গেলেন পঞ্চায়েত সচিব নিজে। আমরা গ্রামবাসীরা চাই সরকারি পরিষেবা ঠিক এমনটাই চটজলদি হোক।”
হয়রানির কথা স্বীকার করে বিভিন্ন ব্লক প্রশাসনের দাবি, শাসক দলের প্রচার এবং সরকারি নির্দেশিকার মধ্যে অসঙ্গতি থাকাতেই কিছুটা হয়রানির সৃষ্টি হয়। মুখ্যমন্ত্রী বা শাসক দলের স্থানীয় নেতারা বলেছেন শ্মশানে বা কবর স্থানেই মৃতের পরিবার হাতে হাতে টাকা পাবেন। অন্য দিকে নির্দেশিকায় আছে, প্রকল্পের টাকা পেতে মৃতের পরিচয় পত্র সহ মৃত্যুর শংসাপত্র, পরিবারটির দুঃস্থতার শংসাপত্র, মৃতের পরিবারের যিনি ওই টাকার দাবি করবেন তাঁর পরিচয় পত্র সহ সাদা কাগজে বা নির্দিষ্ট আবেদন পত্রে আবেদন করলে এককালীন ২ হাজার টাকা দেওয়া হয়।