প্রতীকী ছবি
বাংলা নাটকের ইতিহাসে নাট্যকার গিরীশচন্দ্র ঘোষের অবদান কতটা?
‘ছিন্নপত্র’ কী ভাবে রবীন্দ্র-সাহিত্যের জরুরি উপাদান হয়ে উঠেছিল?
রক্ত সংবহন কী ভাবে হয়?
ওয়েবসাইট খুললেই শিক্ষকের কণ্ঠস্বরে ভেসে আসছে পুঙ্খানুপুঙ্খ আলোচনা। লকডাউন চলছে তো কী হয়েছে? প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করেই চলছে ‘অনলাইন ক্লাসরুম’।
গত কয়েক দিন ধরে শ্রীরামপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ এই বিকল্প পথেই ছাত্রছাত্রীদের শিক্ষাদানের ব্যবস্থা করেছেন। হুগলির আরও কিছু কলেজের শিক্ষকেরাও একই পথে হাঁটছেন।
করোনাভাইরাস হানায় গোটা বিশ্ব বিপর্যস্ত। এই দেশ এবং রাজ্যও তার ব্যতিক্রম নয়। বেশ কিছুদিন ধরেই রাজ্যের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ। আগামী ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত সেই তালা খুলবে না বলে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। অনেকে মনে করছেন, ছুটি দীর্ঘায়িত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে সিলেবাস কী করে শেষ হবে, তা নিয়ে ছাত্রছাত্রী এবং শিক্ষক-শিক্ষিকারাও চিন্তায় পড়েন।
শ্রীরামপুর কলেজ কর্তৃপক্ষ জানান, এই পরিস্থিতিতে ক্লাসরুমের বিকল্প হিসেবে পাঠদানে প্রযুক্তির সাহায্য নেওয়া হচ্ছে। কী ভাবে?
প্রথমত, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাড়ি থেকে পঠনপাঠনের বিষয়গুলি নির্দিষ্ট পদ্ধতিতে (পিডিএফ ফর্ম্যাট) কলেজের ওয়েবসাইটে আপলোড করে দিচ্ছেন। দ্বিতীয়ত, তাঁরা অডিয়ো-রেকর্ডিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় বুঝিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তৃতীয়ত, শ্রাব্য-দৃশ্য মাধ্যমেও বিষয় বুঝিয়ে তা আপলোড করা হচ্ছে।
কলেজের অধ্যক্ষ ভ্যানস্যাংল্যুরা বলেন, ‘‘কলেজের তরফে কেন্দ্রীয় ভাবেই এটা করা হচ্ছে। শুধু আমাদের প্রতিষ্ঠান নয়, সঙ্কটের এই সময়ে রাজ্যের যে কোনও ছাত্রছাত্রী প্রয়োজনে আমাদের ওয়েবসাইট থেকে এই পঠনপাঠনের সুবিধা নিতে পারেন।’’
ওই কলেজে উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা এবং শারীরবিদ্যা বিষয়ে স্নাতকোত্তর পড়ানো হয়। প্রাণিবিদ্যার স্নাতকোত্তর বিভাগের কো-অর্ডিনেটর অমিত চট্টোপাধ্যায় জানান, ছাত্রছাত্রীরা হোয়াটস্অ্যাপ গ্রুপে প্রশ্ন করছেন। ফোন করেও কেউ কেউ জেনে নিচ্ছেন। এমএসসি-র বিশেষ পত্রের ক্ষেত্রে পড়ুয়ার সংখ্যা কম থাকায় ভিডিয়ো কনফারেন্সের মাধ্যমেও পড়ানো হচ্ছে। আরও
বেশি জনকে নিয়ে ভিডিয়ো কনফারেন্সের জন্য নতুন সফটওয়্যারের কথা ভাবা হচ্ছে।
বাংলার শিক্ষক ভাস্কর চৌধুরী বলেন, ‘‘পড়ুয়ারা বাড়িতে বসেই যাতে পাঠ্যসূচি অনুযায়ী পড়াশোনা করতে পারেন, সে জন্য ক্লাসরুমের বিকল্প হিসেবে যতটা ভাল ভাবে সম্ভব আমরা গোটা বিষয়টি উপস্থাপনার চেষ্টা করছি।’’
বিকল্প ব্যবস্থায় পড়ুয়ারা সন্তুষ্ট। প্রাণিবিদ্যার স্নাতকোত্তরের পড়ুয়া ঋত্বিকা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘খুব সুবিধা হচ্ছে।’’ প্রাণিবিদ্যার
অনার্সের ছাত্রী মনীষা মণ্ডল বলেন, ‘‘স্যারেরা অনলাইনে নোটস পাঠিয়ে দিচ্ছেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহায়িকা বইয়ের নাম লিখে দিচ্ছেন। ভালই হচ্ছে।’’ অনেকেই জানান, ইন্টারনেট বিগড়ে না গেলে কোনও সমস্যাই নেই।
হুগলির বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ জানাচ্ছেন, করোনা পরিস্থিতিতে তাঁরাও একই ভাবে প্রযুক্তিকে হাতিয়ার করছেন। কোন্নগর হীরালাল পাল কলেজের অধ্যক্ষ শ্রীকান্ত সামন্ত জানান, ইতিমধ্যেই ইতিহাস, বাংলা এবং এডুকেশনের শিক্ষকেরা কলেজের অনুমতি নিয়ে অনলাইনে শিক্ষাদান করছেন। আজ, বৃহস্পতিবার থেকে পদার্থবিদ্যার ক্ষেত্রেও তাই করা হবে।
শ্রীকান্তবাবু বলেন, ‘‘কলেজের ওয়েবসাইটের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ভাবে অনলাইন পঠনপাঠন চালুর কথা আমরাও ভাবছি।’’ হুগলি উইমেন্স কলেনজের প্রধান শিক্ষিকা সীমা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, কলেজের অনুমতি নিয়েই কয়েক জন শিক্ষিকা ব্যক্তিগত ভাবে উদ্যোগী হয়ে অনলাইনে ছাত্রীদের পঠনপাঠনের বিষয় পাঠাচ্ছেন।
অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।