প্রতীকী চিত্র।
সংক্রমিতদের সুস্থ হওয়ার হার বাড়ছে। কিন্তু হাওড়া জেলায় তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে করোনায় মৃত্যুর হার না-কমা মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্যকর্তাদের। দীর্ঘদিন ধরেই মৃত্যুর হার ঘোরাফেরা করছে ২.৭% এর আশপাশে। তা কমিয়ে ১.৮% বা তার নীচে আনতে সংক্রমিতদের দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যেতে জোর দিচ্ছেন স্বাস্থ্যকর্তারা।
জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা জানান, মৃত্যুর হার বিশ্লেষণ করে দেখা গিয়েছে, সংক্রমিতদের হাসপাতালে নিয়ে যেতে অনেক দেরি হয়েছে। ফলে, চিকিৎসার প্রয়োজনীয় সময় পাওয়া যায়নি। সেটা যাতে না হয় তার উপরে এ বারে জোর দেওয়া হবে।
মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস বলেন, ‘‘বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৫৫ বা তার উপরে, তাঁদের যদি করোনা ধরা পড়ে এবং ডায়াবিটিস-সহ অন্য কোনও রোগ থাকে তাঁদের যাতে বাড়িতে রেখে চিকিৎসা না করানো হয় সেটা দেখা হচ্ছে। তাঁদের আমরা দ্রুত হাসপাতালে আনার ব্যবস্থা করছি।’’
গত ২৪ অগস্ট মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে প্রশাসনিক বৈঠকে হাওড়া জেলায় মৃত্যুর হার নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তারপর থেকেই স্বাস্থ্য দফতরকে তৎপরতা বাড়াতে বলা হয়েছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর।
জেলায় অগস্ট মাস থেকে পরীক্ষা অনেকটা বাড়ানো হয়েছে। চলছে র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষাও। তাতে বেশি করে সংক্রমিতের সন্ধান মিলছে। স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান বলছে, ৩০ জুন পর্যন্ত সংক্রমিতের সংখ্যা ছিল ২৭৭০। একমাস পরে তা বেড়ে হয় ৭৩৩০। আবার ৩০ অগস্ট আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হয় ১৩,৪৪২।
তবে, এই সংখ্যাবৃদ্ধি নিয়ে জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা উদ্বিগ্ন নন। তাঁদের দাবি, আগে অল্প পরীক্ষায় যত সংক্রমিতের খোঁজ মিলত, সেই তুলনায় এখন শতকরা হিসেবে সংক্রমিতের সংখ্যা অনেক কম। জেলায় এ পর্যন্ত মোট ৬৩ হাজার জনের পরীক্ষা হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে, হাওড়া পুর এলাকায় আক্রান্তের হার ১০.৭ শতাংশ। গ্রামীণ এলাকায় ৫.২ শতাংশ। দু’টি মিলিয়ে জেলায় গড় আক্রান্তের হার ৭%।
স্বাস্থ্যকর্তাদের স্বস্তি দিচ্ছে শুধু সুস্থতার হার। তাঁরা জানিয়েছেন, ৩০ জুন পর্যন্ত সুস্থ হন ১৮৭৫ জন। পরের মাসে সেই সংখ্যা গিয়ে দাঁড়ায় ৫৬৬৬-তে। অগস্টে ১১, ৯৬৩। কমেছে বর্তমান করোনা পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যাও। ২৯ জুলাই পর্যন্ত যেখানে করোনা পজ়িটিভ রোগীর সংখ্যা ছিল ১৯৩৮ জন, ৩১ অগস্ট পর্যন্ত সেই সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১২২০-এ।
জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, সব জেলাতে সংক্রমিতের সংখ্যা কমবেশি বাড়ছে। কিন্তু হাওড়ায় সুস্থ হওয়ার হার বেশ সন্তোষজনক। এর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে কমাতে হবে মৃত্যুর হার। সেটাই বড় চ্যালেঞ্জ।
(জরুরি ঘোষণা: কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীদের জন্য কয়েকটি বিশেষ হেল্পলাইন চালু করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। এই হেল্পলাইন নম্বরগুলিতে ফোন করলে অ্যাম্বুল্যান্স বা টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত পরিষেবা নিয়ে সহায়তা মিলবে। পাশাপাশি থাকছে একটি সার্বিক হেল্পলাইন নম্বরও।
• সার্বিক হেল্পলাইন নম্বর: ১৮০০ ৩১৩ ৪৪৪ ২২২
• টেলিমেডিসিন সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-২৩৫৭৬০০১
• কোভিড-১৯ আক্রান্তদের অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা সংক্রান্ত হেল্পলাইন নম্বর: ০৩৩-৪০৯০২৯২৯)