চুঁচুড়ার রবীন্দ্রভবন। ছবি: তাপস ঘোষ
পরিকল্পনা ছিল জেলা সদর চুঁচুড়ার রবীন্দ্রভবন ঢেলে সাজা হবে। কেন না শহরের সংস্কৃতির পীঠস্থান রবীন্দ্রভবন। সেই কাজে কেন্দ্র এবং রাজ্যের কাছে টাকার জন্য দরবারও করা হয়েছিল। কিন্তু এখনও তা মেলেনি। রাজ্য সরকারের তরফে টাকা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্রের তরফে টাকা না মেলায় কাজ শুরু হলেও শেষ হয়নি টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায়।
শুধু চুঁচুড়ায় নয়, জেলার আর এক মহকুমা আরামবাগের রবীন্দ্রভবনের হালও বেশ খারাপ। ওই ভবন দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে আরামবাগ পুরসভা। কিন্তু সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে ভবনটির অবস্থা শোচনীয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, রবীন্দ্রভবনগুলি রক্ষায় ভাল টাকার প্রয়োজন পড়ে। তাই শুধু সরকার নির্ভরতা কাটানো জরুরি। হলের ভাড়াবাবদ আয় থেকেই রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলতে পারে। সে ক্ষেত্রে অনেক কঠিন হতে হবে কর্তৃপক্ষকে। বহু ক্ষেত্রেই টাকা মকুব করে অনুষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া হয়। এমন চলতে থাকলে হলের হাল খারাপ হবে।
চুঁচুড়া রবীন্দ্রভবনের অবশ্য অন্য একটি গুরুত্ব আছে। জেলার তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর রয়েছে রবীন্দ্রভবনের দোতলায়। ফলে ভবনের হাল খারাপ হওয়ায় স্বাভাবিকভাবে সেখানে থাকা অফিসের হালও করুণ। রবীন্দ্রভবনের হলের চেয়ার, সাউন্ড সিস্টেম, আলো খারাপ। সম্প্রতি বিভিন্ন মহল থেকে রাজ্য সরকারের উপর টাকার জন্য চাপ বাড়তে থাকে। রাজ্য সরকার টাকা অনুমোদন করে। পূর্ত দফতর কাজ শুরু করে। ভবনের মেরামতির কাজ শুরুও হয়। কিন্তু টাকার অভাবে কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ভবনের ভবিয্যৎ কী তা নিয়েই প্রশ্ন উঠেছে সংস্কৃতিপ্রেমীদের মনে।
পূর্ত দফতরের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, ‘‘আসলে বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে সমন্বয়ের সমস্যা হচেছে। তাই অনেক কাজ আটকে আছে।’’ চুঁচুড়ার বিধায়ক তপন মজুমদার বলেন, ‘‘রবীন্দ্রভবনের হাল ফেরাতে কেন্দ্রের কাছে টাকা চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু মেলেনি। তাই আমরা ফের রাজ্য সরকারের কাছে ২ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা চেয়েছি। ওই টাকা পেলে কাজ শুরু করতে পারব।’’
বেহাল আরামবাগ রবীন্দ্রভবনও। এখানেও সাউন্ড, বৈদ্যুতিক ব্যবস্থা ভাল অনুষ্ঠানের পক্ষে উপযুক্ত নয়। হলের আসনের অবস্থাও খারাপ। হলের দেখভালের দায়িত্বে থাকা পুরসভার চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী বলেন, ‘‘আরামবাগকে গ্রীন সিটি প্রকল্পের আওতায় আনার জন্য চেষ্টা চলছে। ওই প্রকল্পে শহরের উন্নয়নের নানা কাজ করার সুযোগ রয়েছে। আমরা চাইছি ওই প্রকল্পের টাকা পেলেই রবীন্দ্রভবনের কাজ শুরু করব।’’